জাকির মোস্তাফিজ মিলু , ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: শহরকে তিলোত্তমা নগরী হিসেবে সাজানো আর প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার জন্য চলছে সর্বত্র ব্যস্ততা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ঠাকুরগাঁও সফরকে কেন্দ্র করে জোর প্রস্তুতি চলছে। অফিস,আদালত,রাস্তাঘাট, রোড আইল্যান্ড,বড়মাঠ সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নতুন রুপে সাজানোর প্রক্রিয়া। সৌন্দর্য বাড়াতে চলছে চুনকাম ,রং সহ ধোয়া মোছার কাজ।
ঠাকুরগাঁওয়ের সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান- ঠাকুরগাঁও সার্কিট হাউস,এলজিইডি,সড়ক ভবন,পিটিআই,জেলা আনসার ভিডিপি,বিদ্যুৎ ভবন,গণপুর্ত ভবনসহ সকল প্রতিষ্ঠানে ঘষামাজা ও রংয়ের কাজ চলছে।শহরের রাস্তায় চলছে পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ। চলছে রোড ডিভাইডারে রং করার কাজ। যে দিক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে প্রবেশ করবেন সেদিকের ভাঙ্গাচুড়া রাস্তা ও ভবনের প্রাচীর মেরামতও চলছে জোরেসোরে।রাস্তার খালা খন্দ ভরাট করা হচ্ছে দ্রæতগতিতে।ঝিমিয়ে পরা ঠাকুরগাঁও যেন ২৯ মার্চকে কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।সবকিছু মিলে রংয়ের উন্নয়ন শুরু হয়েছে ব্যপকভাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৯ মার্চ বিকেল ৩ টায় জিলা স্কুল বড়মাঠের সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।তাঁর সমাবেশকে সফল করার জন্য চলছে রাজনৈতিক ভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি। সেখানে পাঁচ থেকে সাত লক্ষ মানুষের সমাগম করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ জেলা নেতৃবৃন্দ।সেজন্য ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়েও জনসংযোগ ,প্রচারণা ও মাইকিং চলছে।সকল প্রকার সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রাস্তায় রাস্তায় তোরণ নির্মানের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।জনসভায় জনসমুদ্র সৃষ্টির জন্য তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে ক্ষোভ হতাশা ভুলে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে।
১৭ বছর ৩ মাস পর ঠাকুরগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী আসছেন এ জন্য জেলার মানুষের দাবী দাওয়ার তালিকাটাও একটু বড়। ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী ,বন্ধ থাকা রেশম কারখানা চালু,বিমানবন্দর পুনরায় চালু করা, ঠাকুরগাও থেকে সরাসরি ঢাকা আন্ত:নগর ট্রেন চালু করা,পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ,ইপিজেড,রুহিয়া উপজেলা ঘোষনা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক প্রকল্প।
উল্লেখ্য,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর কেন্দ্র করে নানা প্রাপ্তি ও প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছে দলমত নির্বিশেষে ঠাকুরগাঁওয়ের সর্বস্তরের মানুষ।
ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জহুরুল ইসলাম জানান, ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও বিজিবি সেক্টর মাঠে হেলিকপ্টার যোগে অবতরণ করবেন। ৩টা পর্যন্ত কয়েকটি স্থাপনা উদ্বোধন ও উন্নয়ন কাজের ভিত্তি স্থাপন করবেন।
এরপর তিনি বড়মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওবাসীর ব্যাপক প্রত্যাশা।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। এ লক্ষ্যে প্রশাসন এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমন্বয় করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সামনে একটি তিলোত্তমা শহর তুলে ধরতে কাজ করছি।
পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার ব্যাপারে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।জনসভা স্থলের বিভিন্ন বাড়িতে কারা অবস্থান করছেন তাদের খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে।সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট।
ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জহিরুল ইসলাম জানান, ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও বিজিবি সেক্টর মাঠে হেলিকপ্টারে অবতরণ করবেন। ৩টা পর্যন্ত কয়েকটি স্থাপনা উদ্বোধন ও উন্নয়ন কাজের ভিত্তিস্থাপন করবেন।
এরপর তিনি ওই মাঠে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী বলেন, আমরা ১৭ বছর পর প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। জনসভায় প্রায় ১০ লাখ মানুষের সমাগমের জন্য নেতাকর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে।প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঠাকুরগাঁওবাসীর দাবি- ঠাকুরগাঁও-ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন চালু, ব্রিটিশ আমলের বিমান বন্দর চালু, কৃষি ভিত্তিক ইপিজেড চাই, একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপন।এছাড়াও বন্ধ থাকা রেশম কারখানাটি চালু ও যানজট নিরসনে বাইপাস সড়কের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হবে।