ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ

ভারতে কথিত ৫৩ বাংলাদেশী আটক

ডেস্ক ::আগামী ৪ঠা জুলাই ভারতে রথযাত্রা। এ সময়ে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় স্পেশাল অপারেশন্স গ্রুপ (এসওজি) গুজরাটের আহমেদাবাদে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী বিরোধী অভিযান শুরু করেছে। তারা দাবি করছে, রোববার এ অভিযানে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন ৪৭ জন বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। দানিলিমদা, বিআরটিএস বাস স্ট্যান্ড, নারোদা পাতিয়া এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। ওদিকে একই দিনে আগ্রা রেলওয়ে স্টেশন থেকে আলাদা এক অভিযানে উত্তর প্রদেশ এন্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) আটক করেছে ৬ বাংলাদেশীকে। পুলিশ বলেছে, এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভুয়া আধার কার্ড ও রেশন কার্ড। ফলে সব মিলিয়ে রোববার ভারতে আটক করা হয়েছে কথিত ৫৩ বাংলাদেশী অভিবাসীকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসপি, এসওজি, বিসি সোলাঙ্কি বলেছেন, পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার জেআর মুথালিয়া ও সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডের নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচটি টিম গঠন করা হয়েছে। নিজেদের দেশে অপরাধ করে পালিয়ে ভারতে আসার সুযোগ নিয়ে থাকতে পারে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীরা অথবা তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর যোগসূত্র থাকতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যেসব বাংলাদেশী অভিবাসী অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে এসব টিম অভিযান চালাচ্ছে। সোলাঙ্কি বলেন, যেসব বাংলাদেশী অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে তারা ভারতীয় নাগরিকত্বের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন নি। তাদের কাছে কোনো বৈধ ভিসা নেই। তাদের অনেকেই স্বীকার করেছেন, কাজের সন্ধানে তারা ভারতে এসেছেন। তাদের বেশির ভাগই ছোটখাট কাজে যুক্ত। এমনকি ভিক্ষা পর্যন্ত করেন তারা।
এসওজি কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশী এসব অভিবাসীর পিছনের ইতিহাস চেক করে দেখা হচ্ছে যে, তারা কোনো ক্রিমিনাল কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত কিনা। আমরা এর আগে দেখেছি, বাংলাদেশে গুরুত্বর অপরাধ সংঘটিত করে এমন অনেক বাংলাদেশী অবৈধ উপায়ে ভারতে পালিয়ে এসেছেন। আগে যাদেরকে এভাবে আটক করা হয়েছে, তাদের অনেককে পরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত দেখা গেছে।
এসিপি সোলাঙ্কি বলেছেন, আটক এমন সব বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর আইনগত পদক্ষেপ শুরু করেছেন তারা। তবে অনেকেই এরই মধ্যে সীমান্ত গলিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন।

ওদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলেছে, আগ্রা রেলওয়ে স্টেশন থেকে যে ৬ বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছে তারা হলেন হাবিবুর রহমান, জাকির হোসেন ওরফে রুমি, মোহাম্মদ কাবিল, কামালুদ্দিন, তাইজুল ইসলাম ও লিটন বিশ্বাস। তাদেরকে আটক করে আগ্রায় স্থানীয় একটি আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদেরকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন এটিএস-এর আইজি অসীম কুমার অরুণ। তিনি বলেছেন, পুলিশ তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার জন্য রিমান্ড চাইবে। তিনি আরো বলেন, উত্তর প্রদেশ এটিএস কিছু তথ্য পেয়েছে যে, কিছু বাংলাদেশী অবৈধ উপায়ে উত্তর প্রদেশে অবস্থান করছেন। তারা অন্য বাংলাদেশীদের ডেকে ভুয়া ডকুমেন্ট বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে আধার কার্ড ও রেশন কার্ড। তারা পাসপোর্টও বানিয়ে দেয়।

অসীম কুমার অরুণ আরো বলেন, আটক এসব ব্যক্তি বাংলাদেশের অধিবাসী। তারা ভুয়া ডকুমেন্টের ওপর ভিত্তি করে বসবাস করছিলেন ভারতে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা বলেছে, তারা পাকিস্তান যেতে চেয়েছে। সম্প্রতি তারা রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর এবং পাঞ্জাবের আত্তারিতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গিয়েছিল। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রম করতে সক্ষম হয় নি। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, তারা পাঞ্জাব ও রাজস্থানও সফর করেছে।

এটিএসের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন আটক এসব ব্যক্তির কাছ থেকে ৪টি ইলেক্ট্রনি টেস্টার, সাতটি মোবাইল ফোন, ৬টি সিম কার্ড, মেমরি কার্ড, নগদ ৩৭৬৩৭ রুপি, টেলিফোন নম্বর সম্বলিত নোট উদ্ধার করেছে। এই নোটে রয়েছে পাকিস্তানি কিছু নম্বরও। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেখা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। তারপর অবস্থান করেছে তামিলনাড়ুর তিরপুর জেলায়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত লিটন বিশ্বাস ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তিদের সহায়তা করেছেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

ভারতে কথিত ৫৩ বাংলাদেশী আটক

আপডেট টাইম ০৪:১৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০১৯
ডেস্ক ::আগামী ৪ঠা জুলাই ভারতে রথযাত্রা। এ সময়ে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় স্পেশাল অপারেশন্স গ্রুপ (এসওজি) গুজরাটের আহমেদাবাদে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী বিরোধী অভিযান শুরু করেছে। তারা দাবি করছে, রোববার এ অভিযানে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন ৪৭ জন বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। দানিলিমদা, বিআরটিএস বাস স্ট্যান্ড, নারোদা পাতিয়া এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। ওদিকে একই দিনে আগ্রা রেলওয়ে স্টেশন থেকে আলাদা এক অভিযানে উত্তর প্রদেশ এন্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) আটক করেছে ৬ বাংলাদেশীকে। পুলিশ বলেছে, এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভুয়া আধার কার্ড ও রেশন কার্ড। ফলে সব মিলিয়ে রোববার ভারতে আটক করা হয়েছে কথিত ৫৩ বাংলাদেশী অভিবাসীকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসপি, এসওজি, বিসি সোলাঙ্কি বলেছেন, পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার জেআর মুথালিয়া ও সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডের নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচটি টিম গঠন করা হয়েছে। নিজেদের দেশে অপরাধ করে পালিয়ে ভারতে আসার সুযোগ নিয়ে থাকতে পারে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীরা অথবা তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর যোগসূত্র থাকতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যেসব বাংলাদেশী অভিবাসী অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে এসব টিম অভিযান চালাচ্ছে। সোলাঙ্কি বলেন, যেসব বাংলাদেশী অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে তারা ভারতীয় নাগরিকত্বের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন নি। তাদের কাছে কোনো বৈধ ভিসা নেই। তাদের অনেকেই স্বীকার করেছেন, কাজের সন্ধানে তারা ভারতে এসেছেন। তাদের বেশির ভাগই ছোটখাট কাজে যুক্ত। এমনকি ভিক্ষা পর্যন্ত করেন তারা।
এসওজি কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশী এসব অভিবাসীর পিছনের ইতিহাস চেক করে দেখা হচ্ছে যে, তারা কোনো ক্রিমিনাল কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত কিনা। আমরা এর আগে দেখেছি, বাংলাদেশে গুরুত্বর অপরাধ সংঘটিত করে এমন অনেক বাংলাদেশী অবৈধ উপায়ে ভারতে পালিয়ে এসেছেন। আগে যাদেরকে এভাবে আটক করা হয়েছে, তাদের অনেককে পরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত দেখা গেছে।
এসিপি সোলাঙ্কি বলেছেন, আটক এমন সব বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর আইনগত পদক্ষেপ শুরু করেছেন তারা। তবে অনেকেই এরই মধ্যে সীমান্ত গলিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন।

ওদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলেছে, আগ্রা রেলওয়ে স্টেশন থেকে যে ৬ বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছে তারা হলেন হাবিবুর রহমান, জাকির হোসেন ওরফে রুমি, মোহাম্মদ কাবিল, কামালুদ্দিন, তাইজুল ইসলাম ও লিটন বিশ্বাস। তাদেরকে আটক করে আগ্রায় স্থানীয় একটি আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদেরকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন এটিএস-এর আইজি অসীম কুমার অরুণ। তিনি বলেছেন, পুলিশ তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার জন্য রিমান্ড চাইবে। তিনি আরো বলেন, উত্তর প্রদেশ এটিএস কিছু তথ্য পেয়েছে যে, কিছু বাংলাদেশী অবৈধ উপায়ে উত্তর প্রদেশে অবস্থান করছেন। তারা অন্য বাংলাদেশীদের ডেকে ভুয়া ডকুমেন্ট বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে আধার কার্ড ও রেশন কার্ড। তারা পাসপোর্টও বানিয়ে দেয়।

অসীম কুমার অরুণ আরো বলেন, আটক এসব ব্যক্তি বাংলাদেশের অধিবাসী। তারা ভুয়া ডকুমেন্টের ওপর ভিত্তি করে বসবাস করছিলেন ভারতে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা বলেছে, তারা পাকিস্তান যেতে চেয়েছে। সম্প্রতি তারা রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর এবং পাঞ্জাবের আত্তারিতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গিয়েছিল। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রম করতে সক্ষম হয় নি। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, তারা পাঞ্জাব ও রাজস্থানও সফর করেছে।

এটিএসের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন আটক এসব ব্যক্তির কাছ থেকে ৪টি ইলেক্ট্রনি টেস্টার, সাতটি মোবাইল ফোন, ৬টি সিম কার্ড, মেমরি কার্ড, নগদ ৩৭৬৩৭ রুপি, টেলিফোন নম্বর সম্বলিত নোট উদ্ধার করেছে। এই নোটে রয়েছে পাকিস্তানি কিছু নম্বরও। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেখা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। তারপর অবস্থান করেছে তামিলনাড়ুর তিরপুর জেলায়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত লিটন বিশ্বাস ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তিদের সহায়তা করেছেন।