ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংকে নগদ টাকার সংকট সরকারি আমানত পেতে তোড়জোড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার::দেশের ব্যাংক খাত এখন নগদ বা তারল্য সংকটে ভুগছে। চাহিদা অনুযায়ী আমানত পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। আবার খেলাপি হওয়া ঋণও আদায় হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে নগদ টাকার প্রবাহ বাড়াতে বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারি আমানত পেতে
তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। সূত্র জানায়, তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত এবং বিভিন্ন সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের আমানত পেতে মরিয়া হয়ে উঠছে। কোনো কোনো বেসরকারি ব্যাংক ৯ শতাংশেরও বেশি সুদ হার অফার করে এসব আমানত পেতে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির পর গ্রাহকের আমানতের অর্থ ফেরত দিতে না পারার ঘটনায় বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহী হচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলো আগের মতো আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। আবার পণ্য আমদানিতে নিয়মিত ডলার কিনতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা নগদ টাকা ক্রমেই কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সঙ্কট বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ১০.৫০ শতাংশ সুদে টাকা ধার নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ সুদহার উঠেছিল ৯.৭৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি শেষে বিভিন্ন ব্যাংকে সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের সব মিলিয়ে আমানতের পরিমাণ ২ লাখ ৯ হাজার ৪০১ কোটি টাকা রয়েছে। এটি দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ২০.৬৫ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের রাখা আমানত অর্থাৎ সরকারি আমানত রয়েছে ৭৫ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, সরকারি আমানত ৭৫ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা আছে আরো ৫ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। ফলে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আমানত রয়েছে ৮১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে, গত বছর ঋণের সুদ হার এক অংকে নামিয়ে আনতে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৫০ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা যাবে। তার আগে আমানতের ২৫ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে পারত প্রতিষ্ঠানগুলো। ওই নির্দেশনা জারির পর বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারি ৮১ হাজার কোটি টাকার আমানত টানতে জোড় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যাংকে আমানত রাখার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে। ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট কাটছে না। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, সরকারের মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের আমানত রয়েছে ৩২ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আমানত রয়েছে ৪৩ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা আমানত (এনএফসিডি) রয়েছে ৮৩৮ কোটি টাকা।
সূত্র মতে, ব্যাংকগুলো পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানও (এনবিএফআই) ওই আমানত পেতে চাচ্ছে। ব্যাংক বহির্ভূত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তাদের তহবিলের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ আমানত হিসেবে জমা রাখতে পারবে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে সরকার থেকে পাওয়া অর্থেরও ৫০ শতাংশ এনবিএফআইয়ে রাখা যাবে। তবে সব এনবিএফআই সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাবে না। মাত্র ১৪টি প্রতিষ্ঠানে এসব আমানত রাখা যাবে। বর্তমানে দেশে ৩৪টি এনবিএফআই রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকে রাখা মেয়াদি আমানতের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত মানছে না বেশিরভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠান।
ব্যাংকাররা বলছেন, দেশে যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে, তাতে সরকারি আমানত থেকে ব্যয়ের প্রয়োজন পড়বে। ফলে তুলে নেয়ার প্রয়োজন হবে সরকারি আমানত। এতে বেড়ে যাবে ঋণ-আমানতের অনুপাতও, যা বিপদে ফেলবে ব্যাংকগুলোকে।
ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার পূর্বশর্ত কম সুদে আমানত পাওয়া। বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতিতে কম সুদে আমানত পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের আমানত ভাগিয়ে নেয়ার নানা কৌশল প্রয়োগ করছে।

ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) সভাপতি ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাজারের চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোর হাতে যে অর্থ রয়েছে সেটা খুবই কম। তারল্য সংকটের কারণে সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে যা একটি বড় বাধা। তিনি বলেন, সরকার তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বার্থেই ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেবে। ফলে আগামী দিনগুলোয় ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট আরো বাড়বে।

তবে আরেক ব্যাংকের এমডি বলেন, সরকারি আমানতের আশা ছেড়েই দিয়েছি। কারণ সরকারি আমানত পেতে প্রায় ১ শতাংশ হারে ঘুষ বা কমিশন দিতে হচ্ছে। যেসব ব্যাংক কমিশন দিতে পারছে, তারা সরকারি আমানত পাচ্ছে।

এদিকে সরকারি আমানত এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে ভাগিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটছে। সমপ্রতি দেশের প্রথম প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার আমানত বেশি সুদে নিয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংক। একইভাবে একটি ইসলামী ধারার ব্যাংক থেকে গত আগস্ট মাসে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার আমানত বের করে নিয়েছে অন্য কয়েকটি ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম ফোন ধরেননি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

ব্যাংকে নগদ টাকার সংকট সরকারি আমানত পেতে তোড়জোড়

আপডেট টাইম ১১:৩২:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৯

অর্থনৈতিক রিপোর্টার::দেশের ব্যাংক খাত এখন নগদ বা তারল্য সংকটে ভুগছে। চাহিদা অনুযায়ী আমানত পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। আবার খেলাপি হওয়া ঋণও আদায় হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে নগদ টাকার প্রবাহ বাড়াতে বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারি আমানত পেতে
তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। সূত্র জানায়, তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত এবং বিভিন্ন সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের আমানত পেতে মরিয়া হয়ে উঠছে। কোনো কোনো বেসরকারি ব্যাংক ৯ শতাংশেরও বেশি সুদ হার অফার করে এসব আমানত পেতে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির পর গ্রাহকের আমানতের অর্থ ফেরত দিতে না পারার ঘটনায় বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহী হচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলো আগের মতো আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। আবার পণ্য আমদানিতে নিয়মিত ডলার কিনতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা নগদ টাকা ক্রমেই কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সঙ্কট বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ১০.৫০ শতাংশ সুদে টাকা ধার নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ সুদহার উঠেছিল ৯.৭৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি শেষে বিভিন্ন ব্যাংকে সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের সব মিলিয়ে আমানতের পরিমাণ ২ লাখ ৯ হাজার ৪০১ কোটি টাকা রয়েছে। এটি দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ২০.৬৫ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের রাখা আমানত অর্থাৎ সরকারি আমানত রয়েছে ৭৫ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, সরকারি আমানত ৭৫ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা আছে আরো ৫ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। ফলে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আমানত রয়েছে ৮১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে, গত বছর ঋণের সুদ হার এক অংকে নামিয়ে আনতে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৫০ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা যাবে। তার আগে আমানতের ২৫ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে পারত প্রতিষ্ঠানগুলো। ওই নির্দেশনা জারির পর বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারি ৮১ হাজার কোটি টাকার আমানত টানতে জোড় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যাংকে আমানত রাখার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে। ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট কাটছে না। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, সরকারের মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের আমানত রয়েছে ৩২ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আমানত রয়েছে ৪৩ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা আমানত (এনএফসিডি) রয়েছে ৮৩৮ কোটি টাকা।
সূত্র মতে, ব্যাংকগুলো পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানও (এনবিএফআই) ওই আমানত পেতে চাচ্ছে। ব্যাংক বহির্ভূত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তাদের তহবিলের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ আমানত হিসেবে জমা রাখতে পারবে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে সরকার থেকে পাওয়া অর্থেরও ৫০ শতাংশ এনবিএফআইয়ে রাখা যাবে। তবে সব এনবিএফআই সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাবে না। মাত্র ১৪টি প্রতিষ্ঠানে এসব আমানত রাখা যাবে। বর্তমানে দেশে ৩৪টি এনবিএফআই রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকে রাখা মেয়াদি আমানতের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত মানছে না বেশিরভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠান।
ব্যাংকাররা বলছেন, দেশে যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে, তাতে সরকারি আমানত থেকে ব্যয়ের প্রয়োজন পড়বে। ফলে তুলে নেয়ার প্রয়োজন হবে সরকারি আমানত। এতে বেড়ে যাবে ঋণ-আমানতের অনুপাতও, যা বিপদে ফেলবে ব্যাংকগুলোকে।
ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার পূর্বশর্ত কম সুদে আমানত পাওয়া। বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতিতে কম সুদে আমানত পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের আমানত ভাগিয়ে নেয়ার নানা কৌশল প্রয়োগ করছে।

ব্যাংকের এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) সভাপতি ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাজারের চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোর হাতে যে অর্থ রয়েছে সেটা খুবই কম। তারল্য সংকটের কারণে সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে যা একটি বড় বাধা। তিনি বলেন, সরকার তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বার্থেই ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেবে। ফলে আগামী দিনগুলোয় ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট আরো বাড়বে।

তবে আরেক ব্যাংকের এমডি বলেন, সরকারি আমানতের আশা ছেড়েই দিয়েছি। কারণ সরকারি আমানত পেতে প্রায় ১ শতাংশ হারে ঘুষ বা কমিশন দিতে হচ্ছে। যেসব ব্যাংক কমিশন দিতে পারছে, তারা সরকারি আমানত পাচ্ছে।

এদিকে সরকারি আমানত এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে ভাগিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটছে। সমপ্রতি দেশের প্রথম প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার আমানত বেশি সুদে নিয়েছে দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংক। একইভাবে একটি ইসলামী ধারার ব্যাংক থেকে গত আগস্ট মাসে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার আমানত বের করে নিয়েছে অন্য কয়েকটি ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম ফোন ধরেননি।