ডেস্ক::জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শান্তিরক্ষী দিবসে ১২ রকমের স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির পোস্টাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের যৌথ উদ্যোগে এই ডাক টিকিট অবমুক্ত করা হয়।
ডাক টিকিটে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, মুজিববর্ষের লোগো এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ছবি। আরও আছে- জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিয়োজিত বাংলাদেশের দু’জন নারী হেলিকপ্টার পাইলটের আইকনিক প্রতিকৃতি।
শুক্রবার (২৯ মে) জাতিসংঘ সদর দফতরে শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ।
স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত প্রসঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, এটি জাতির পিতার শান্তির মতবাদের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিনম্র ও যথোপযুক্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি। যে শান্তির মতবাদের ভিত্তির ওপর গড়ে উঠেছে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। এটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং আমাদের বীর ও নিঃস্বার্থ শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মানের এক নিদর্শন।
তিনি বলেন, এই স্মারক ডাক টিকিট জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বছরব্যাপী উদ্যোগের অংশ বিশেষ। এটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সুদীর্ঘ ও গৌরবময় অংশগ্রহণেরও স্বীকৃতি। যার শিকড় প্রোথিত রয়েছে ১৯৭৪ সালে সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা প্রদত্ত ভাষণের কালজয়ী ঘোষণা- ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার’-এর মধ্যে এবং ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’–এই নীতি-আদর্শে।
যে সকল শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিতভাবে দায়িত্বপালন করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতিও বিনম্র শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ সময় ব্রু হেমলেটের অধীনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়। পরবর্তীতে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব ২০১৯ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী ৮৩ জন শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেলে ভূষিত করেন। যার মধ্যে বাংলাদেশের দু’জন আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষী রয়েছেন।
তারা হলেন- কনস্টেবল মোহাম্মদ ওমর ফারুক এবং সৈনিক আতিকুল ইসলাম।
এই স্মরণ ও পদক প্রদানের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাসহ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির একটি বার্তাও প্রদর্শন করা হয়।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৮ সালে। শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম দেশ বাংলাদেশের এক লাখ ৭০ হাজার ২২১ জন শান্তিরক্ষী ৪২টি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ৯টি মিশনে ৬ হাজার ৫৪৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন।