ঢাকা ০৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
পীরগঞ্জে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ভ্যান চালকের চালকের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা ঠাকুরগাঁও জেলা আ.লীগের সভাপতি হলেন বাবলু স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও ঠাকুরগাঁওয়ে শহীদ জায়া’রা ভিক্ষাবৃত্তি করে পীরগঞ্জ থানা পুলিশের পৃথক অভিযানে ৬ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার পীরগঞ্জে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় র‌্যালী পীরগঞ্জে দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা ছাদে অবৈধ রেস্তোরাঁ, সিলিন্ডারে লিকেজ: ল্যাবএইড হাসপাতালকে ২ লাখ টাকা জরিমানা অকটেনে ৪ টাকা, পেট্রোলে ৩ টাকা, ডিজেলে ৭৫ পয়সা কমল মজুতদারি-কালোবাজারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে সিআইডির ১২ টিম যেভাবে রক্ষা পেয়েছিল ৭ই মার্চের ভাষণের ভিডিও

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে এক বাংলাদেশি বন্দীর মৃত্যু

মোসলিমা খাতুন,সারাদিন ডেস্ক:: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে এক বাংলাদেশি বন্দীর মৃত্যুর চার বছর পর মানবাধিকার কমিশন খুনের মামলা করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক আল আমিন সরদার। ২২ বছর বয়সী এই আল আমিনের বাড়ি ছিল বাংলাদেশের সাতক্ষীরায়। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ থানার পুলিশ আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পরের দিন তাঁকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়। চিকিৎসক আল আমিনকে পরীক্ষা করেন। কিন্তু তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা শারীরিক অসুস্থতার প্রমাণ পাননি বলে প্রতিবেদন দেন। আদালতের নির্দেশে আল আমিনকে বসিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু কারাগারে ঢোকার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন আল আমিন। তাঁকে বসিরহাটের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আল আমিন মারা যান। বন্দী অবস্থায় আল আমিনকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনার পর রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়ে পাঠান। ওই প্রতিবেদন দেখে কমিশন ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত টিমের সদস্যরা কারাগারের কর্তব্যরত ওয়ার্ডার, অফিসার, চিকিৎসকসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। প্রত্যেককেই নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন।
আল আমিনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে কমিশনের সদস্যরা বুঝতে পারেন, মাথায় গুরুতর আঘাতে আল আমিনের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের ৭ থেকে ১০ দিন আগে সে আঘাত লেগেছিল। এরপর কমিশন তদন্ত শুরু করে। যে পুলিশ কর্মকর্তা আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছিল, সেই অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কমিশন জানতে পারে, ওই পুলিশ কর্মকর্তা সঠিক তথ্য দেননি। টাকির গ্রামীণ হাসপাতালেও শারীরিক পরীক্ষায় কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। পুলিশ, চিকিৎসক, কারা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নানা অসংগতি পায় কমিশন। তারা মনে করে, এই মৃত্যুর পেছনে পুলিশ এবং চিকিৎসকদের যথেষ্ট গাফিলতি ছিল।
আল আমিনের মৃত্যুর কারণ খুঁজতে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গিরীশ চন্দ্র গুপ্তর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বিশেষ সুপারিশ করেছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা করে সিআইডিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করানোর। পাশাপাশি যে পুলিশ কর্মকর্তা আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন এবং যে চিকিৎসক প্রথম তাঁকে পরীক্ষা করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

পীরগঞ্জে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ভ্যান চালকের চালকের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে এক বাংলাদেশি বন্দীর মৃত্যু

আপডেট টাইম ০৮:১৬:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ ২০১৮

মোসলিমা খাতুন,সারাদিন ডেস্ক:: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে এক বাংলাদেশি বন্দীর মৃত্যুর চার বছর পর মানবাধিকার কমিশন খুনের মামলা করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক আল আমিন সরদার। ২২ বছর বয়সী এই আল আমিনের বাড়ি ছিল বাংলাদেশের সাতক্ষীরায়। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ থানার পুলিশ আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পরের দিন তাঁকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়। চিকিৎসক আল আমিনকে পরীক্ষা করেন। কিন্তু তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা শারীরিক অসুস্থতার প্রমাণ পাননি বলে প্রতিবেদন দেন। আদালতের নির্দেশে আল আমিনকে বসিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু কারাগারে ঢোকার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন আল আমিন। তাঁকে বসিরহাটের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আল আমিন মারা যান। বন্দী অবস্থায় আল আমিনকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনার পর রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়ে পাঠান। ওই প্রতিবেদন দেখে কমিশন ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত টিমের সদস্যরা কারাগারের কর্তব্যরত ওয়ার্ডার, অফিসার, চিকিৎসকসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। প্রত্যেককেই নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন।
আল আমিনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে কমিশনের সদস্যরা বুঝতে পারেন, মাথায় গুরুতর আঘাতে আল আমিনের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের ৭ থেকে ১০ দিন আগে সে আঘাত লেগেছিল। এরপর কমিশন তদন্ত শুরু করে। যে পুলিশ কর্মকর্তা আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছিল, সেই অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কমিশন জানতে পারে, ওই পুলিশ কর্মকর্তা সঠিক তথ্য দেননি। টাকির গ্রামীণ হাসপাতালেও শারীরিক পরীক্ষায় কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। পুলিশ, চিকিৎসক, কারা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নানা অসংগতি পায় কমিশন। তারা মনে করে, এই মৃত্যুর পেছনে পুলিশ এবং চিকিৎসকদের যথেষ্ট গাফিলতি ছিল।
আল আমিনের মৃত্যুর কারণ খুঁজতে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গিরীশ চন্দ্র গুপ্তর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বিশেষ সুপারিশ করেছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা করে সিআইডিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করানোর। পাশাপাশি যে পুলিশ কর্মকর্তা আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন এবং যে চিকিৎসক প্রথম তাঁকে পরীক্ষা করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।