ঢাকা ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ

লকডাউন কতদিন প্রয়োজন

আন্তজাতিক ডেস্ক::বিশ্বের নানা দেশ এখন করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মরিয়া হয়ে লড়ছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশই প্রায় পুরো দেশ লকডাউন করে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও গত ২৬ মার্চ থেকে কার্যত লকডাউন শুরু হয়েছে, যা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় দীর্ঘ ১৭ দিন চলবে। এর পরেও তা বৃদ্ধি করা হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব জুড়েই আলোচিত হচ্ছে লকডাউন কতদিন প্রয়োজন? কিংবা কতদিন লকডাউন চললে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ করা সম্ভব হবে?

কোনো কোনো গবেষক বলছেন, লকডাউন তিন সপ্তাহের বেশি হওয়া উচিত নয়। আবার কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, লকডাউন চলমান থাকা অবস্থায় কিছু কিছু চলাচল শিথিল করা যেতে পারে। এদিকে আমেরিকার একদল গবেষক বলছেন, লকডাউন নির্দিষ্ট দেশটিতে সংক্রমণের মাত্রাভেদে তিন সপ্তাহ থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত করা যেতে পারে।

এদিকে ভারতের গবেষক বলছেন, লকডাউন তিন সপ্তাহের বেশি করা উচিত নয়। এরপর সীমিত আকারে চলাচল চালু করা প্রয়োজন। তা না হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে রাষ্ট্র। এদিকে কোভিড-১৯-এর উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে লকডাউন উঠে যাচ্ছে আসছে ৮ এপ্রিল, প্রায় ৭২ দিন পর। গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই উহানকে সারা বিশ্ব থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর উহান শহর থেকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। তিন মাসের মধ্যে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। চীনে মহামারি রূপ নেওয়ার পর ভাইরাসটি তাণ্ডব চালাতে শুরু করে ইউরোপ জুড়ে। এরপর ভারত, বাংলাদেশেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ সীমিত আকারে দেখা যাচ্ছে।

এই লকডাউন আর কতদিন চলবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আমেরিকার একদল গবেষক বলছেন, কোনো দেশ যদি তিন সপ্তাহ কঠোর লকডাউন মেনে চলে, তবে এই মহামারি কিছুটা সংযত করা সম্ভব। আর চার সপ্তাহ, মানে এক মাস লকডাউন চালিয়ে গেলে এই মহামারি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে সবচেয়ে ভালো হয় ছয় সপ্তাহ, মানে ৪২ দিন লকডাউন হলে। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ছয় সপ্তাহ লকডাউন হলে কোনো দেশ পুরোপুরি এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারে। বিশ্বের ৩৬টি দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের ওপর গবেষণা করেছেন সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্শাল স্কুল অব বিজনেসের একদল গবেষক। এ গবেষণা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে হংকংয়ের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

এই গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত হয় ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে হবে, অথবা কয়েক মাসব্যাপী লকডাউন ও ঘরে থাকার নির্দেশ মেনে চলতে হবে। ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা ব্যয়বহুল হওয়ায় লকডাউনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আশার বাণী শুনিয়েছেন ভারতের পদ্মভূষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক জি পি নাগেশ্বর রেড্ডি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই চিকিৎসক ভারতের লকডাউন প্রসঙ্গে বলেছেন, তিন সপ্তাহের বেশি দেশব্যাপী লকডাউনের পর আর তা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। রেড্ডি বলেন, লকডাউন দুইভাবে করা হচ্ছে—প্রথমত এলাকা লকডাউন, দ্বিতীয়ত পুরোপুরি লকডাউন।

আরেকটি পন্থা হলো সবকিছু খোলা রেখে সবাইকে টেস্ট করানো, যেটা দক্ষিণ কোরিয়া করেছে। সেখানে সবকিছু খোলা আছে, কিন্তু তারা ব্যাপকভাবে টেস্ট করেছে। টেস্টে যাদের পজিটিভ পাওয়া গেছে, তাদের আলাদা করে ফেলা হয়েছে। এর অর্থ হলো, রেড জোন বা সিলেকটিভ জোন। কিন্তু ভারতে অধিক জনসংখ্যার কারণে ব্যাপক হারে টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দুই-তিন সপ্তাহের লকডাউন প্রয়োজন। এরপর জনগোষ্ঠীর এক নির্দিষ্ট অংশ, যাদের বয়স বেশি এবং যাদের শারীরিক অন্য সমস্যা আছে, তারা ঝুঁকিপূর্ণ।

তাই এসব মানুষের টেস্ট করতে হবে, তাদের আলাদা রাখতে হবে। অপেক্ষাকৃত কম বয়স যাদের এবং যাদের অন্য সমস্যা নেই, তাদের মুক্তভাবে চলতে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সবই করতে হবে নির্দিষ্ট মেয়াদের লকডাউন শেষ হওয়ার পর। তবে দীর্ঘ সময় লকডাউনের বিপক্ষে তিনি। তিন সপ্তাহের বেশি লকডাউন হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন রেড্ডি।

 

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

লকডাউন কতদিন প্রয়োজন

আপডেট টাইম ০৪:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০

আন্তজাতিক ডেস্ক::বিশ্বের নানা দেশ এখন করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মরিয়া হয়ে লড়ছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশই প্রায় পুরো দেশ লকডাউন করে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও গত ২৬ মার্চ থেকে কার্যত লকডাউন শুরু হয়েছে, যা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় দীর্ঘ ১৭ দিন চলবে। এর পরেও তা বৃদ্ধি করা হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব জুড়েই আলোচিত হচ্ছে লকডাউন কতদিন প্রয়োজন? কিংবা কতদিন লকডাউন চললে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ করা সম্ভব হবে?

কোনো কোনো গবেষক বলছেন, লকডাউন তিন সপ্তাহের বেশি হওয়া উচিত নয়। আবার কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, লকডাউন চলমান থাকা অবস্থায় কিছু কিছু চলাচল শিথিল করা যেতে পারে। এদিকে আমেরিকার একদল গবেষক বলছেন, লকডাউন নির্দিষ্ট দেশটিতে সংক্রমণের মাত্রাভেদে তিন সপ্তাহ থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত করা যেতে পারে।

এদিকে ভারতের গবেষক বলছেন, লকডাউন তিন সপ্তাহের বেশি করা উচিত নয়। এরপর সীমিত আকারে চলাচল চালু করা প্রয়োজন। তা না হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে রাষ্ট্র। এদিকে কোভিড-১৯-এর উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে লকডাউন উঠে যাচ্ছে আসছে ৮ এপ্রিল, প্রায় ৭২ দিন পর। গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই উহানকে সারা বিশ্ব থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর উহান শহর থেকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। তিন মাসের মধ্যে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। চীনে মহামারি রূপ নেওয়ার পর ভাইরাসটি তাণ্ডব চালাতে শুরু করে ইউরোপ জুড়ে। এরপর ভারত, বাংলাদেশেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ সীমিত আকারে দেখা যাচ্ছে।

এই লকডাউন আর কতদিন চলবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আমেরিকার একদল গবেষক বলছেন, কোনো দেশ যদি তিন সপ্তাহ কঠোর লকডাউন মেনে চলে, তবে এই মহামারি কিছুটা সংযত করা সম্ভব। আর চার সপ্তাহ, মানে এক মাস লকডাউন চালিয়ে গেলে এই মহামারি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে সবচেয়ে ভালো হয় ছয় সপ্তাহ, মানে ৪২ দিন লকডাউন হলে। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ছয় সপ্তাহ লকডাউন হলে কোনো দেশ পুরোপুরি এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারে। বিশ্বের ৩৬টি দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের ওপর গবেষণা করেছেন সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্শাল স্কুল অব বিজনেসের একদল গবেষক। এ গবেষণা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে হংকংয়ের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

এই গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত হয় ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে হবে, অথবা কয়েক মাসব্যাপী লকডাউন ও ঘরে থাকার নির্দেশ মেনে চলতে হবে। ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা ব্যয়বহুল হওয়ায় লকডাউনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আশার বাণী শুনিয়েছেন ভারতের পদ্মভূষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক জি পি নাগেশ্বর রেড্ডি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই চিকিৎসক ভারতের লকডাউন প্রসঙ্গে বলেছেন, তিন সপ্তাহের বেশি দেশব্যাপী লকডাউনের পর আর তা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। রেড্ডি বলেন, লকডাউন দুইভাবে করা হচ্ছে—প্রথমত এলাকা লকডাউন, দ্বিতীয়ত পুরোপুরি লকডাউন।

আরেকটি পন্থা হলো সবকিছু খোলা রেখে সবাইকে টেস্ট করানো, যেটা দক্ষিণ কোরিয়া করেছে। সেখানে সবকিছু খোলা আছে, কিন্তু তারা ব্যাপকভাবে টেস্ট করেছে। টেস্টে যাদের পজিটিভ পাওয়া গেছে, তাদের আলাদা করে ফেলা হয়েছে। এর অর্থ হলো, রেড জোন বা সিলেকটিভ জোন। কিন্তু ভারতে অধিক জনসংখ্যার কারণে ব্যাপক হারে টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দুই-তিন সপ্তাহের লকডাউন প্রয়োজন। এরপর জনগোষ্ঠীর এক নির্দিষ্ট অংশ, যাদের বয়স বেশি এবং যাদের শারীরিক অন্য সমস্যা আছে, তারা ঝুঁকিপূর্ণ।

তাই এসব মানুষের টেস্ট করতে হবে, তাদের আলাদা রাখতে হবে। অপেক্ষাকৃত কম বয়স যাদের এবং যাদের অন্য সমস্যা নেই, তাদের মুক্তভাবে চলতে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সবই করতে হবে নির্দিষ্ট মেয়াদের লকডাউন শেষ হওয়ার পর। তবে দীর্ঘ সময় লকডাউনের বিপক্ষে তিনি। তিন সপ্তাহের বেশি লকডাউন হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন রেড্ডি।