ঢাকা ০৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সীমান্ত হত্যা কখনোই মেনে নেওয়ার নয়: মির্জা ফখরুল আ. লীগ সাড়ে ১৫ বছর দেশের পরিবর্তে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: জামায়াত আমির ‘সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে’ ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের ফলাফল প্রকাশ ও কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুষ্কার বিতরন গণ-হত্যাকারী, সন্ত্রাশী, দুর্নীতিবাজদের বিএনপিতে জায়গা হবে না : মির্জা ফখরুল দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে

আমার আত্মজীবনীতে রুদ্র নামে এক কবির কথা আছে

তসলিমা নাসরিন:: কার সংগে ছিল আমার প্রেম, কার জন্য আমার ছিল কী অনুভব, কাকে কতটুকু ভালোবেসেছি, কে আমাকে কীভাবে আঘাত দিয়েছে, কারা প্রতারণা করেছে, কারা সর্বনাশ করেছে, তাছাড়া সত্যের জন্য, সততার জন্য,সমতার জন্য আমার নিরন্তর আত্মত্যাগ, আমার আপসহীন সংগ্রাম কী করে করে গিয়েছি জীবনভর — সব আমি আত্মজীবনীতে লিখেছি। লোকে কিন্তু সেসব পড়ে অথবা শুনে আমার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বলতে গেলে কেবল কার কার সংগে আমি শুয়েছি– তারই বিশদ বর্ণনা করে। সেই নামগুলোর সংগে নিজের পছন্দমতো আরও কিছু নাম জুড়ে দিয়ে অবশ্যই।আমার আত্মজীবনীতে কিন্তু রুদ্র নামে এক কবির কথা আছে, আছে কারণ তার সংগে আমার এককালে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তার সম্পর্কে প্রচুর তথ্য আমার আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খণ্ড ‘উতল হাওয়া’ আর তৃতীয় খণ্ড ‘দ্বিখণ্ডিত’ (ক) থেকেই নেয় তারা, যারা তার সম্পর্কে এখন নিবন্ধ প্রবন্ধ লেখে। রুদ্রর কবিতার প্রশংসা আমার লেখায় প্রচুর আছে, সেই সংগে আছে আরও তথ্য যে সে নিয়মিত গণিকাগমন করতো, সে নানা যৌনরোগ বাঁধিয়ে আসতো গণিকালয় থেকে, এবং সংক্রামিত করতো সেই মেয়েকে, যে তাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো এবং বিশ্বাস করতো। তাকে মিথ্যে কথা বলতো যে সে কখনও গণিকাগমন করে না, ধরা পড়ার পরই শুধু স্বীকার করতো। আমার আত্মজীবনী থেকে তার কবিতার প্রশংসা টুকু আলগোছে তুলে নিয়ে লোকেরা আবেগে মরে যাই মরে যাই গোছের লম্বা লম্বা লেখা লেখে। তার প্রতারণার কথা কিন্তু কেউ উল্লেখ করে না। তার চরিত্রের এই দিকটি কেউ তুলে ধরে না যে মদ্যপান এবং গণিকাগমন ছাড়া তার দিন চললেও, রাত চলতো না। তার চরিত্র সম্পর্কে বলতে গেলে বোহেমিয়ান ছিল, বিপ্লবী ছিল — এমন রোমান্টিক সব শব্দই লোকেরা ব্যবহার করে। একটি গান লোকের মুখে মুখে ফেরে, সে কারণে গীতিকারের মিথ্যে মাফ, প্রতারণা মাফ, লাম্পট্য মাফ!

সমাজে মেয়েদের অধিকারের জন্য বিপ্লব করলেও আমাকে বিপ্লবী বলে ডাকা হবে না। আমি শুধু কটার সংগে শুয়েছি,সেটাই দেখা হবে। এই হলো পুরুষাংগ পুজারীদের সমাজ। এই ঘৃণ্য নারীবিদ্বেষী সমাজে নারীরা কী করে বেঁচে আছে তা আত্মসম্মান আছে যে নারীদের, তারাই একমাত্র জানে। (ফেসবুক স্ট্যাটাস)

তসলিমা নাসরিন: ভারতে আশ্রয় নেওয় বাংলাদেশের কবি ও লেখক

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

সীমান্ত হত্যা কখনোই মেনে নেওয়ার নয়: মির্জা ফখরুল

আমার আত্মজীবনীতে রুদ্র নামে এক কবির কথা আছে

আপডেট টাইম ০৭:৪৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯

তসলিমা নাসরিন:: কার সংগে ছিল আমার প্রেম, কার জন্য আমার ছিল কী অনুভব, কাকে কতটুকু ভালোবেসেছি, কে আমাকে কীভাবে আঘাত দিয়েছে, কারা প্রতারণা করেছে, কারা সর্বনাশ করেছে, তাছাড়া সত্যের জন্য, সততার জন্য,সমতার জন্য আমার নিরন্তর আত্মত্যাগ, আমার আপসহীন সংগ্রাম কী করে করে গিয়েছি জীবনভর — সব আমি আত্মজীবনীতে লিখেছি। লোকে কিন্তু সেসব পড়ে অথবা শুনে আমার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বলতে গেলে কেবল কার কার সংগে আমি শুয়েছি– তারই বিশদ বর্ণনা করে। সেই নামগুলোর সংগে নিজের পছন্দমতো আরও কিছু নাম জুড়ে দিয়ে অবশ্যই।আমার আত্মজীবনীতে কিন্তু রুদ্র নামে এক কবির কথা আছে, আছে কারণ তার সংগে আমার এককালে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তার সম্পর্কে প্রচুর তথ্য আমার আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খণ্ড ‘উতল হাওয়া’ আর তৃতীয় খণ্ড ‘দ্বিখণ্ডিত’ (ক) থেকেই নেয় তারা, যারা তার সম্পর্কে এখন নিবন্ধ প্রবন্ধ লেখে। রুদ্রর কবিতার প্রশংসা আমার লেখায় প্রচুর আছে, সেই সংগে আছে আরও তথ্য যে সে নিয়মিত গণিকাগমন করতো, সে নানা যৌনরোগ বাঁধিয়ে আসতো গণিকালয় থেকে, এবং সংক্রামিত করতো সেই মেয়েকে, যে তাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো এবং বিশ্বাস করতো। তাকে মিথ্যে কথা বলতো যে সে কখনও গণিকাগমন করে না, ধরা পড়ার পরই শুধু স্বীকার করতো। আমার আত্মজীবনী থেকে তার কবিতার প্রশংসা টুকু আলগোছে তুলে নিয়ে লোকেরা আবেগে মরে যাই মরে যাই গোছের লম্বা লম্বা লেখা লেখে। তার প্রতারণার কথা কিন্তু কেউ উল্লেখ করে না। তার চরিত্রের এই দিকটি কেউ তুলে ধরে না যে মদ্যপান এবং গণিকাগমন ছাড়া তার দিন চললেও, রাত চলতো না। তার চরিত্র সম্পর্কে বলতে গেলে বোহেমিয়ান ছিল, বিপ্লবী ছিল — এমন রোমান্টিক সব শব্দই লোকেরা ব্যবহার করে। একটি গান লোকের মুখে মুখে ফেরে, সে কারণে গীতিকারের মিথ্যে মাফ, প্রতারণা মাফ, লাম্পট্য মাফ!

সমাজে মেয়েদের অধিকারের জন্য বিপ্লব করলেও আমাকে বিপ্লবী বলে ডাকা হবে না। আমি শুধু কটার সংগে শুয়েছি,সেটাই দেখা হবে। এই হলো পুরুষাংগ পুজারীদের সমাজ। এই ঘৃণ্য নারীবিদ্বেষী সমাজে নারীরা কী করে বেঁচে আছে তা আত্মসম্মান আছে যে নারীদের, তারাই একমাত্র জানে। (ফেসবুক স্ট্যাটাস)

তসলিমা নাসরিন: ভারতে আশ্রয় নেওয় বাংলাদেশের কবি ও লেখক