ঢাকা ০৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

৩০ ভাগ শিক্ষার্থী আসবে উপবৃত্তির আওতায়

>> প্রণীত হচ্ছে সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমালা
>> প্রতি বছর ব্যয় হবে ২২৬৭ কোটি টাকা

সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, অতি দরিদ্র, বিদ্যালয়বিমুখ ও প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়েদের মাঝে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও আকর্ষণীয় করতে এবং সবার জন্য সমতাভিত্তিক হিসেবে এটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমালা’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এ নীতিমালার আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ‘দারিদ্র্যের’ ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।

এ প্রকল্পে সরকারের বছরে খরচ হবে দুই হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নিতীমালা চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থ সচিবকে লেখা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যামান উপবৃত্তির হার এবং শিক্ষার্থী নির্বাচনে পার্থক্য রয়েছে। সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) অনুসৃত পিএমটি পদ্ধতি এবং মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি, দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্প এসইএসপি এবং উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্প এইচএসএসপি অনুসৃত ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।

এসব প্রকল্পে উপবৃত্তির হার সমন্বিত করে ‘সমন্বিত উপবৃত্তির হার’ এবং ‘শিক্ষার্থী নির্বাচন’র বিষয় গত ১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চূড়ান্ত করা হয়। সভায় দারিদ্র্যের ভিত্তিতে মোট শিক্ষার্থীর ৩০ শতাংশকে উপবৃত্তির আওতাভুক্তের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

সভায় সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপপ) যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক মো. আবু ছাইদ শেখ বলেন, ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি বিতরণ করা হলে বছরে সরকারের খরচ হবে দুই হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। তিনি বলেন, ছেলে বা মেয়ে শিক্ষার্থী নির্বিশেষে নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণ করে দারিদ্র্যের ভিত্তিতে সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে।
সভায় সমন্বিত উপবৃত্তির শ্রেণিভিত্তিক হার নির্ধারণ করা হয়। সেগুলো হলো- ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য মাসিক উপবৃত্তি ২৫০ টাকা এবং টিউশন ফি ৩৫ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন তিন হাজার ৪২০ টাকা।

দশম শ্রেণির জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৪০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৫০ টাকা। এর সঙ্গে বার্ষিক পরীক্ষার ফি হিসেবে দেয়া হবে এক হাজার টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন ছয় হাজার ৪০০ টাকা।

একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৮০ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার বই কেনার জন্য দেয়া হবে এক হাজার ৫০০ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন আট হাজার ৪৬০ টাকা।

একাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৬৫ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার বই কেনার জন্য দেয়া হবে এক হাজার টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে একাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন সাত হাজার ৭৮০ টাকা।

দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৮০ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার পরীক্ষার ফি বাবদ দেয়া হবে এক হাজার ৫০০ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন আট হাজার ৪৬০ টাকা।

দ্বাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৬৫ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার পরীক্ষার ফি বাবদ দেয়া হবে এক হাজার ২০০ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে দ্বাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন সাত হাজার ৯৮০ টাকা।

উপবৃত্তিভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে হালনাগাদকৃত নির্ণায়ক ব্যবহৃত হবে। যার ভিত্তিতে আবেদনপত্র তৈরি হবে। এক্ষেত্রে হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস), ২০১৬ এর দারিদ্র্য নির্ধারক মানদণ্ড অনুযায়ী নতুন নির্ণায়ক প্রণয়ন করা হবে।

শ্রেণি-শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানের তত্ত্বাবধানে শ্রেণিকক্ষে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা আবেদন ফরম পূরণ করবে। স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করে গঠিত একাধিক কমিটি পূরণকৃত আবেদনপত্রসমূহ বাছাই করে অনলাইনে তথ্য প্রক্রিয়ার জন্য প্রেরণ করবে। তথ্য প্রক্রিয়াকালে নির্ধারিত সফটওয়্যার ব্যবহার করে উপবৃত্তিধারী নির্বাচন চূড়ান্ত হবে। এ প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনে দরিদ্র ছাত্রী বা ছাত্রের সংখ্য কম বা বেশি করা যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপপ) যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবু ছাইদ শেখ জাগো নিউজকে বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বর্তামনে উপবৃত্তি দেয়া হয়। এতে উপবৃত্তির হার এবং শিক্ষার্থী নির্বাচনে পার্থক্য থাকায় বেশকিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যা কাটানোর জন্য আমরা একটি ‘সমন্বিত উপবৃত্তি’ পদ্ধতি প্রণয়নের কাজ করছি।

তিনি বলেন, ‘এটি বাস্তবায়িত হলে অভিন্ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী নির্বাচন ও উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।’

‘ইতোমধ্যে এ বিষয়ে এক খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলে এটি বাস্তবায়ন হবে’- যোগ করেন তিনি।

সূত্র জানায়, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে ভিন্ন চারটি প্রকল্পের অধীনে উপবৃত্তির সুবিধা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পের কারণে উপবৃত্তি বণ্টনে চলে আসছে জটিলতা। অপরদিকে উপকারভোগীদের নির্বাচন নিয়ে এক প্রকল্পের মানদণ্ডের সঙ্গে অন্যটির মিল না থাকায় তা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় সংশ্লিষ্টদের। এমনকি এলাকাভেদে একই শ্রেণির শিক্ষার্থী পেয়ে থাকেন ভিন্ন হারে উপবৃত্তি। তাই উপকারভোগী নির্বাচনে অনিয়ম, আলাদা হারে অর্থ প্রদানসহ নানা বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটিয়ে চারটির পরিবর্তে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সব শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের সমতার ভিত্তিতে উপবৃত্তি দেয়ার জন্য সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমাল প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ

৩০ ভাগ শিক্ষার্থী আসবে উপবৃত্তির আওতায়

আপডেট টাইম ১২:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০১৯

>> প্রণীত হচ্ছে সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমালা
>> প্রতি বছর ব্যয় হবে ২২৬৭ কোটি টাকা

সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, অতি দরিদ্র, বিদ্যালয়বিমুখ ও প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়েদের মাঝে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও আকর্ষণীয় করতে এবং সবার জন্য সমতাভিত্তিক হিসেবে এটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমালা’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এ নীতিমালার আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ‘দারিদ্র্যের’ ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।

এ প্রকল্পে সরকারের বছরে খরচ হবে দুই হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নিতীমালা চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থ সচিবকে লেখা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যামান উপবৃত্তির হার এবং শিক্ষার্থী নির্বাচনে পার্থক্য রয়েছে। সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) অনুসৃত পিএমটি পদ্ধতি এবং মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি, দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্প এসইএসপি এবং উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্প এইচএসএসপি অনুসৃত ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।

এসব প্রকল্পে উপবৃত্তির হার সমন্বিত করে ‘সমন্বিত উপবৃত্তির হার’ এবং ‘শিক্ষার্থী নির্বাচন’র বিষয় গত ১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চূড়ান্ত করা হয়। সভায় দারিদ্র্যের ভিত্তিতে মোট শিক্ষার্থীর ৩০ শতাংশকে উপবৃত্তির আওতাভুক্তের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

সভায় সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপপ) যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক মো. আবু ছাইদ শেখ বলেন, ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি বিতরণ করা হলে বছরে সরকারের খরচ হবে দুই হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। তিনি বলেন, ছেলে বা মেয়ে শিক্ষার্থী নির্বিশেষে নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণ করে দারিদ্র্যের ভিত্তিতে সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে।
সভায় সমন্বিত উপবৃত্তির শ্রেণিভিত্তিক হার নির্ধারণ করা হয়। সেগুলো হলো- ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য মাসিক উপবৃত্তি ২৫০ টাকা এবং টিউশন ফি ৩৫ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন তিন হাজার ৪২০ টাকা।

দশম শ্রেণির জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৪০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৫০ টাকা। এর সঙ্গে বার্ষিক পরীক্ষার ফি হিসেবে দেয়া হবে এক হাজার টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন ছয় হাজার ৪০০ টাকা।

একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৮০ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার বই কেনার জন্য দেয়া হবে এক হাজার ৫০০ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন আট হাজার ৪৬০ টাকা।

একাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৬৫ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার বই কেনার জন্য দেয়া হবে এক হাজার টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে একাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন সাত হাজার ৭৮০ টাকা।

দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৮০ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার পরীক্ষার ফি বাবদ দেয়া হবে এক হাজার ৫০০ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন আট হাজার ৪৬০ টাকা।

দ্বাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের জন্য মাসিক উপবৃত্তি ৫০০ টাকা এবং টিউশন ফি ৬৫ টাকা। এর সঙ্গে বছরে একবার পরীক্ষার ফি বাবদ দেয়া হবে এক হাজার ২০০ টাকা। প্রস্তাবিত উপবৃত্তির হারে দ্বাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিভাগের এক শিক্ষার্থী বছরে পাবেন সাত হাজার ৯৮০ টাকা।

উপবৃত্তিভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে হালনাগাদকৃত নির্ণায়ক ব্যবহৃত হবে। যার ভিত্তিতে আবেদনপত্র তৈরি হবে। এক্ষেত্রে হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস), ২০১৬ এর দারিদ্র্য নির্ধারক মানদণ্ড অনুযায়ী নতুন নির্ণায়ক প্রণয়ন করা হবে।

শ্রেণি-শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানের তত্ত্বাবধানে শ্রেণিকক্ষে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা আবেদন ফরম পূরণ করবে। স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করে গঠিত একাধিক কমিটি পূরণকৃত আবেদনপত্রসমূহ বাছাই করে অনলাইনে তথ্য প্রক্রিয়ার জন্য প্রেরণ করবে। তথ্য প্রক্রিয়াকালে নির্ধারিত সফটওয়্যার ব্যবহার করে উপবৃত্তিধারী নির্বাচন চূড়ান্ত হবে। এ প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনে দরিদ্র ছাত্রী বা ছাত্রের সংখ্য কম বা বেশি করা যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপপ) যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবু ছাইদ শেখ জাগো নিউজকে বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বর্তামনে উপবৃত্তি দেয়া হয়। এতে উপবৃত্তির হার এবং শিক্ষার্থী নির্বাচনে পার্থক্য থাকায় বেশকিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যা কাটানোর জন্য আমরা একটি ‘সমন্বিত উপবৃত্তি’ পদ্ধতি প্রণয়নের কাজ করছি।

তিনি বলেন, ‘এটি বাস্তবায়িত হলে অভিন্ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী নির্বাচন ও উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।’

‘ইতোমধ্যে এ বিষয়ে এক খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলে এটি বাস্তবায়ন হবে’- যোগ করেন তিনি।

সূত্র জানায়, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে ভিন্ন চারটি প্রকল্পের অধীনে উপবৃত্তির সুবিধা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পের কারণে উপবৃত্তি বণ্টনে চলে আসছে জটিলতা। অপরদিকে উপকারভোগীদের নির্বাচন নিয়ে এক প্রকল্পের মানদণ্ডের সঙ্গে অন্যটির মিল না থাকায় তা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় সংশ্লিষ্টদের। এমনকি এলাকাভেদে একই শ্রেণির শিক্ষার্থী পেয়ে থাকেন ভিন্ন হারে উপবৃত্তি। তাই উপকারভোগী নির্বাচনে অনিয়ম, আলাদা হারে অর্থ প্রদানসহ নানা বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটিয়ে চারটির পরিবর্তে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সব শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের সমতার ভিত্তিতে উপবৃত্তি দেয়ার জন্য সমন্বিত উপবৃত্তি নীতিমাল প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়।