ঠাকুরগাও প্রতিনিধি:: ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে জমি নিয়ে বিরোধের মামলা বিজ্ঞ আদালতে চলমান থাকা অবস্থায় নালিশী জমি দফায় দফায় জবরদখলের চেষ্টা করছেন একজন ১ম শ্রেণীর সরকারী চাকুরীজীবি উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাষক ডাঃ আব্দুস সামাদ চৌধুরী। তিনি একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন চাকরি করার কারণে গড়ে তুলেছেন একচ্ছত্র আধিপত্য। তবে তাঁর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগে অব্যবস্থাপনা ও জমি দখলের বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৯ মে আনুমানিক সকাল ১০ ঘটিকার সময়। বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। এলাকার জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
সরজমিনে রানীশংকৈল উপজেলার ঐ নালিশী জমিতে প্রত্যেক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানাগেছে জমির ‘আদ্যোপান্ত’। তারা বলেন, নালিশী জমি বাঁশবাড়ী মৌজার ১৫২ নং- এস,এ খতিয়ান ভূক্ত সম্পত্তি দাগ নং ২৯০। উক্ত দাগে ১৫ একর ৩৪ শতক জমি রয়েছে। ঐ জমি এস,এ রেকর্ডীয় মালিক ও তাদের ওয়ারিশগণের কাছ থেকে একাধিক ব্যাক্তি জমি ক্রয় করে বসবাস ও ভোগ-দখলীয় আছেন। এদের মধ্যে গোলাম রসূলও দলিল মূলে উক্ত দাগে জমি ক্রয় করে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস ও ভোগ-দখল থাকাবস্থায় বিগত ১৪/০২/২০০৪ ইং তারিখে অছিয়ত নামা দলিলমূলে নিজ সন্তানদের নিকট হস্তান্তর করেন। তারা নিজ নিজ নামে নামজারি করে অদ্যাবধি ভোগ-দখল করে আসছেন।
প্রত্যেক্ষদর্শীদের মতে যাদের সাথে মামলা চলমান তারা জমিতে না গিয়ে ডাঃ আব্দুস সামাদ চৌধুরী জমি জবরদখল করতে যান এর কারণ কি? মানলাম তিনি হাসপাতালের পক্ষ থেকে জমি দখল করতে এসেছেন কিন্তু যাদের দখলে আছে তাদেরকেতো আগে জানাতে পারতেন। আপনারা এই জমি কি মূলে খাচ্ছেন? এখানে আমরা জমি পাবো। আমাদেরকে কাগজ দেখান। তারা কাগজ দেখাতে না পারলে তাদের জমি না টিকলে সেটা ভিন্ন কথা। এভাবে জমি জবর দখল করতে আসা আমার মত অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। তাও আবার সরকারের একজন আমলা। তারা যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হতো তাহলে ঘটে যেতো রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ। হতাহত হতো উভয়ের পক্ষে অনেকেই। আমার মনে হয় যেহেতু তাদের দখলে জমি নাই এই দাগে যারা জমি খাচ্ছে তাদের সবাইকে অবগত করতে হবে। কার জমি টিকবে। কে বেশি খাচ্ছে আগে দেখতে হবে। অন্যথায় বলপূর্বক জমি বের করতে গেলে অনেক অঘটন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এব্যাপারে ভোগদখলীয় মালিক মাসুদুল গং বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান। আমরা যদি আদালতের রায়ে জমি পাই তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। যাদের সাথে মামলা চলমান তারা না আসে অন্য কেউ জবরদখল করতে আসা সংর্ঘষের সামিল বে-আইনি।
এদিকে ঘটনার দিন স্থানীয় সাংবাদিকরা জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: অফিসার ডাঃ আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, মিটিংএ সিদ্ধান্ত হয়েছে জমি বুঝে নেওয়ার ব্যাপারে।
তবে রানীশংকৈল ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবুল কালাম আজাদ এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে ইউএনও স্যার এবং ডিসি স্যারের সিদ্ধান্তে এখানে পাঠানো হয়েছে হাসপাতাল ২ একর জমি এবং ইউনিয়ন পরিষদের ৬৬ শতক জমি বুঝে দেওয়ার জন্য।
জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ আব্দুস সামাদ চৌধুরী মুঠোফনে বলেন, ব্যক্তি স্বার্থে নয় হাসপাতালের পক্ষ থেকে জমি দখল করতে যাওয়া হয়েছে। ইউএনও জানেন, ডিসি’র সাথে আলাপ হয়েছে সরাসরি। এগুলা অনেক ইতিহাস সাক্ষাতে কথা বলা যাবে।
রাণীশংকৈল হাসপাতালের জমি দখল করার বিষয়ে আপনি অবগত আছেন কিনা জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা: আবুল বাসার মো: সায়েদুজ্জামান বলেন, হ্যাঁ আমি এটা যতটুকু জানি যে, প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করে রাখার জন্য ঐখানে ২/৩ টা ইট দিয়ে সীমানার মতো দিয়েছে আরকি। ওটাতো আর একজনের দখলে আছে? ওরা যদি বলে আমাদের দখলে যেটা আছে আমাদের রাইট আছে বৈধতা আছে? উত্তরে তিনি বলেন, ওভাবে যদি থাকে তাহলেতো আমরা নিতে পারবোনা। তবে ওখানে হাসপাতাল আছে ইউএনও আছে প্রয়োজনে ঐ দাগে যারা দখলে আছে সবাই মিলে বসে যদি সমাধান করা যায় তাহলে ভাল হয়।
এদিকে আদালত ঐ নালিশী জমিতে বেআইনী অনুপ্রবেশ, বেদখল করা হতে, বৃক্ষরোপন সহ যাবতীয় অবৈধ কাজ এবং অন্যত্র হস্তান্তর করা হতে আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
সংবাদ শিরোনাম
রানীশংকৈলে জমি বিরোধ মামলা চলমান অবস্থায় জবরদখলের চেষ্টা: জনমনে নানা প্রশ্ন
-
সংবাদ সারাদিন ডেস্ক :
- আপডেট টাইম ০৭:৪৬:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- ১৯ বার
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ