একজন দেশপ্রেমিক ডিসি! সাবাশ বাংলাদেশ
বিশেষ প্রতিবেদকঃ শিক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩৬০ কোটি টাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল করলেন চাঁদপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক (ডিসি) মিসেস অঞ্জনা খান মজলিশ।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ,
ডা: দীপু মনি, এম.পি, এম.বি.বি.এস. (ডিএমসি), এল.এল.বি. (এন ইউ), এল.এল.এম. ( লন্ডন), এম.পি.এইচ. (জন্স হপকিনস), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথমনারী শিক্ষা মন্ত্রী।
এদেশের মাটিতে ঐ পদে থেকে সাহসিকতা, সততা, দ্বায়িত্ববোধ, দেশপ্রেমের নতুন রেকর্ড।
মিসেস অজ্ঞনা খান মজলিস, আপনাকে স্যালুট!
আপনি দুনিয়া ও আখেরাতে আরো সম্মানিত হোন।
আপনার জন্য আল্লাহ পাক শ্রেষ্ঠতম ও সম্মানিত জায়গা সব সময়ই বরাদ্দ করুন।
আপনার জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে দোয়া।
শ্রদ্ধেয়া অন্জনা খান মজলিসের পরিচিতি: মিসেস অঞ্জনা খান মজলিস এর জন্মস্থান আনন্দপুর সাভারে। ২২তম বিসিএস প্রশাসন উত্তীর্ণ হয়ে কর্মজীবন শুরু করেন ১০ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে মানিকগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে। তিনি বিবাহিতা। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তিনি চাদপুরের জেলা প্রশাসক পদে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
ঘটনার বিবরনঃ
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে দিপু মনি পরিবারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের অভিযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কথা শুনেই পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে জমি কিনেছেন ডা: দিপু মনি। পরে এই জমি স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ গুন দামে অধিগ্রহণের দরপত্র দাখিল করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এনেছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গঠন করা তদন্ত কমিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমির সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১৫ নম্বর লক্ষ্মীপুর সাব রেজিস্টার অফিসের নির্ধারিত বাজার মূল্য অনুযায়ী নাল, বাড়ি/বাগান, পুকুর/ডোবা ও ভিটি শ্রেণির মূল্য পর্যায়ক্রমে ১৩ হাজার ৮০২, ২৩ হাজার ৯৬৬, ৩৮ হাজার ৯৫৬ এবং ৩৩ হাজার ২৯৪ ধরে প্রকল্প প্রাক্কলন দাঁড়ায় ১ শ’ ৯৩ কোটি ৯০ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৭ টাকা। কিন্তু দেখা যায়, সর্বশেষ নির্ধারিত মৌজা মূল্যের তুলনায় অধিগ্রহণের নিমিত্ত সংগৃহীত দরপত্র চরম অস্বাভাবিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর খসড়া আইন পাস হয় চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের। এর পরের বছর ৯ সেপ্টেম্বর সংসদে বিল পাস হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির। এ নিয়ে গেজেট প্রকাশ হয় সেবছর, অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিক্ষামন্ত্রীর জ্ঞাতসারে তার বড় ভাই জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ ২০২০ সালের জুন-জুলাই মাসের বিভিন্ন তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত এলাকার কয়েকটি মৌজায় জমি ৯৯ শতাংশ জমি কেনেন। একই বছরের ২১ জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক একর ৬১ শতাংশ জমি কেনেন ডা: দিপু মনির মামাতো ভাই মো: জাহিদুল ইসলাম। শিক্ষামন্ত্রীর একান্তজন সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সে বছর একই এলাকায় জমি কেনেন এক একর। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রীর একান্তজন লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান নিজের নামে এবং তার মেয়ে পিংকী ও ছেলে শহিন খানের নামে কয়েক একর জমি কেনেন সে বছরের ৮ জুন থেকে ১৪ জুলাই এর মধ্যে।
দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া আইন পাস হওয়ার কয়েক মাস পরেই পরিকল্পিতভাবে ওই এলাকার বিভিন্ন মৌজার নিজেদের নামে-বেনামে জমি কেনেন শিক্ষামন্ত্রী পরিবার- পরিজনরা। ভূমি অধিগ্রহণের দরপত্র আহ্বান করা হলে সেই জমিই দেখানো হয় বাজার মূল্যের ২০ গুন বেশি দামে। দরপত্রে ভূমি অধিগ্রহণের মূল্য অস্বাভাবিক দেখে তা অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য গত বছরের ২৪ অক্টোবর জেলা কানুনগো ও সার্ভেয়ারদের সমন্বয়ে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে গত বছরের (২০২১) পহেলা নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করে সেই কমিটি।
তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত দাগের জমিগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য ১ শ’ ৯৩ কোটি ৯০ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৭ টাকা থাকলেও দরপত্রে তা দেখানো হয় ৫ শ’ ৫৩ কোটি ৭ লাখ ৭ হাজার ২৯০ টাকা। যা বাজার মূল্যের ২০ গুন বেশি। তদন্ত কমিটির দাখিলকৃত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত দাগের ভূমি হস্তান্তর ছিল উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ শ’ ৫৯ কোটি ১৬ লাখ ৬১ হাজার ৭৮২ টাকা।
বর্তমান সময়ে দেশের স্বার্থে ডিসি পদে বহাল থেকে এমন সাহস দেখানো সম্ভবত বিগত ৫০ বছরে নজিরবিহীন।