ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পীরগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দুর্নিতী, কোটি টাকা নয়ছয়

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষা অফিসে দুর্নিতী বাসা বেধেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে।
এ অর্থবছরে এ উপজেলার ১৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামত, ক্ষুদ্র মেরামত, প্লেয়িং এক্সেসরিজ, ওয়াসব্লক ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। বরাদ্দকৃত অর্থের টাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা ১৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় সভাপতির যৌথ একাউন্ট এ জুন/১৯ মাসে ট্রান্সাফার করেন শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুল ইসলাম। উক্ত টাকার কাজ সর্বোচ্চ ১ মাসের মধ্যেই শতভাগ সমাপ্ত করা সম্ভব বলে নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত অনেক সুনাম ধন্য ও অভিজ্ঞ রাজমিস্ত্রিগণ জানান। অথচ ৩ মাস আগেই টাকা শিক্ষকদের একাউন্টে ট্রান্সফার হওয়ার পর তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট থেকে প্রধান শিক্ষকরা টাকা উত্তোলন করে সিংহভাগ টাকা পকেটস্থ করেন। এসব টাকা বেশিরভাগ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুল ইসলাম ও তার কয়েক সহযোগী দিলে পকেটস্থ করেন। ফলে শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের কাছ থেকে কাজ বুঝে নিতে ব্যর্থ হন। বিষয়টি গত ১ সপ্তাহ ধরে গণমাধ্যম কর্মীরা তথ্য উদঘাটন করলে শিক্ষা প্রশাসনের টনক নড়ে। কিছু প্রতিষ্ঠান নতুন করে নাম মাত্র কাজ শুরু করেছেন। দূর্নীতির প্রায় ১ কোটি টাকা শিক্ষা অফিসার তার লোকজন ও কয়েক জন শিক্ষক নেতা মিলে লোপাট করায় সরকারের টাকা দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে ও সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। যে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ব্যাপক দূর্নীতি ও ঘাপলা হয়েছে তাদের মধ্যে দেহানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোমরাদহ-১, দস্তমপুর, দানাজপুর, রনশিয়া, ভোমরাদহ-২, কাচনডুমুরিয়া, বাজারদেহা, ঘিডোব, পীরগঞ্জ মডেল, ভেমটিয়া, বেগুনগাঁও, হাজীপুর, আলসিয়াকৃষ্টপুর, কাস্তোর, জয়কুড়, গোদাগাড়ী, সেনগাঁও, চান্দোহর, মাঝখুড়িয়া, গড়গাঁও, ভামদা, আজলাবাদ শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, আগ্রাগরিনা, ইন্দ্রোইল, মাটিয়ানি, জগন্নাথপুর, সেনুয়া সটাপির, বাঁশগাড়া, চোপড়াবাড়ী, ঝাপড়তৈল, নানুহার, চাপরাগঞ্জ, তরলা, রাঘবপুর, বৃদ্ধিগাঁও, বনডাঙ্গা, ডিএনবি, একান্নপুর, আরাজি আলমপুর, মোহনপুর (চেয়ারম্যানপাড়া), দেওধা, আমিরপাড়া, দক্ষিণ কাচন, সেনুয়া বাঁশবাড়ি, হরসুয়া পশ্চিমপাড়া, দলপতিপুর, মঞ্জুরাকালী (জনগাঁও), ইনুয়া, বিএস, বেগুনবাড়ি, একতা, দক্ষিণ নওডাঙ্গা, আমতলির হাট, হরিটা, রাতন, পিএ, সাটিয়া, চাঁদপুর বটতলি, জসাইপাড়া, চন্দ্রা, বনুয়াপাড়া, বেলদহী, পূর্ব মল্লিকপুর, পশ্চিম মল্লিমপুর ও বেলদহী রমিজ মন্ডল। এসব প্রকল্পে ব্যাপক অর্থ ঘাপলা হওয়ার পিছনে শিক্ষা অফিসার হাবিবুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে জানা গেছে। এলাকার সুশিল সমাজ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হারুনুর রশিদ জানান, দূর্নীতি হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুল ইসলামের মতামত চাওয়া হলে এ ব্যাপরে তিনি কোন মতামত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিষয়টি সচেতনমহল উদ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

পীরগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দুর্নিতী, কোটি টাকা নয়ছয়

আপডেট টাইম ১২:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষা অফিসে দুর্নিতী বাসা বেধেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে।
এ অর্থবছরে এ উপজেলার ১৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামত, ক্ষুদ্র মেরামত, প্লেয়িং এক্সেসরিজ, ওয়াসব্লক ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। বরাদ্দকৃত অর্থের টাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা ১৮৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় সভাপতির যৌথ একাউন্ট এ জুন/১৯ মাসে ট্রান্সাফার করেন শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুল ইসলাম। উক্ত টাকার কাজ সর্বোচ্চ ১ মাসের মধ্যেই শতভাগ সমাপ্ত করা সম্ভব বলে নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত অনেক সুনাম ধন্য ও অভিজ্ঞ রাজমিস্ত্রিগণ জানান। অথচ ৩ মাস আগেই টাকা শিক্ষকদের একাউন্টে ট্রান্সফার হওয়ার পর তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট থেকে প্রধান শিক্ষকরা টাকা উত্তোলন করে সিংহভাগ টাকা পকেটস্থ করেন। এসব টাকা বেশিরভাগ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুল ইসলাম ও তার কয়েক সহযোগী দিলে পকেটস্থ করেন। ফলে শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের কাছ থেকে কাজ বুঝে নিতে ব্যর্থ হন। বিষয়টি গত ১ সপ্তাহ ধরে গণমাধ্যম কর্মীরা তথ্য উদঘাটন করলে শিক্ষা প্রশাসনের টনক নড়ে। কিছু প্রতিষ্ঠান নতুন করে নাম মাত্র কাজ শুরু করেছেন। দূর্নীতির প্রায় ১ কোটি টাকা শিক্ষা অফিসার তার লোকজন ও কয়েক জন শিক্ষক নেতা মিলে লোপাট করায় সরকারের টাকা দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে ও সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। যে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ব্যাপক দূর্নীতি ও ঘাপলা হয়েছে তাদের মধ্যে দেহানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোমরাদহ-১, দস্তমপুর, দানাজপুর, রনশিয়া, ভোমরাদহ-২, কাচনডুমুরিয়া, বাজারদেহা, ঘিডোব, পীরগঞ্জ মডেল, ভেমটিয়া, বেগুনগাঁও, হাজীপুর, আলসিয়াকৃষ্টপুর, কাস্তোর, জয়কুড়, গোদাগাড়ী, সেনগাঁও, চান্দোহর, মাঝখুড়িয়া, গড়গাঁও, ভামদা, আজলাবাদ শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, আগ্রাগরিনা, ইন্দ্রোইল, মাটিয়ানি, জগন্নাথপুর, সেনুয়া সটাপির, বাঁশগাড়া, চোপড়াবাড়ী, ঝাপড়তৈল, নানুহার, চাপরাগঞ্জ, তরলা, রাঘবপুর, বৃদ্ধিগাঁও, বনডাঙ্গা, ডিএনবি, একান্নপুর, আরাজি আলমপুর, মোহনপুর (চেয়ারম্যানপাড়া), দেওধা, আমিরপাড়া, দক্ষিণ কাচন, সেনুয়া বাঁশবাড়ি, হরসুয়া পশ্চিমপাড়া, দলপতিপুর, মঞ্জুরাকালী (জনগাঁও), ইনুয়া, বিএস, বেগুনবাড়ি, একতা, দক্ষিণ নওডাঙ্গা, আমতলির হাট, হরিটা, রাতন, পিএ, সাটিয়া, চাঁদপুর বটতলি, জসাইপাড়া, চন্দ্রা, বনুয়াপাড়া, বেলদহী, পূর্ব মল্লিকপুর, পশ্চিম মল্লিমপুর ও বেলদহী রমিজ মন্ডল। এসব প্রকল্পে ব্যাপক অর্থ ঘাপলা হওয়ার পিছনে শিক্ষা অফিসার হাবিবুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে জানা গেছে। এলাকার সুশিল সমাজ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হারুনুর রশিদ জানান, দূর্নীতি হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুল ইসলামের মতামত চাওয়া হলে এ ব্যাপরে তিনি কোন মতামত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিষয়টি সচেতনমহল উদ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।