ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ২০২০ অর্থবছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সিনেট পাস করেছে ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট বা এনডিএএ। এতেই রয়েছে আইনি ওই বিধানটি। এতে ভারত মহাসাগর এলাকায় মানবিক সহযোগিতা, সন্ত্রাস মোকাবিলা, দস্যুতা মোকাবিলা, নৌসীমানায় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সংশোধিত বিধান রয়েছে।
সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির অধীনস্ত সাউথ এশিয়া রিসার্স সেন্টারের বিশেষজ্ঞ সান শিহাই বলেছেন, চীনের সঙ্গে সমতা আনতে ভারতকে কাছে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভারত নির্ভরশীল হবে বলে মনে হয় না। কারণ, ভারত চাইছে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর মধ্যে নিজেদের স্বতন্ত্র ভূমিকা।
ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে কংগ্রেসম্যান জো উইলসন, অমি বেড়া, টেড ইয়োহো, জর্জ হোল্ডিং, এড কেস এবং রাজা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে মার্কিন কংগ্রেসে ইন্ডিয়া ককাসের কো-চেয়ার ব্রাড শেরম্যান একই রকম একটি আইনি প্রস্তাব এনেছেন। এতেও যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। ২৯ জুলাই এক মাসের জন্য মুলতবি হয়ে যাওয়ার আগেই জুলাইয়ের কোনো এক সময় তা কংগ্রেসে তোলা হবে বলে আশা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টার জন্য এক বিবৃতিতে দু’জন সিনেটরের প্রশংসা করেছে হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন।
ওদিকে বুধবার দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস রিপোর্টে বলেছে, বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই গতিবিধি প্রতীকী, যা ইঙ্গিত দেয় যে, ভারতের ওপর তাদের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চায়না ইন্সটিটিউটস অব কনটেম্পোরারি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষণার একজন বিশেষজ্ঞ ফু সিয়াওকিয়াং। তিনি বুধবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই এগিয়ে আসাতে ভারত সুবিধা পাবে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে। তবে তিনি এটাও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম ভারত বর্ধিতহারে কিনবে বলে মনে হয় না। কারণ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমতা রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের সামরিক সহযোগিতা বিদ্যমান ভারতের। তারা রাশিয়ার অস্ত্রের একটি বড় ক্রেতাও।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বিস্তৃত আলোচনার পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে বিমান প্রতিরক্ষা বিষয়ক একটি চুক্তি হয়। এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিষয়ক সর্বশেষ স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিটি ৫০০ কোটি ডলারের। ফু সিয়াওকিয়াং বলেন, ভারতকে যদিও যুক্তরাষ্ট্র একটি মিত্র বলে বিবেচনা করে, তবু যুক্তরাষ্ট্রের হাতের খেলার পুতুল হবে ভারত- এমন চিন্তাকে প্রশ্রয় দেবে না ভারত। বরং তারা ওয়াশিংটন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থাগত সুবিধা নিতে চাইবে। এছাড়া বাণিজ্যে দুটি দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হওয়ার শিডিউল রয়েছে।