ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখন কিভাবে চলে দিলদারের সেই নাসরিনের জীবন

বাংলা সিনেমায় বহু সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অনেক কালজয়ী সিনেমাতেও দেখা গেছে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাসরিনকে। এক সময়কার দর্শকদের কাছে অতি পরিচিত এ নামটি এখন শোনাই যায় না।সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন নাসরিন। হতাশা আর কষ্টই ঝরেছে তার মুখ থেকে।নাসরিন বলেন, আমি কাছের মানুষদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি বারবার। তাই নায়িকা হতে পারিনি। অনেক বড় নায়িকারাও আমার সঙ্গে গুটিবাজি করেছে। আজকের মেয়েদের মতো অতো বুদ্ধিমান ছিলাম না, নিজের প্রতি যত্নশীল ছিলাম না। তাই অনেক সুযোগ হেলায় হারিয়েছি। একসময় আফসোস হতো। এখন আর হয় না। যেভাবে আল্লাহ রেখেছেন সেভাবেই খুশি আমি, যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে। তবে কষ্ট হয় সিনেমার অবস্থা দেখে। সিনেমা নেই। কাজ নেই। করুণ দিনযাপন করতে হচ্ছে আমার মতো শিল্পীদের।শুক্রবার (৮ মার্চ) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বনভোজনে গিয়ে নাসরিন বলেন, কাজ না থাকলেও নায়ক-নায়িকাদের দিন চলে যাচ্ছে স্টেজে নেচে, ফিতা কেটে, নানা রকম ব্যবসা-বাণিজ্যে। কিন্তু দরিদ্র শিল্পীরা যারা অতিরিক্ত শিল্পী হয়ে রোজ মজুরিতে কাজ করতেন তাদের অবস্থা নাজুক।আজকাল স্টেজ শো করেই জীবন যাপন করছেন বলে জানান নাসরিন। কোনো রকম সংসার সামলাচ্ছেন। তার ভাষায়, এত পেশা থাকতে সিনেমায় মানুষ কেন আসে? সম্মানের জন্য। লোকে শিল্পী বলবে। সম্মান করবে। সেই সম্মান নিয়ে রাস্তায় রিকশা চালাবে, অন্যের বাড়িতে বুয়ার কাজ করবে এটা হয়তো অনেকে মানতে পারে না। তাই বুক বেঁধে থাকে কেউ সিনেমা করলে তাকে ডাকবে। কিন্তু সিনেমা কই!আমিও অনেক দিন অপেক্ষায় থেকেছি। সিনেমায় ডাক আসে না। পরিচিতিটা কাজে লাগিয়ে স্টেজ শো করে জীবন চালাচ্ছি।নাসরিনের মতে, সাকিব-অপু জুটি ভেঙে যাওয়ায় সিনেমাও শেষ হয়ে গেছে। তাদের জুটির ছবি দেখতে দর্শক সিনেমা হলে যেতো। কিন্তু এখন আর তাও যায় না।১৯৯২ সালে রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় নাসরিনের, ‘অগ্নিশপথ’ ছবির মাধ্যমে। এরপর কৌতুকাভিনেতা টেলি সামাদের সঙ্গে জুটি গড়ে আলোচনায় আসেন। তবে আরেক কৌতুকাভিনেতা দিলদারের নায়িকা হিসেবেই তিনি বেশি জনপ্রিয়তা পান। নাসরিন জানান, ‘ছুটির ঘণ্টা’র কিংবদন্তি পরিচালক আজিজুর রহমান তাকে বলতেন ‘বোম্বের মমতাজ’। প্রয়াত চিত্রপরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন তাকে বলেছিলেন নায়ক রুবেলের বিপরীতে নায়িকা করে দেবেন।আরেক কিংবদন্তি পরিচালক ‘সুজন সখী’র নির্মাতা জহিরুল হক ‘হেলেন’ নামে ডাকতেন নাসরিনকে। তিনিও প্রস্তাব দিয়েছিলেন ‘সুজন সখী’র নায়িকা হওয়ার। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি নাসরিনের।অনেক কিছু হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু হয়ে উঠেনি। এখন কেবল সন্তানদের মানুষ করতে চান। নিজের পূরণ না হওয়া স্বপ্নগুলো তাদের মধ্য দিয়ে পূরণ করতে চান নাসরিন। ভক্তদের কাছে এক মেয়ে এবং এক ছেলের জন্য দোয়া চান। স্বামী রিয়েলকে নিয়ে সুখে জীবনটা কাটাতে চান

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

এখন কিভাবে চলে দিলদারের সেই নাসরিনের জীবন

আপডেট টাইম ০৮:২৫:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাংলা সিনেমায় বহু সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অনেক কালজয়ী সিনেমাতেও দেখা গেছে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাসরিনকে। এক সময়কার দর্শকদের কাছে অতি পরিচিত এ নামটি এখন শোনাই যায় না।সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন নাসরিন। হতাশা আর কষ্টই ঝরেছে তার মুখ থেকে।নাসরিন বলেন, আমি কাছের মানুষদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি বারবার। তাই নায়িকা হতে পারিনি। অনেক বড় নায়িকারাও আমার সঙ্গে গুটিবাজি করেছে। আজকের মেয়েদের মতো অতো বুদ্ধিমান ছিলাম না, নিজের প্রতি যত্নশীল ছিলাম না। তাই অনেক সুযোগ হেলায় হারিয়েছি। একসময় আফসোস হতো। এখন আর হয় না। যেভাবে আল্লাহ রেখেছেন সেভাবেই খুশি আমি, যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে। তবে কষ্ট হয় সিনেমার অবস্থা দেখে। সিনেমা নেই। কাজ নেই। করুণ দিনযাপন করতে হচ্ছে আমার মতো শিল্পীদের।শুক্রবার (৮ মার্চ) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বনভোজনে গিয়ে নাসরিন বলেন, কাজ না থাকলেও নায়ক-নায়িকাদের দিন চলে যাচ্ছে স্টেজে নেচে, ফিতা কেটে, নানা রকম ব্যবসা-বাণিজ্যে। কিন্তু দরিদ্র শিল্পীরা যারা অতিরিক্ত শিল্পী হয়ে রোজ মজুরিতে কাজ করতেন তাদের অবস্থা নাজুক।আজকাল স্টেজ শো করেই জীবন যাপন করছেন বলে জানান নাসরিন। কোনো রকম সংসার সামলাচ্ছেন। তার ভাষায়, এত পেশা থাকতে সিনেমায় মানুষ কেন আসে? সম্মানের জন্য। লোকে শিল্পী বলবে। সম্মান করবে। সেই সম্মান নিয়ে রাস্তায় রিকশা চালাবে, অন্যের বাড়িতে বুয়ার কাজ করবে এটা হয়তো অনেকে মানতে পারে না। তাই বুক বেঁধে থাকে কেউ সিনেমা করলে তাকে ডাকবে। কিন্তু সিনেমা কই!আমিও অনেক দিন অপেক্ষায় থেকেছি। সিনেমায় ডাক আসে না। পরিচিতিটা কাজে লাগিয়ে স্টেজ শো করে জীবন চালাচ্ছি।নাসরিনের মতে, সাকিব-অপু জুটি ভেঙে যাওয়ায় সিনেমাও শেষ হয়ে গেছে। তাদের জুটির ছবি দেখতে দর্শক সিনেমা হলে যেতো। কিন্তু এখন আর তাও যায় না।১৯৯২ সালে রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় নাসরিনের, ‘অগ্নিশপথ’ ছবির মাধ্যমে। এরপর কৌতুকাভিনেতা টেলি সামাদের সঙ্গে জুটি গড়ে আলোচনায় আসেন। তবে আরেক কৌতুকাভিনেতা দিলদারের নায়িকা হিসেবেই তিনি বেশি জনপ্রিয়তা পান। নাসরিন জানান, ‘ছুটির ঘণ্টা’র কিংবদন্তি পরিচালক আজিজুর রহমান তাকে বলতেন ‘বোম্বের মমতাজ’। প্রয়াত চিত্রপরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন তাকে বলেছিলেন নায়ক রুবেলের বিপরীতে নায়িকা করে দেবেন।আরেক কিংবদন্তি পরিচালক ‘সুজন সখী’র নির্মাতা জহিরুল হক ‘হেলেন’ নামে ডাকতেন নাসরিনকে। তিনিও প্রস্তাব দিয়েছিলেন ‘সুজন সখী’র নায়িকা হওয়ার। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি নাসরিনের।অনেক কিছু হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু হয়ে উঠেনি। এখন কেবল সন্তানদের মানুষ করতে চান। নিজের পূরণ না হওয়া স্বপ্নগুলো তাদের মধ্য দিয়ে পূরণ করতে চান নাসরিন। ভক্তদের কাছে এক মেয়ে এবং এক ছেলের জন্য দোয়া চান। স্বামী রিয়েলকে নিয়ে সুখে জীবনটা কাটাতে চান