ঢাকা ১১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি আমন ধান সংগ্রহের কৃষক লটারী

জাকির মোস্তাফিজ মিলু,ঠাকুরগাঁও\ প্রকৃত কৃষকদের তালিকা নিয়ে সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের প্রশ্নবাণে জর্জড়িত হয়ে কৃষি বিভাগ যে উত্তর দেয় তা নিয়ে বিতর্ক ও হৈ হট্টোগোলের মধ্য দিয়ে সরকারি আমন ধান সংগ্রহের কৃষক নির্বাচনের লটারী সম্পন্ন হয়। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক চলতি আমন মৌসুমে প্রতিকেজি ২৬ টাকা দরে সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে।
সোমবার সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কর্মসুচি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কেএম কামরুজ্জামান সেলিম। লটারী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাাদিক বদরুল ইসলাম বিপ্লব ও আব্দুল করিম ১৪ সালের কৃষি বিভাগের তালিকা অনুযায়ি কৃষকদের কার্ড বিতরণের অসচ্ছতা ও প্রকৃত কৃষকদের বাদ দেয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য এনে এ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সাথে সাথে উপস্থিত চেয়ারম্যান পয়গাম আলীসহ জনপ্রতিনিধিরাও এ ব্যাপারে পুকুর চুরির অভিযোগ এনে বলেন, একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই ধান সংগ্রহ হয় এবং প্রকৃত কৃষকরা কেউই এ প্রক্রিয়ায় ধান সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারেন না। বদরুল ইসলাম বিপ্লব রুহিয়া অঞ্চলের কয়েকজন কার্ডপ্রাপ্ত কৃষকের নাম উল্লেখ করে প্রশ্ন করেন , এরা ভূমিহীন হিসেবে রেল বস্তিতে থাকেন তারা কিভাবে কৃষক হলেন।
জবাব দিতে গিয়ে সালন্দর ইউনিয়নের উপ সহকারি কৃষিকর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তাদেরকে তালিকা পুনর্গঠন করে নতুন কৃষক অন্তর্ভুক্তি না করার ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা আছে। তাই তারা ১৪ সালের তালিকা দেখেই কৃষকদের কার্ড প্রদান করেন।
কৃষকদের অভিযোগ প্রকৃত কৃষকদেরকে কার্ড না দিয়ে একটি ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের দেয়া তালিকা অনুযায়ি কৃষক কার্ড দেয়া হয়ে থাকে। এবারও সেটাই করা হয়েছে। একজন সাংবাদিক চালকল মালিক সন্তোষ কুমারের ম্যানেজারসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের লটারী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মুজিবর রহমান প্রশ্ন করেন, এই কৃষকদের ধান সংগ্রহের নাম করে যা করা হয় তাতে কি একজন কৃষকও উপকৃত হন ?
পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বচ্ছতার অঙ্গীকার করে লটারী শুরু হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুনাংশু দত্ত , সদর ইউএনও আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রেসক্লাব সভাপতি মনসুর আলীসহ কৃষি বিভাগ, খাদ্য বিভাগ, কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, কৃষক প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।
এ মৌসুমে ১৬ হাজার ২শ ২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে জেলার পাঁচ টি উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ।
কৃষি বিভাগ জানায় এ বছর জেলায় ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯শ ২৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে । এই পরিমান জমি থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ ।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি আমন ধান সংগ্রহের কৃষক লটারী

আপডেট টাইম ০৬:০৬:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

জাকির মোস্তাফিজ মিলু,ঠাকুরগাঁও\ প্রকৃত কৃষকদের তালিকা নিয়ে সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের প্রশ্নবাণে জর্জড়িত হয়ে কৃষি বিভাগ যে উত্তর দেয় তা নিয়ে বিতর্ক ও হৈ হট্টোগোলের মধ্য দিয়ে সরকারি আমন ধান সংগ্রহের কৃষক নির্বাচনের লটারী সম্পন্ন হয়। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক চলতি আমন মৌসুমে প্রতিকেজি ২৬ টাকা দরে সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে।
সোমবার সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কর্মসুচি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কেএম কামরুজ্জামান সেলিম। লটারী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাাদিক বদরুল ইসলাম বিপ্লব ও আব্দুল করিম ১৪ সালের কৃষি বিভাগের তালিকা অনুযায়ি কৃষকদের কার্ড বিতরণের অসচ্ছতা ও প্রকৃত কৃষকদের বাদ দেয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য এনে এ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সাথে সাথে উপস্থিত চেয়ারম্যান পয়গাম আলীসহ জনপ্রতিনিধিরাও এ ব্যাপারে পুকুর চুরির অভিযোগ এনে বলেন, একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই ধান সংগ্রহ হয় এবং প্রকৃত কৃষকরা কেউই এ প্রক্রিয়ায় ধান সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারেন না। বদরুল ইসলাম বিপ্লব রুহিয়া অঞ্চলের কয়েকজন কার্ডপ্রাপ্ত কৃষকের নাম উল্লেখ করে প্রশ্ন করেন , এরা ভূমিহীন হিসেবে রেল বস্তিতে থাকেন তারা কিভাবে কৃষক হলেন।
জবাব দিতে গিয়ে সালন্দর ইউনিয়নের উপ সহকারি কৃষিকর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তাদেরকে তালিকা পুনর্গঠন করে নতুন কৃষক অন্তর্ভুক্তি না করার ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা আছে। তাই তারা ১৪ সালের তালিকা দেখেই কৃষকদের কার্ড প্রদান করেন।
কৃষকদের অভিযোগ প্রকৃত কৃষকদেরকে কার্ড না দিয়ে একটি ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের দেয়া তালিকা অনুযায়ি কৃষক কার্ড দেয়া হয়ে থাকে। এবারও সেটাই করা হয়েছে। একজন সাংবাদিক চালকল মালিক সন্তোষ কুমারের ম্যানেজারসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের লটারী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মুজিবর রহমান প্রশ্ন করেন, এই কৃষকদের ধান সংগ্রহের নাম করে যা করা হয় তাতে কি একজন কৃষকও উপকৃত হন ?
পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বচ্ছতার অঙ্গীকার করে লটারী শুরু হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুনাংশু দত্ত , সদর ইউএনও আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রেসক্লাব সভাপতি মনসুর আলীসহ কৃষি বিভাগ, খাদ্য বিভাগ, কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, কৃষক প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।
এ মৌসুমে ১৬ হাজার ২শ ২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে জেলার পাঁচ টি উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ।
কৃষি বিভাগ জানায় এ বছর জেলায় ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯শ ২৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে । এই পরিমান জমি থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ ।