ঢাকা ০৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
১৫ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যা জানা গেলো সরকারের ভেতরে সরকার ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ও অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় শহীদ’ ঘোষণার নির্দেশ কেন নয় পীরগঞ্জে হুসেইন মুহাম্মদ এর ৬ষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী পালিত যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ায় বেনজীরের সম্পদ ক্রোক, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ সোহাগ কিলিং মিশন রজনী বোস লেনে হত্যা, হাসপাতালের সামনে নিয়ে চলে বর্বরতা ভিডিও সংকটে বাংলাদেশ, ইউনূস কী করবেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সম্মেলন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, ফলাফল স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঠাকুরগাঁয়ের মিনাপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত পীরগঞ্জে ১১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কৃষি বিভাগের নারিকেলের চারা বিতরণ

ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুব্ধ ইরান, হরমুজ বন্ধের ইঙ্গিত

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। সামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোয় একের পর এক হামলা পাল্টা-হামলার জেরে সমগ্র অঞ্চলজুড়ে বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে জানিয়েছে ইরান। বিশ্লেষকরা একে আন্তর্জাতিক তেল সরবরাহের জন্য ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখছেন।

গত শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এই ঘটনার জবাবে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এরপর শনিবার ইসরায়েল ইরানের তেল ও জ্বালানি স্থাপনায় হামলা শুরু করে। এসব ঘটনায় উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে, ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা

এই প্রেক্ষাপটে রোববার (১৫ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসি-র জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক সিনা তুসি বলেন, “ইসরায়েল যদি ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোয় আরও বড় হামলা চালায়, তাহলে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। এটাই হতে পারে তাদের সবচেয়ে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া।”ইরান ইতিমধ্যেই এই প্রণালী বন্ধের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় রাখছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন। বিশ্লেষক তুসির ভাষায়, “এখনো আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি, তবে শনিবার ইসরায়েল ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছে, যা বিপজ্জনক বার্তা বহন করে।”

তিনি আরও জানান, “আজ ইরানও হাইফা বন্দরে ইসরায়েলের একটি জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। জ্বালানি অবকাঠামোকে ঘিরে এই ধরনের পাল্টা-পাল্টি হামলা চলতে থাকলে পুরো পারস্য উপসাগর অঞ্চল থেকে তেল-গ্যাস সরবরাহ হুমকির মুখে পড়বে।”

প্রসঙ্গত, হরমুজ প্রণালী ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপথ, যা পারস্য উপসাগর থেকে বিশ্বের প্রধান প্রধান বাজারে তেল রপ্তানির একমাত্র পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ) জানিয়েছে, বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালী দিয়ে পরিবাহিত হয়। ফলে এটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।  উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৯ সালেও যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল রপ্তানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তখন ইরান এই হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল। এখন সেই হুমকি বাস্তব হওয়ার সম্ভাবনা আবার সামনে এসেছে। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা বিশ্বে তেল সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। তথ্যসূত্র : আল জাজিরা

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

১৫ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যা জানা গেলো

ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুব্ধ ইরান, হরমুজ বন্ধের ইঙ্গিত

আপডেট টাইম ১০:৫৭:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। সামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোয় একের পর এক হামলা পাল্টা-হামলার জেরে সমগ্র অঞ্চলজুড়ে বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে জানিয়েছে ইরান। বিশ্লেষকরা একে আন্তর্জাতিক তেল সরবরাহের জন্য ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখছেন।

গত শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এই ঘটনার জবাবে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এরপর শনিবার ইসরায়েল ইরানের তেল ও জ্বালানি স্থাপনায় হামলা শুরু করে। এসব ঘটনায় উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে, ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা

এই প্রেক্ষাপটে রোববার (১৫ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসি-র জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক সিনা তুসি বলেন, “ইসরায়েল যদি ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোয় আরও বড় হামলা চালায়, তাহলে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। এটাই হতে পারে তাদের সবচেয়ে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া।”ইরান ইতিমধ্যেই এই প্রণালী বন্ধের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় রাখছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন। বিশ্লেষক তুসির ভাষায়, “এখনো আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি, তবে শনিবার ইসরায়েল ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছে, যা বিপজ্জনক বার্তা বহন করে।”

তিনি আরও জানান, “আজ ইরানও হাইফা বন্দরে ইসরায়েলের একটি জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। জ্বালানি অবকাঠামোকে ঘিরে এই ধরনের পাল্টা-পাল্টি হামলা চলতে থাকলে পুরো পারস্য উপসাগর অঞ্চল থেকে তেল-গ্যাস সরবরাহ হুমকির মুখে পড়বে।”

প্রসঙ্গত, হরমুজ প্রণালী ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপথ, যা পারস্য উপসাগর থেকে বিশ্বের প্রধান প্রধান বাজারে তেল রপ্তানির একমাত্র পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ) জানিয়েছে, বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালী দিয়ে পরিবাহিত হয়। ফলে এটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।  উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৯ সালেও যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল রপ্তানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তখন ইরান এই হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল। এখন সেই হুমকি বাস্তব হওয়ার সম্ভাবনা আবার সামনে এসেছে। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা বিশ্বে তেল সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। তথ্যসূত্র : আল জাজিরা