ঢাকা ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের মর্যাদা বাড়ছে শিঘ্রই

আজম রেহমান,সারাদিন ডেক্স::
সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা এক ধাপ উন্নীত করে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং তাঁদের বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হচ্ছে জাতীয় বেতন স্কেলের দশম ও ১১তম গ্রেডে। পাশাপাশি সহকারি শিক্ষকদেরও বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে ১২তম গ্রেডে নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল হবে দশম গ্রেডে (মূল স্কেল আট হাজার টাকা) এবং প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকেরা পাবেন ১১তম গ্রেডের (ছয় হাজার ৪০০) টাকা বেতন। বর্তমানে তাঁরা বেতন পান যথাক্রমে ১৩ ও ১৪তম গ্রেডে।
এদিকে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ১২তম (মূল স্কেল পাঁচ হাজার ৯০০) ও প্রশিক্ষণবিহীনদের ১৩তম গ্রেডের (পাঁঁচ হাজার ৫০০) বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে তাঁরা পান যথাক্রমে ১৫ ও ১৬তম গ্রেডের বেতন। শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির ফলে সরকারের বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে ২৯২ কোটি টাকা। শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির এই খবরে শিক্ষক সমাজে আনন্দ বিরাজ করছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রমতে, এ বিষয়ে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন বলেন, ‘শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিমধ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আশা করি দ্রুতই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।’
জানা গেছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। এই কাজটি করার জন্য তারা বেশ আগেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কয়েকটি প্রশ্ন তুলে পর্যবেক্ষণ দেওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জবাব দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হয়েছে। ফলে বিষয়টি আরেক ধাপ এগিয়েছে। এখন বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় উঠবে। তারপর এ বিষয়ে আদেশ জারি হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এই দাবিতে রাস্তায় নামায় এ নতুন করে সামনে নিয়ে আসে সরকার।
বর্তমানে সারা দেশে ৩৭ হাজার ৬৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক আছেন দুই লাখ পাঁচ হাজার ৫৫০ জন। শিগগিরই আরও ৪৬ হাজার ১৩ জন নতুন শিক্ষক যোগ দেবেন। সে ক্ষেত্রে মোট শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৫৬৩ জন। প্রস্তাবিত গ্রেডে বেতন স্কেল হলে বছরে সার্বিক আর্থিক সংশ্লেষ দাঁড়াবে প্রায় তিন হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। আগের চেয়ে অতিরিক্ত খরচ হবে ১৩৮ কোটি টাকা।
এর বাইরেও জাতীয় করণের সিদ্ধান্ত হওয়া ২৬ হাজার ১৯৩টি বিদ্যালযয়ে কর্মরত শিক্ষক আছেন এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন। তাঁরাও সরকারি শিক্ষকদের মতো সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। প্রস্তাবিত গ্রেডে তাঁদের জন্য বার্ষিক খরচ হবে প্রায় এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা, যা আগের চেয়ে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই ধরনের শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীত হলে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ২৯২ কোটি টাকা।
সরকারি সূত্রমতে, এ বিষয়টি যাতে দ্রুত অনুমোদন হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম কাজ করছেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের মর্যাদা বাড়ছে শিঘ্রই

আপডেট টাইম ০৪:০০:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

আজম রেহমান,সারাদিন ডেক্স::
সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা এক ধাপ উন্নীত করে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং তাঁদের বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হচ্ছে জাতীয় বেতন স্কেলের দশম ও ১১তম গ্রেডে। পাশাপাশি সহকারি শিক্ষকদেরও বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে ১২তম গ্রেডে নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল হবে দশম গ্রেডে (মূল স্কেল আট হাজার টাকা) এবং প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকেরা পাবেন ১১তম গ্রেডের (ছয় হাজার ৪০০) টাকা বেতন। বর্তমানে তাঁরা বেতন পান যথাক্রমে ১৩ ও ১৪তম গ্রেডে।
এদিকে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ১২তম (মূল স্কেল পাঁচ হাজার ৯০০) ও প্রশিক্ষণবিহীনদের ১৩তম গ্রেডের (পাঁঁচ হাজার ৫০০) বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে তাঁরা পান যথাক্রমে ১৫ ও ১৬তম গ্রেডের বেতন। শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির ফলে সরকারের বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে ২৯২ কোটি টাকা। শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির এই খবরে শিক্ষক সমাজে আনন্দ বিরাজ করছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রমতে, এ বিষয়ে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন বলেন, ‘শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিমধ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আশা করি দ্রুতই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।’
জানা গেছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। এই কাজটি করার জন্য তারা বেশ আগেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কয়েকটি প্রশ্ন তুলে পর্যবেক্ষণ দেওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জবাব দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হয়েছে। ফলে বিষয়টি আরেক ধাপ এগিয়েছে। এখন বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় উঠবে। তারপর এ বিষয়ে আদেশ জারি হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এই দাবিতে রাস্তায় নামায় এ নতুন করে সামনে নিয়ে আসে সরকার।
বর্তমানে সারা দেশে ৩৭ হাজার ৬৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক আছেন দুই লাখ পাঁচ হাজার ৫৫০ জন। শিগগিরই আরও ৪৬ হাজার ১৩ জন নতুন শিক্ষক যোগ দেবেন। সে ক্ষেত্রে মোট শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৫৬৩ জন। প্রস্তাবিত গ্রেডে বেতন স্কেল হলে বছরে সার্বিক আর্থিক সংশ্লেষ দাঁড়াবে প্রায় তিন হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। আগের চেয়ে অতিরিক্ত খরচ হবে ১৩৮ কোটি টাকা।
এর বাইরেও জাতীয় করণের সিদ্ধান্ত হওয়া ২৬ হাজার ১৯৩টি বিদ্যালযয়ে কর্মরত শিক্ষক আছেন এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন। তাঁরাও সরকারি শিক্ষকদের মতো সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। প্রস্তাবিত গ্রেডে তাঁদের জন্য বার্ষিক খরচ হবে প্রায় এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা, যা আগের চেয়ে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই ধরনের শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীত হলে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ২৯২ কোটি টাকা।
সরকারি সূত্রমতে, এ বিষয়টি যাতে দ্রুত অনুমোদন হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম কাজ করছেন।