জাকির হোসেন,ঠাকুরগাঁও:: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে কোনো রকম তদারকি ছাড়াই চলছে মাংসের বাজার। এ সুযোগে মাংস ব্যবসায়িরা রোগা, দুর্বল গরু,মহিষ ছাগল জবাই করছেন। ক্রেতাদের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন দাম নির্ধারণ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছেন, আশপাশের উপজেলার বাজার অনুযায়ী এখানে গরুর মাংসের কেজি ৫০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার সকালে পীরগঞ্জ পৌর শহরের কলেজ হাটে গরুর মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি মাংস ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। অনেক মাংসের দোকানে মূল্য তালিকা নেই। দুই-একটা দোকানে মূল্য তালিকা থাকলেও নিচ্ছেন বেশি দামে।
প্রশাসনের তদারকি না থাকায় এমন অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান কয়েকজন মাংস কিনতে আসা কয়েকজন ব্যক্তি। মাংস কিনতে আসা বথপালিগাঁও গ্রামের ফাইদুল, সেনুয়া গ্রামের বাধন, ষ্টেশন এলাকার অনিক বলেন, রমজান মাসের আগে যে গরুর মাংস তারা ৪৫০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন এখন তা কিনতে হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকায়। ছাগলের মাংস কিনতে হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দামে। এবার পীরগঞ্জে বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকার কারণে আমাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে।
গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাংসের কোয়ালিটি দেখে এর দাম কম নির্ধারণ করা হচ্ছে। তবে ভাল গরুর মাংসের দাম একটু বেশি তো হবেই। দুর্বল বুড়া গরুর মাংসের দাম একটু কম। তাছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে গরুর মাংসের দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। সে জন্য আমরা যার কাছে যেমন পারছি তেমন দামে মাংস বিক্রি করছি। সরকারি নিয়ম হচ্ছে স্যানেটারি ইন্সপেক্টরের উপস্থিতিতে ডাক্তারি পরীক্ষা করে পশু জবাই করার নিয়ম। কিন্তু নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
রোগা, দুর্বল এমন গরু ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে অবাধে। অনেক সময় কুকুর কামড়ানো গরু ছাগলও জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। পৌরসভার স্যানিটারী ইন্সপেক্টর গরু জবাইয়ের সময় উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি মাঝে মাঝে অনুপস্থিতসথাকেন এবং জবাইকারী মুন্সির উপ র দায়িত্ব দেন। এ সুযোগে কষাইরা মুন্সির চোখ ফাকি দিয়ে জবাই অযোগ্য গরু জবাই করে থাকেন। তবে কোন ভেটেরিনারী সার্জন থাকেননা গরু পরীক্ষার জন্য। এ ব্যাপারে ভেটেরিনারী সার্জন ডা.আবু সরফরাজ হোসেন কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটি পৌরকর্তপক্ষের দায়িত্ব। পৌর কতৃপক্ষ আমাকে পরীক্ষা করার জন্য আহবান করলে আমি গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করব, তারা চাননা তাই এটি হয়না।
পৌরসভার ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্তরা অজ্ঞাত কারণে দায়িত্ব পালন করেননা বলে বিভিন্ন সভায় এমন অভিযোগও উঠে আসে।
তবে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ পৌর স্যানেটারি ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম তিনি বলেন, পৌরসভার অন্য কাজের চাপে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে পারি না। তবে যথাসাধ্য আমরা চেষ্টা করি। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা ইউএনও এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, কয়েকদিন আগে কলেজ বাজারের মাংসর হাটে গিয়েছিলাম। দাম নিয়ে একটু জটিলতা আছে। মাংস ব্যবসায়িদের মূল্য তালিকা দোকানের সামনে টাঙ্গানোর জন্য বলেছি।