ঢাকা ০১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চেয়ারম্যান আমার মৃত স্বামীর ভিটা ছাড়া করতে চাই

sdr

রানীশংকৈল(ঠাকুরগাও)প্রতিনিধিঃ-
বাঘ পিটাই হলা মাইয়া এনো মানুষ কইরছি এনো খালি জংগল আর জংগল দি ভরা আছিল। অন পরিস্কার হইছে লোকজন বাইরছে। আর স্বামী হয়েক বছর আগে মরি গেছে আইও ওসুখে মরা মরা অবস্থা অন এনামুল চেয়ারম্যান আর হলামাইয়া বস্তির লোকের উপর অত্যাচার চালাইতেছে এনতাই বাড়ী ঘর ভাংগি চলি যাইতাম।
গত ১৫ মে বড় বড় স্যার লই আই আংগোরে কই এনতাই চলি যাইতাম এনো নাকি গুরু হাট বয়ায়বো অথচ গরু হাটের নামে সরকারী জায়গাডি চেয়ারম্যানের আত্বীয় স্বজন প্রভাবশালীরা দখল করি বড় বড় দালান কইরছে এডি কয়তে গেলে চেয়ারম্যান আংগো হলাডিরে ধরি ধরি উচ্ছেদের লাই নোটিশ দিতে আসা স্যার গো সামনে মাইরছে আগাইতে গেলে মাইয়াডিরো মাইরছে। চেয়ারম্যান আরে আর মৃত স্বামীর ভিটা ছাড়া করতে চাই।
চোখ ভরা পানি নিয়ে বুক ভরা কষ্টে এভাবেই কথাগুলো গতকাল শনিবার বলছিলেন ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের বাগানবাড়ী মহল্লার আশি উর্দ্ধে বৃদ্ব হামিশ উদ্দীনের স্ত্রী এক চোখ দৃষ্টি প্রতিবন্ধি দেলোয়ারা বেগম। এমন আরো অনেক বযস্ক বৃদ্ব রয়েছে এ মহল্লায়। তারা কেউ কেউ কঠিন রোগে চিকিৎসার অভাবে অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে বেচেঁ রয়েছে। যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্বে অভিযোগ তিনি হলেন ২নং নেকমরদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক।
এ ঘটনার সুত্রপাত গত ১৫মে উচ্ছেদের জন্য দিতে যাওয়া সরকারী নোটিশ দেওয়াকে নিয়ে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ঐ বাগানবাড়ী এলাকায় সরকারী খাস প্রায় ১ একর ৯০ শতক জমির উপর স্বাধীনতা পরবর্তী সময় হতে ভুমি হীন প্রায় ১০৭ টি পরিবার কোনরকম মাথাগুজার ঠাই করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এখানকার লোকজন দিনমুজুর ভ্যান রিক্সা চালিয়ে দিননিপাত করে বলে। কথা বলে জানা যায় ঐ এলাকার যুবক নাইম কালাম রাজু আলমগীরসহ অনেকের কাছে।
জানা যায়, উপজেলার বৃহৎ নেকমরদ হাটের মোট ৬ একর ৯৫ শতক জমি জুড়ে ব্যক্তি মালিকানার দোকান ঘর ধীরে ধীরে গড়ে উঠায় হাটে গরু ছাগলের হাট বসানো জায়গা সংকট হয়ে পড়ে বিগত কয়েকবছর থেকে এ কারনে হাটটি বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোডের জায়গায় চলছে। চেয়ারম্যান এনামুল হক অবৈধভাবে হাটের জমিতে গড়ে উঠা প্রভাবশালীদের দালান ঘর যেন না ভাঙ্গতে হয় এজন্য চেয়ারম্যানের বাড়ীর পাশ্ববর্তী সরকারী খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা আসা ভুমিহীনদের সেখান থেকে সরানোর জন্য পায়তারা করে আসছেন বিগত কয়েকবছর ধরে বলে জানান ঐ মহল্লার বৃদ্ধ আলম(৯০)। এরই ধারাবাহিকতায় প্রশাসনের সহায়তায় গত ১৫ মে সরকারী জমি হতে অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা স্বাক্ষরিত নোটিশ দিতে যায় অফিস সহকারী জোতিষ ও জহিরুল। তবে সে সময় নোটিশ স্বাক্ষর করে গ্রহণ করার মত বাড়ীতে লোক না থাকায় অফিস সহকারীদ্বয় ছোট ছোট বাচ্চাদের নোটিশগুলো গ্রহণ করতে বলেন। তারা নিতে না চাইলে তাদের ধমকান বলে অভিযোগ করেন মহল্লার লোকজন। বা”্চারা কান্নাকাটি করলে মহিলারা এসে তাদের সাথে কথাকাটির এক পর্যায়ে অফিস সহকারীদ্বয় এসিল্যান্ডকে ফোন দেন। এ সময় এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ার পর পর এনামুল চেয়ারম্যানও সেখানে উপস্থিত হন। এ ঘটনা কেন্দ্র করে এবং নোটিশ না নেওয়ায় চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে মারধর করেন ঐ এলাকার একাধিক নারী পুরুষকে।
তবে এ ঘটনা অস্বীকার করে চেয়ারম্যান এনামুল বলেন,আমি কোন মারধর করিনি। তবে বসবাসকৃত খাস জমি তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি মাত্র।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা ঘটনাটি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, দখলকৃত হাটের জমি উদ্বারে শ্রীঘই ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা ঘটনার কথা স্থানীয় আ’লীগের নেতৃবর্গ ও এমপি স্যারদের নিকট শুনেছেন তবে এখনো কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি দেখতেছি বলে তিনি জানান।
সংরক্ষিত ৩০১ আসনের সাংসদ সেলিনা জাহান লিটা বলেন,অসহায়দের উপর অন্যায় অত্যাচার মেনে নেওয়া হবে না। প্রশাসনের সাথে কথা বলে বিষয়টির সঠিক সুরাহার ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

চেয়ারম্যান আমার মৃত স্বামীর ভিটা ছাড়া করতে চাই

আপডেট টাইম ০৬:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ মে ২০১৮

রানীশংকৈল(ঠাকুরগাও)প্রতিনিধিঃ-
বাঘ পিটাই হলা মাইয়া এনো মানুষ কইরছি এনো খালি জংগল আর জংগল দি ভরা আছিল। অন পরিস্কার হইছে লোকজন বাইরছে। আর স্বামী হয়েক বছর আগে মরি গেছে আইও ওসুখে মরা মরা অবস্থা অন এনামুল চেয়ারম্যান আর হলামাইয়া বস্তির লোকের উপর অত্যাচার চালাইতেছে এনতাই বাড়ী ঘর ভাংগি চলি যাইতাম।
গত ১৫ মে বড় বড় স্যার লই আই আংগোরে কই এনতাই চলি যাইতাম এনো নাকি গুরু হাট বয়ায়বো অথচ গরু হাটের নামে সরকারী জায়গাডি চেয়ারম্যানের আত্বীয় স্বজন প্রভাবশালীরা দখল করি বড় বড় দালান কইরছে এডি কয়তে গেলে চেয়ারম্যান আংগো হলাডিরে ধরি ধরি উচ্ছেদের লাই নোটিশ দিতে আসা স্যার গো সামনে মাইরছে আগাইতে গেলে মাইয়াডিরো মাইরছে। চেয়ারম্যান আরে আর মৃত স্বামীর ভিটা ছাড়া করতে চাই।
চোখ ভরা পানি নিয়ে বুক ভরা কষ্টে এভাবেই কথাগুলো গতকাল শনিবার বলছিলেন ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের বাগানবাড়ী মহল্লার আশি উর্দ্ধে বৃদ্ব হামিশ উদ্দীনের স্ত্রী এক চোখ দৃষ্টি প্রতিবন্ধি দেলোয়ারা বেগম। এমন আরো অনেক বযস্ক বৃদ্ব রয়েছে এ মহল্লায়। তারা কেউ কেউ কঠিন রোগে চিকিৎসার অভাবে অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে বেচেঁ রয়েছে। যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্বে অভিযোগ তিনি হলেন ২নং নেকমরদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক।
এ ঘটনার সুত্রপাত গত ১৫মে উচ্ছেদের জন্য দিতে যাওয়া সরকারী নোটিশ দেওয়াকে নিয়ে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ঐ বাগানবাড়ী এলাকায় সরকারী খাস প্রায় ১ একর ৯০ শতক জমির উপর স্বাধীনতা পরবর্তী সময় হতে ভুমি হীন প্রায় ১০৭ টি পরিবার কোনরকম মাথাগুজার ঠাই করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এখানকার লোকজন দিনমুজুর ভ্যান রিক্সা চালিয়ে দিননিপাত করে বলে। কথা বলে জানা যায় ঐ এলাকার যুবক নাইম কালাম রাজু আলমগীরসহ অনেকের কাছে।
জানা যায়, উপজেলার বৃহৎ নেকমরদ হাটের মোট ৬ একর ৯৫ শতক জমি জুড়ে ব্যক্তি মালিকানার দোকান ঘর ধীরে ধীরে গড়ে উঠায় হাটে গরু ছাগলের হাট বসানো জায়গা সংকট হয়ে পড়ে বিগত কয়েকবছর থেকে এ কারনে হাটটি বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোডের জায়গায় চলছে। চেয়ারম্যান এনামুল হক অবৈধভাবে হাটের জমিতে গড়ে উঠা প্রভাবশালীদের দালান ঘর যেন না ভাঙ্গতে হয় এজন্য চেয়ারম্যানের বাড়ীর পাশ্ববর্তী সরকারী খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা আসা ভুমিহীনদের সেখান থেকে সরানোর জন্য পায়তারা করে আসছেন বিগত কয়েকবছর ধরে বলে জানান ঐ মহল্লার বৃদ্ধ আলম(৯০)। এরই ধারাবাহিকতায় প্রশাসনের সহায়তায় গত ১৫ মে সরকারী জমি হতে অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা স্বাক্ষরিত নোটিশ দিতে যায় অফিস সহকারী জোতিষ ও জহিরুল। তবে সে সময় নোটিশ স্বাক্ষর করে গ্রহণ করার মত বাড়ীতে লোক না থাকায় অফিস সহকারীদ্বয় ছোট ছোট বাচ্চাদের নোটিশগুলো গ্রহণ করতে বলেন। তারা নিতে না চাইলে তাদের ধমকান বলে অভিযোগ করেন মহল্লার লোকজন। বা”্চারা কান্নাকাটি করলে মহিলারা এসে তাদের সাথে কথাকাটির এক পর্যায়ে অফিস সহকারীদ্বয় এসিল্যান্ডকে ফোন দেন। এ সময় এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ার পর পর এনামুল চেয়ারম্যানও সেখানে উপস্থিত হন। এ ঘটনা কেন্দ্র করে এবং নোটিশ না নেওয়ায় চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে মারধর করেন ঐ এলাকার একাধিক নারী পুরুষকে।
তবে এ ঘটনা অস্বীকার করে চেয়ারম্যান এনামুল বলেন,আমি কোন মারধর করিনি। তবে বসবাসকৃত খাস জমি তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি মাত্র।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা ঘটনাটি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, দখলকৃত হাটের জমি উদ্বারে শ্রীঘই ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা ঘটনার কথা স্থানীয় আ’লীগের নেতৃবর্গ ও এমপি স্যারদের নিকট শুনেছেন তবে এখনো কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি দেখতেছি বলে তিনি জানান।
সংরক্ষিত ৩০১ আসনের সাংসদ সেলিনা জাহান লিটা বলেন,অসহায়দের উপর অন্যায় অত্যাচার মেনে নেওয়া হবে না। প্রশাসনের সাথে কথা বলে বিষয়টির সঠিক সুরাহার ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।