ঢাকা ০৭:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

মনসুর আহম্মেদ: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার মধ্যস্থল দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদী থেকে ইজারা ছাড়াই অবাধে বালু উত্তোলন করছেন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার এবং হুমকির মুখে পড়েছে ঐ বালু ঘাটের পার্শ্ববর্তী পারঘাটা ব্রীজটি ও ফসলি জমি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার ১১নং বৈরচুনা ইউনিয়নের ও দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ৬নং রনগাঁও ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদী থেকে ইজারা ছাড়াই অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছেন উত্তর বৈরচুনা গ্রামের জাফর, আইয়ুব আলী, নুরইসলাম, চন্ডিপু গ্রামের বাদশা সহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নদীর দুই অংশের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে নিয়ম উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বালু তুলছেন নুরইসলাম, মহসিন, জাফর, আইয়ুব আলী, বাদশা সহ একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও তিনারা তা বন্ধ করেন নি। ট্রাক্টর চালকরা জানায়, তারা প্রতি ট্রাক্টর ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে কেনেন। এরপর বিভিন্ন এলাকায় প্রতি ট্রাক্টর বালু ৭০০-১০০০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা। গাজাংপাড়া মতনডাঙ্গা ঘাট থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক্টরে বালু পরিবহন করা হয়। প্রতিটি ট্রাক্টর প্রতিদিন কমপক্ষে ৩-৪ বার করে বালু নিয়ে যায়। বৈরচুনা জসাপাড়া গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন জানায়, এখানে বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের অনেক ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এই এলাকার কিছু লোকজন ফসলী জমির মধ্য দিয়ে রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে বালু উত্তোলনের জন্য। বৈরচুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন জানান, নদীটি পার্শ্ববর্তী বোচাগঞ্জ উপজেলার সীমানার মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে আমার কিছু করার নাই। তবে আমি পীরগঞ্জ বিষয়টি পীরগঞ্জ সহকারি ভূমি কমিশনারকে জানাবো। এ বিষয়ে ৬নং রনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, আমার প্রজেক্টের জন্য কিছু বালু প্রয়োজন ছিল তাই কিছু ট্রাক্টর দিয়ে বালু উত্তোলন করেছি। এখন অন্যরাও সেখানে বালু উত্তোলন করছে, আমি কি করবো।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

আপডেট টাইম ০৮:৫৫:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

মনসুর আহম্মেদ: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার মধ্যস্থল দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদী থেকে ইজারা ছাড়াই অবাধে বালু উত্তোলন করছেন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার এবং হুমকির মুখে পড়েছে ঐ বালু ঘাটের পার্শ্ববর্তী পারঘাটা ব্রীজটি ও ফসলি জমি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার ১১নং বৈরচুনা ইউনিয়নের ও দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ৬নং রনগাঁও ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদী থেকে ইজারা ছাড়াই অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছেন উত্তর বৈরচুনা গ্রামের জাফর, আইয়ুব আলী, নুরইসলাম, চন্ডিপু গ্রামের বাদশা সহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নদীর দুই অংশের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে নিয়ম উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বালু তুলছেন নুরইসলাম, মহসিন, জাফর, আইয়ুব আলী, বাদশা সহ একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও তিনারা তা বন্ধ করেন নি। ট্রাক্টর চালকরা জানায়, তারা প্রতি ট্রাক্টর ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে কেনেন। এরপর বিভিন্ন এলাকায় প্রতি ট্রাক্টর বালু ৭০০-১০০০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা। গাজাংপাড়া মতনডাঙ্গা ঘাট থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক্টরে বালু পরিবহন করা হয়। প্রতিটি ট্রাক্টর প্রতিদিন কমপক্ষে ৩-৪ বার করে বালু নিয়ে যায়। বৈরচুনা জসাপাড়া গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন জানায়, এখানে বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের অনেক ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এই এলাকার কিছু লোকজন ফসলী জমির মধ্য দিয়ে রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে বালু উত্তোলনের জন্য। বৈরচুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন জানান, নদীটি পার্শ্ববর্তী বোচাগঞ্জ উপজেলার সীমানার মধ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে আমার কিছু করার নাই। তবে আমি পীরগঞ্জ বিষয়টি পীরগঞ্জ সহকারি ভূমি কমিশনারকে জানাবো। এ বিষয়ে ৬নং রনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, আমার প্রজেক্টের জন্য কিছু বালু প্রয়োজন ছিল তাই কিছু ট্রাক্টর দিয়ে বালু উত্তোলন করেছি। এখন অন্যরাও সেখানে বালু উত্তোলন করছে, আমি কি করবো।