ঢাকা ০৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ

আজম রেহমান,সারাদিন ডেস্ক:: আইনি প্রক্রিয়াকে দীর্ঘসূত্রতা করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য, নির্বাচন থেকে দূরে সরানোর জন্য নীলনকশার মধ্য দিয়ে তাঁকে কারা অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে জামিন স্থগিতের আবেদনকারীদের নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার এই আদেশের পর দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, অবৈধ–অনৈতিক সরকার ভয়াবহ অত্যাচার নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। আইনের শাসনকে একে একে ধ্বংস করে চলেছে। গণতন্ত্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় যে জামিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সেগুলোকে দীর্ঘসূত্রতার পাশাপাশি বিভিন্ন ছলচাতুরী ও কলা-কৌশলের মধ্য দিয়ে বিলম্বিত করছে সরকার। হাইকোর্টে যখন তাঁকে জামিন দেওয়া হলো, তারপরে আবার সেই দীর্ঘসূত্রতা শুরু হয়েছে। তিনি যাতে বের হতে না পারেন, সে জন্য ছলচাতুরী করে সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে এই সরকার সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটা করেছে, সেটা হচ্ছে, তারা বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করেছে। তার প্রমাণ আমরা দেখেছি। প্রধান বিচারপতিকে জোর করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এবং জোর করে তাঁকে পদত্যাগও করানো হয়েছে। যাঁরা জুনিয়র ছিলেন, তাঁদের আজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

সরকার একে একে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন বিচারব্যবস্থার ওপর তারা চড়াও হয়েছে। এটা হচ্ছে মানুষের শেষ ভরসারস্থল। সেখানে আজকে এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আজকে সরকারি ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আদালতের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে আমরা সেটাই দেখতে পাচ্ছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, একটা মামলায় জামিন পাওয়ার পর আরেকটা মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখানো সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন এটা একেবারে বেআইনি। কিন্তু তারপরও করছেন তাঁরা।

প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ দেশের উচ্চতম আদালত থেকে যেটা প্রত্যাশা করেনি, সেটাই আজ ঘটেছে। মামলার শুনানির সময় আপিলকারী দুদকের আইনজীবী তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের কোনো বক্তব্য না শুনে হাইকোর্টে দেওয়া জামিনের আদেশকে রোববার পর্যন্ত স্থগিত রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অপর পক্ষের কথা না শুনে এই ধরনের রায় আমরা প্রত্যাশা করিনি।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল ধ্বংস হলে কারও জন্য এটা সুখকর হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ

আপডেট টাইম ০৮:০৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মার্চ ২০১৮

আজম রেহমান,সারাদিন ডেস্ক:: আইনি প্রক্রিয়াকে দীর্ঘসূত্রতা করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য, নির্বাচন থেকে দূরে সরানোর জন্য নীলনকশার মধ্য দিয়ে তাঁকে কারা অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে জামিন স্থগিতের আবেদনকারীদের নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার এই আদেশের পর দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, অবৈধ–অনৈতিক সরকার ভয়াবহ অত্যাচার নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। আইনের শাসনকে একে একে ধ্বংস করে চলেছে। গণতন্ত্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় যে জামিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সেগুলোকে দীর্ঘসূত্রতার পাশাপাশি বিভিন্ন ছলচাতুরী ও কলা-কৌশলের মধ্য দিয়ে বিলম্বিত করছে সরকার। হাইকোর্টে যখন তাঁকে জামিন দেওয়া হলো, তারপরে আবার সেই দীর্ঘসূত্রতা শুরু হয়েছে। তিনি যাতে বের হতে না পারেন, সে জন্য ছলচাতুরী করে সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে এই সরকার সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটা করেছে, সেটা হচ্ছে, তারা বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করেছে। তার প্রমাণ আমরা দেখেছি। প্রধান বিচারপতিকে জোর করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এবং জোর করে তাঁকে পদত্যাগও করানো হয়েছে। যাঁরা জুনিয়র ছিলেন, তাঁদের আজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

সরকার একে একে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে দাবি করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন বিচারব্যবস্থার ওপর তারা চড়াও হয়েছে। এটা হচ্ছে মানুষের শেষ ভরসারস্থল। সেখানে আজকে এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আজকে সরকারি ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আদালতের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে আমরা সেটাই দেখতে পাচ্ছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, একটা মামলায় জামিন পাওয়ার পর আরেকটা মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখানো সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন এটা একেবারে বেআইনি। কিন্তু তারপরও করছেন তাঁরা।

প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ দেশের উচ্চতম আদালত থেকে যেটা প্রত্যাশা করেনি, সেটাই আজ ঘটেছে। মামলার শুনানির সময় আপিলকারী দুদকের আইনজীবী তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের কোনো বক্তব্য না শুনে হাইকোর্টে দেওয়া জামিনের আদেশকে রোববার পর্যন্ত স্থগিত রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অপর পক্ষের কথা না শুনে এই ধরনের রায় আমরা প্রত্যাশা করিনি।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল ধ্বংস হলে কারও জন্য এটা সুখকর হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।