ঢাকা ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী

বাসস:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপশক্তির যে কোনো অপতৎপরতা ও ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার দেওয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্র-উন্নয়নবিরোধী চক্র এখনো দেশে-বিদেশে নানাভাবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্যস্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীচক্র তাকে পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। এ হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালি জাতির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতির পিতার হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করেন। সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেন। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দেন। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেন। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার এবং রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করেন। পরবর্তী অবৈধ সামরিক সরকার এবং বিএনপি-জামায়াত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে এ হত্যার বিচারকাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবার বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর রেখে যাওয়া অচলাবস্থা এবং বিশ্বমন্দা কাটিয়ে দেশকে দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করে।

তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। এ সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আশা করি, জাতির পিতার হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল, সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।

জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি এবং সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি-জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম ১১:৩৬:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

বাসস:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপশক্তির যে কোনো অপতৎপরতা ও ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার দেওয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্র-উন্নয়নবিরোধী চক্র এখনো দেশে-বিদেশে নানাভাবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্যস্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীচক্র তাকে পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। এ হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালি জাতির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতির পিতার হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করেন। সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেন। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দেন। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেন। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার এবং রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করেন। পরবর্তী অবৈধ সামরিক সরকার এবং বিএনপি-জামায়াত সরকারও একই পথ অনুসরণ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে এ হত্যার বিচারকাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবার বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর রেখে যাওয়া অচলাবস্থা এবং বিশ্বমন্দা কাটিয়ে দেশকে দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করে।

তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। এ সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আশা করি, জাতির পিতার হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল, সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।

জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি এবং সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি-জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।