ঢাকা ০১:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পরে চাঞ্চল্যকর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার

আজম রেহমান,সারাদিন ডেস্ক:: দীর্ঘ এক বছর পর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাঞ্চল্যকর সাবেক প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ (৫০) কে বাসের মধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্যগন চেতনা নাশক ঔষধ/ দ্রব্যসামগ্রী প্রয়োগ করে হত্যা মামলার এক আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুর জেলা। গ্রেফতারকৃত আসামী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার উত্তর রাজীবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নয়া মিয়ার ছেলে সাজু মিয়া (৪০)। গতকাল রবিবার তার নিজ থানা এলাকা সুন্দরগঞ্জ থেকে মামলাটির তদন্তকারী অফিসার পিবিআই রংপুর জেলার পুলিশ পরিদর্শক আবু হাসান কবির এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে রংপুর কোতয়ালী থানায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী বাদিনী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে রংপুর কোতয়ালী থানায় লিখিত এজাহার দিলে কোতয়ালী থানার একটি হত্যা মামলা (নং- ১০) রুজু হয়। মামলাটি থানা পুলিশ প্রথমে তদন্ত করলেও পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে পিবিআই রংপুর জেলা তদন্ত করে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। ভিকটিম ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ (৫০) প্রায় ১ বছর যাবৎ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি গত বছরের ০৩ নভেম্ভর অফিসের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ঐ দিন দুপুর অনুমান ১২.০০ ঘটিকার সময় গোবিন্দগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড হতে নিশিতা নামক রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী বাসে উঠেন। আসামীরা তাকে অনুসরন করে উক্ত বাসে উঠে এবং বাসের মধ্যে তাকে অজ্ঞান করে তার পরিহিত প্যান্টের ডান পাশে চোরাই পকেটে রক্ষিত প্রায় ৪০,০০০/- টাকা ও ভিকটিমের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল সেট ছিনতাই করে নেয়। উক্ত পরিবহন মিঠাপুকুর বাসষ্ট্যান্ডে এসে পৌছলে সকল আসামীরা সেখানে নেমে পরে। ঘটনার পর অপরাধীরা সকলে টাকা ভাগ করে নেয়। এদিকে বাসটি বেলা অনুমান ০২.৩০ ঘটিকার সময় রংপুর বাস টার্মিনালে পৌছিলে বাসের লোকজন ভিকটিমকে অজ্ঞান অবস্থায় সীটে পড়ে থাকতে দেখলে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ দিন রাত্রি অনুমান ০৯.৫০ ঘটিকার সময় মৃত্যু বরন করেন। গ্রেফতারকৃত আসামী সহ তার সহযোগীরা মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও জিনের বাদশা সেজে, মানুষকে নকল স্বর্ণ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। অত্র মামলা সংক্রান্তে আরো দুই জন আসামী জেল হাজতে আটক আছে। তারমধ্যে একজন আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। পিবিআই রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম-সেবা জানান ভিকটিম ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে গোবিন্দগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিলেন। ইতিপূর্বে ভিকটিম ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ এর মৃত্যুর সংবাদ জানার পর পিবিআই রংপুর জেলা ঘটনার বিষয় উৎঘাটনের জন্যে ছায়া তদন্ত করে। প্রাথমিক অবস্থায় মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করে এবং একপর্যায়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে পিবিআই রংপুর জেলাকে তদন্তভার অর্পন করলে সূষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম-সেবার সার্বিক তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হাসান কবিরের নেতৃত্বে তদন্ত টিম গঠন করা হয়। মামলার মুল রহস্য উৎঘাটন সহ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মূল আসামী গ্রেফতার হওয়া ও রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় ভিকটিমের পরিবারের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তদন্ত কারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হাসান কবির জানান, আসামীরা খুবই চতুর। অনেক কৌশল অবলম্বন করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে আজ সোমবার তারিখে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পরে চাঞ্চল্যকর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার

আপডেট টাইম ১১:৪০:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৮

আজম রেহমান,সারাদিন ডেস্ক:: দীর্ঘ এক বছর পর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাঞ্চল্যকর সাবেক প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ (৫০) কে বাসের মধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্যগন চেতনা নাশক ঔষধ/ দ্রব্যসামগ্রী প্রয়োগ করে হত্যা মামলার এক আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুর জেলা। গ্রেফতারকৃত আসামী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার উত্তর রাজীবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নয়া মিয়ার ছেলে সাজু মিয়া (৪০)। গতকাল রবিবার তার নিজ থানা এলাকা সুন্দরগঞ্জ থেকে মামলাটির তদন্তকারী অফিসার পিবিআই রংপুর জেলার পুলিশ পরিদর্শক আবু হাসান কবির এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে রংপুর কোতয়ালী থানায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী বাদিনী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে রংপুর কোতয়ালী থানায় লিখিত এজাহার দিলে কোতয়ালী থানার একটি হত্যা মামলা (নং- ১০) রুজু হয়। মামলাটি থানা পুলিশ প্রথমে তদন্ত করলেও পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে পিবিআই রংপুর জেলা তদন্ত করে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। ভিকটিম ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ (৫০) প্রায় ১ বছর যাবৎ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি গত বছরের ০৩ নভেম্ভর অফিসের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ঐ দিন দুপুর অনুমান ১২.০০ ঘটিকার সময় গোবিন্দগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড হতে নিশিতা নামক রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী বাসে উঠেন। আসামীরা তাকে অনুসরন করে উক্ত বাসে উঠে এবং বাসের মধ্যে তাকে অজ্ঞান করে তার পরিহিত প্যান্টের ডান পাশে চোরাই পকেটে রক্ষিত প্রায় ৪০,০০০/- টাকা ও ভিকটিমের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল সেট ছিনতাই করে নেয়। উক্ত পরিবহন মিঠাপুকুর বাসষ্ট্যান্ডে এসে পৌছলে সকল আসামীরা সেখানে নেমে পরে। ঘটনার পর অপরাধীরা সকলে টাকা ভাগ করে নেয়। এদিকে বাসটি বেলা অনুমান ০২.৩০ ঘটিকার সময় রংপুর বাস টার্মিনালে পৌছিলে বাসের লোকজন ভিকটিমকে অজ্ঞান অবস্থায় সীটে পড়ে থাকতে দেখলে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ দিন রাত্রি অনুমান ০৯.৫০ ঘটিকার সময় মৃত্যু বরন করেন। গ্রেফতারকৃত আসামী সহ তার সহযোগীরা মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও জিনের বাদশা সেজে, মানুষকে নকল স্বর্ণ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। অত্র মামলা সংক্রান্তে আরো দুই জন আসামী জেল হাজতে আটক আছে। তারমধ্যে একজন আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। পিবিআই রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম-সেবা জানান ভিকটিম ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে গোবিন্দগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিলেন। ইতিপূর্বে ভিকটিম ডাঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ এর মৃত্যুর সংবাদ জানার পর পিবিআই রংপুর জেলা ঘটনার বিষয় উৎঘাটনের জন্যে ছায়া তদন্ত করে। প্রাথমিক অবস্থায় মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করে এবং একপর্যায়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে পিবিআই রংপুর জেলাকে তদন্তভার অর্পন করলে সূষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম-সেবার সার্বিক তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হাসান কবিরের নেতৃত্বে তদন্ত টিম গঠন করা হয়। মামলার মুল রহস্য উৎঘাটন সহ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মূল আসামী গ্রেফতার হওয়া ও রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় ভিকটিমের পরিবারের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তদন্ত কারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হাসান কবির জানান, আসামীরা খুবই চতুর। অনেক কৌশল অবলম্বন করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে আজ সোমবার তারিখে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।