অর্থনৈতিক রিপোর্টার::বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। আমদানি দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণে গত সোমবার ৩১ বিলিয়ন থেকে ৩০.৯৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমদানি বিল মেটাতে ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন প্রায় ৬ কোটি ডলার বিক্রি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মঙ্গলবার ব্যাংকগুলোর কাছে ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দিকে গত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ একসঙ্গে শত কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, এক বছর আগে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৪০৬ কোটি ডলার। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০.৯৩ বিলিয়ন ডলারে। গত মার্চের শেষে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১১৪ কোটি ডলার। গত এক মাসের হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ৮ কোটি ডলার। ধারণা করা হয়েছিল রোজা ও ঈদ উপলক্ষ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।এতে রিজার্ভও কিছুটা বাড়বে। কিন্তু এবার রোজা ও ঈদে রেমিট্যান্স প্রবাহ খুব বেশি বাড়েনি। একই সঙ্গে রপ্তানি আয়েও নেতিবাচক অবস্থা। এদিকে রোজা উপলক্ষ্যে আমদানি বেড়েছে। সব মিলে রিজার্ভ কমেছে।
এদিকে সদ্য বিদায়ী মাস এপ্রিলের শুরুতে আশা জাগিয়েছিল রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের পুরো সময়ে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার বা ১৮ হাজার ১৩ কোটি টাকার বেশি প্রবাসী আয় এসেছে। গত ২০২২ সালের একইমাস (এপ্রিল) এসেছিল ২০১ কোটি ডলার, সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ কোটি ডলার কম এসেছে। আবার চলতি বছরের মার্চ মাসে এসেছিল ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, সে হিসাবে গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলেও প্রায় ৩৩ কোটি ডলার কম এসেছে।
সূত্র জানায়, আগামী নভেম্বরে মিলবে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ। এর আগে চলতি মাসের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তার অর্থ বাবদ ৫০ কোটি ডলার মিলতে পারে। তখন রিজার্ভ কিছুটা বাড়বে।
গত মার্চে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় মিলে আয় হয়েছে ৬৬২ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আমদানি খাতে গত ফেব্রুয়ারিতে ব্যয় হয়েছে ৭৭২ কোটি ডলার। ঘাটতি হয়েছে ১১০ কোটি ডলার। এছাড়া বৈদেশিক ঋণের বকেয়া কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে এখন। এসব মিলে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বেড়েছে।