বিবিসির খবরে বলা হয়, গত জানুয়ারির পর এটাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হিসেবে ধরা হচ্ছে। দুই পক্ষই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদ্বয়ের ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
আল জাজিরা জানায়, বৈঠকে জো বাইডেন দুই দেশের মধ্যে অধিকতর উন্নত ও আরও বেশি ‘সততার’ মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। হং কং ও জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন ইস্যু নিয়ে সম্প্রতি চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব বেড়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, বৈঠকের শুরুতে দুই নেতাই প্রাথমিক বক্তব্য জানান। তাদের দু’জনের কথাতেই সম্পর্কের উন্নতির বিষয়টি উঠে এসেছে। এরপর তারা একান্ত আলোচনায় ঢুকে পড়েন।
হোয়াইট সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, দীর্ঘ বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে এদিনের বৈঠকে তাইওয়ান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কোভিডকালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি চীনের বিরুদ্ধে সরব হন। কোভিডের জন্যেও চীনকে দায়ী করেন। এরপর জো বাইডেন ক্ষমতায় এলেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়নি।
সম্প্রতি গ্লাসগোয় জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত হননি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন বাইডেন। এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের ভার্চুয়াল বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠকের শুরুতেই প্রাথমিক প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন দুই প্রেসিডেন্ট। শি জিনপিং বলেছেন, পুরনো বন্ধুর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পেরে তিনি খুশি। বস্তুত, বাইডেন যখন ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন, শি জিনপিংও তখন চীনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন। দুইজন একসঙ্গে সফরও করেছেন। ফলে দু’জনের মধ্যে পুরনো সম্পর্ক আছে।
শি জিনপিংয়ের বক্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড মোকাবিলার জন্য দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে বাইডেন বলেছেন, বিশ্ব রাজনীতির কাছে দায়বদ্ধ থাকার জন্য দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য কমনসেন্স গার্ডরেল তৈরি করা প্রয়োজন। বাইডেনের বক্তব্য, সংকীর্ণ বিতর্কের ঊর্ধ্বে ওঠার মানসিকতাই হলো কমনসেন্স গার্ডরেল।
সম্প্রতি তাইওয়ান নিয়েও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বিতর্ক শুরু হয়েছে। তাইওয়ানকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব।
অন্যদিকে চীন তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে মনে করে। তাইওয়ানের আকাশে একাধিকবার চীন যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে, যা নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে।