ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেমিক্যাল না এলপিজি, ব্লেইম গেম বন্ধ করে প্রতিকার খুঁজতে হবে

সারাদিন ডেস্ক:: ঘাতক’ কেমিক্যালের কারণে পুরান ঢাকায় প্রথমবার ঝরে ১২৪ প্রাণ (নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড)। এবার চকবাজারে অঙ্গার হলেন ৬৭ জন। এরপরও কেন অবাধে কেমিক্যাল বিক্রি হচ্ছে পুরান ঢাকায়? কীভাবে একজন বাড়িওয়ালা আবাসিক ভবনে কেমিক্যালের গোডাউন ভাড়া দিয়ে বছরের পর বছর লাখ লাখ লোকের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছেন? এসব বিষয়ে জানতে সেবা প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী আহমদ খানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সংবাদ সারাদিন কে বলেন, কেমিক্যালের দোকান বা গুদামের লাইসেন্স আমরা দেই না। বিস্ফোরক অধিদফতর লাইসেন্স দেয়। তবে আমি মনে করি, তাদের এ দায়িত্ব দেয়া উচিত নয়। তারা শুধু গিয়ে স্বাক্ষর করেই লাইসেন্স দেয়। তাদের এ দায়িত্ব পালনের ক্যাপাসিটি নেই।

কেমিক্যাল হোক বা এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস), তাদের কেউই ফায়ার সার্ভিস থেকে লাইসেন্স নেয় না, এটা বাধ্যতামূলক নয়। আমি চাই, এটা বাধ্যতামূলক করা হোক। ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ছাড়া তাদের ব্যবসা করতে দেয়া উচিত নয়। উন্নত দেশগুলো এমনকি সিঙ্গাপুরেও কোনো হোটেলে ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ছাড়া এলপিজি লাগাতে পারে না।ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নেয়া বাধ্যতামূলক করতে আমরা নিয়মিত মন্ত্রণালয়ে অ্যাপ্রোচ করে যাচ্ছি।

পুরান ঢাকার পুরো পরিবেশটাই ভোলাটাইল, পুরোটাই আন-অথরাইজড। তাহলে শুধুমাত্র সিলিন্ডার কিংবা কেমিক্যালকে দোষারোপ করা হচ্ছে কেন।

আলী আহমদ খান : প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয়, দোতলায় (হাজী ওয়াহেদ ম্যানশন) হাইলি ফ্লেইমেবল এক্সপ্লোশন (উচ্চমাত্রার দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরণ) থেকেই আগুনের সূত্রপাত। ভিডিও ফুটেজে আমরা মানুষকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছি। যদি নিচ থেকে বিস্ফোরণ হতো তাহলে মানুষ এতো দৌড়াদৌড়ি করতে পারতো না। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরাও আমার সঙ্গে একই মতামত ব্যক্ত করেছেন।

আর এলপিজি অত সহজে ব্লাস্ট (বিস্ফোরিত) হয় না। আগুনে পড়ে থাকলেও তা সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয় না। কারণ এর মুখ টাইট (শক্ত) করে লাগানো থাকে এবং গার্ড থাকে। এলপিজির বিস্ফোরণগুলো সাধারণত কেয়ারলেসনেসের (অসাবধানতা) কারণে হয়ে থাকে। চুড়িহাট্টার ওই অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থলে থাকা হোটেলের এলপিজিগুলো ঠিক ছিল।

একটা কথা মনে রাখতে হবে, তিনটা কারণে আগুন তীব্র হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হিট (গরম ভাব/তাপ) থাকলে, সোর্স (দাহ্য পদার্থ) থাকলে এবং অক্সিজেন থাকলে। এ তিনটার যেকোনো একটা যদি কাট-অফ (বিচ্ছিন্ন) করা যায় তাহলে আগুন বাড়তে পারে না। যেমন- কার্বন ডাই-অক্সাইড দিয়ে আমরা অক্সিজেনকে দমাতে পারলে আগুন বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু এখানে অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থ থাকায় কোনোটাই দমানো যাচ্ছিল না।

 

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

কেমিক্যাল না এলপিজি, ব্লেইম গেম বন্ধ করে প্রতিকার খুঁজতে হবে

আপডেট টাইম ১০:০৬:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

সারাদিন ডেস্ক:: ঘাতক’ কেমিক্যালের কারণে পুরান ঢাকায় প্রথমবার ঝরে ১২৪ প্রাণ (নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড)। এবার চকবাজারে অঙ্গার হলেন ৬৭ জন। এরপরও কেন অবাধে কেমিক্যাল বিক্রি হচ্ছে পুরান ঢাকায়? কীভাবে একজন বাড়িওয়ালা আবাসিক ভবনে কেমিক্যালের গোডাউন ভাড়া দিয়ে বছরের পর বছর লাখ লাখ লোকের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছেন? এসব বিষয়ে জানতে সেবা প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী আহমদ খানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সংবাদ সারাদিন কে বলেন, কেমিক্যালের দোকান বা গুদামের লাইসেন্স আমরা দেই না। বিস্ফোরক অধিদফতর লাইসেন্স দেয়। তবে আমি মনে করি, তাদের এ দায়িত্ব দেয়া উচিত নয়। তারা শুধু গিয়ে স্বাক্ষর করেই লাইসেন্স দেয়। তাদের এ দায়িত্ব পালনের ক্যাপাসিটি নেই।

কেমিক্যাল হোক বা এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস), তাদের কেউই ফায়ার সার্ভিস থেকে লাইসেন্স নেয় না, এটা বাধ্যতামূলক নয়। আমি চাই, এটা বাধ্যতামূলক করা হোক। ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ছাড়া তাদের ব্যবসা করতে দেয়া উচিত নয়। উন্নত দেশগুলো এমনকি সিঙ্গাপুরেও কোনো হোটেলে ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ছাড়া এলপিজি লাগাতে পারে না।ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নেয়া বাধ্যতামূলক করতে আমরা নিয়মিত মন্ত্রণালয়ে অ্যাপ্রোচ করে যাচ্ছি।

পুরান ঢাকার পুরো পরিবেশটাই ভোলাটাইল, পুরোটাই আন-অথরাইজড। তাহলে শুধুমাত্র সিলিন্ডার কিংবা কেমিক্যালকে দোষারোপ করা হচ্ছে কেন।

আলী আহমদ খান : প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয়, দোতলায় (হাজী ওয়াহেদ ম্যানশন) হাইলি ফ্লেইমেবল এক্সপ্লোশন (উচ্চমাত্রার দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরণ) থেকেই আগুনের সূত্রপাত। ভিডিও ফুটেজে আমরা মানুষকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছি। যদি নিচ থেকে বিস্ফোরণ হতো তাহলে মানুষ এতো দৌড়াদৌড়ি করতে পারতো না। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরাও আমার সঙ্গে একই মতামত ব্যক্ত করেছেন।

আর এলপিজি অত সহজে ব্লাস্ট (বিস্ফোরিত) হয় না। আগুনে পড়ে থাকলেও তা সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয় না। কারণ এর মুখ টাইট (শক্ত) করে লাগানো থাকে এবং গার্ড থাকে। এলপিজির বিস্ফোরণগুলো সাধারণত কেয়ারলেসনেসের (অসাবধানতা) কারণে হয়ে থাকে। চুড়িহাট্টার ওই অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থলে থাকা হোটেলের এলপিজিগুলো ঠিক ছিল।

একটা কথা মনে রাখতে হবে, তিনটা কারণে আগুন তীব্র হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হিট (গরম ভাব/তাপ) থাকলে, সোর্স (দাহ্য পদার্থ) থাকলে এবং অক্সিজেন থাকলে। এ তিনটার যেকোনো একটা যদি কাট-অফ (বিচ্ছিন্ন) করা যায় তাহলে আগুন বাড়তে পারে না। যেমন- কার্বন ডাই-অক্সাইড দিয়ে আমরা অক্সিজেনকে দমাতে পারলে আগুন বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু এখানে অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থ থাকায় কোনোটাই দমানো যাচ্ছিল না।