আশিক আহমেদ::পুলিশে বাহিনীটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) হঠাৎ করেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সংস্থাটির সদ্য বিদায়ী প্রধান শেখ হিমায়েত হোসেনকে ঘিরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সিআইডি, পুলিশ সদরদপ্তর ও গণমাধ্যমে গত কয়েক দিনে নানা ধরনের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। অতীতে এই সংস্থা বা সংস্থাপ্রধানকে নিয়ে এত ধরনের আলোচনা হয়নি।
হিমায়েত মুক্তিযোদ্ধা কিনা এ নিয়ে আছে ভিন্নমত। তার দাবি, তিনি অস্ত্র হাতে লড়েছেন। এ জন্য ভাতাও পান। লাল মুক্তিবার্তায় নাম রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০১০ ও ২০১৩ সালে যে গেজেট প্রকাশ হয়েছে সে অনুযায়ীও তিনি মুক্তিযোদ্ধা।
তবে গোল বেঁধেছে জন্ম তারিখ। শিক্ষা সনদ অনুযায়ী হিমায়েতের জন্ম ১৯৬০ সালের ৪ মে। সে হিসাবে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বয়স দাঁড়ায় ১১ বছর ৬ মাস ২৬ দিন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে নীতিমালা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বয়স ছিল কমপক্ষে সাড়ে ১২ বছর, তাদেরই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ধরা হবে। এই বিবেচনায় বাদ পড়ে যাচ্ছেন হিমায়েত।
১৯৭১ সালে হিমায়েতের বয়স কম থাকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় তার মুক্তিযোদ্ধার দাবি নাকচ করে দিয়েছে। যে কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে স্বাভাবিক অবসরে পাঠিয়েছে। প্রজ্ঞাপনে ৩ মে থেকে তার অবসর কার্যকর বলা হলেও তিনি ৮ মে পর্যন্ত অফিস করেছেন। ৩০ মে তাকে পুলিশ অধিদপ্তরে বদলি করা হলেও তিনি যাননি।
অবসরে যাওয়ার পরও গত ১২ মে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (প্রশাসন) নাছির উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে হিমায়েতকে ট্যুর/ ট্রেনিং/ছুটি/বদলি দেখিয়ে সাময়িক অনুপস্থিতি দেখানো হয়েছে। তার অবর্তমানে সিআইডির ডিআইজি (এইচআরএম) মাহবুব মহসিনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে পুলিশের মধ্যেই সিআইডি এখন নানা কারণে আলোচনায় আসছে।
এ ছাড়া সিআইডি প্রধানের শূন্য পদে কে আসছেন, এ নিয়ে আছে নানা আলোচনা। পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন সূত্র ঢাকা টাইমসকে জানায়, পরবর্তী সিআইডিপ্রধান হিসেবে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ইকবাল বাহার বেশ ভালোভাবেই আলোচনায় আছেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ সদরদপ্তরে টেলিকম অ্যান্ড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট (টিঅ্যান্ডআইএম) বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন ইকবাল বাহার। গত ২৬ এপ্রিল তাকে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (টিঅ্যান্ডআইএম) হিসেবে পদায়ন করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল তাকে সিএমপির কমিশনার করা হয়।
১৯৮৯ সালে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়া ওই কর্মকর্তা সিএমপি কমিশনার হওয়ার আগে রাজশাহী পুলিশের ডিআইজি ছিলেন। এর আগে তিনি পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি প্রশাসন, টেলিকম ও রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও ঢাকা ও যশোর জেলার পুলিশ সুপারও ছিলেন ইকবাল বাহার। তিনি একজন কৃষিবিদও বটে।
বাহারের জন্ম ১৯৬১ সালের ৩১ ডিসেম্বর। গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার সদর উপজেলায়।