ঢাকা ০৯:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি অফিস ৯ দিন ধরে তালাবদ্ধ, যুক্ত হয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড

সারাদিন ডেস্ক::নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশি পাহারা বাড়ানো হয়েছে। সাথে যুক্ত করা হয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড। এতদিন অফিসের সামনে পুলিশের এক স্তরের নিরাপত্তা ছিল।

মতিঝিলের আরামবাগে আওয়ামী লীগের সমাবেশের কারণে কার্যালয়ের তিন দিকে ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। রাতে সেই ব্যারিকেড দুই পাশে রাখা হয়েছে। এর আগে গত ২৮ অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকেই ক্রাইম সিন টিমের নজরে ছিল দুই দিন। ক্রাইম সিন টিম তাদের কর্ডেস টেপ দিয়ে বিএনপির কার্যলায়কে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। সেখান থেকে আলামত সংগ্রহের পর সেই ব্যারিকেড তুলে নেয় ক্রাইম সিনের টিম।

নয়াপল্টনের কার্যালয়ের কলাসিবল গেইট তালা দিয়ে বন্ধ রয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর রাত থেকে এই কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। কার্যালয়ের সামনের ‍ফুটপাত দিয়েও এখন পুলিশ কাউকে চলাচলের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। পথচারীদের ঘুরে যেতে বলা হচ্ছে।

নয়াপল্টনের সড়কে প্রাইভেট কার, সিএনজি, রিকশার স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। তবে রিকশার সংখ্যাই বেশি। এই সড়কের দোকানপাটগুলো বন্ধ রয়েছে। রিকশা চালক মোমিন মিয়া জানালেন, অবরোধের কারণে যাত্রী কম পাচ্ছে। ‘অনেকেই পায়ে হেটে চলছেন’।

নয়াপল্টনের গলিতে চা দোকানদার সুরজ মিয়া বলেন, “কড়া অবরোধ হচ্ছে ভাই। আমার প্রতিদিন চা বিক্রি হতো এক শ’ থেকে দেড় শ’ কাপ। এখন অর্ধেকের কম বিক্রি হয়। সকাল থেকে আজ মাত্র ২৮ কাপ চা বিক্রি করেছি। এর অধিকাংশই পুলিশসহ সাংবাদিকরা চা খেয়েছেন। সাধারণ মানুষজন কম। কারণ গ্রেফতারের ভয়ে কেউ এই সড়কে চলছে না।”

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নয়াপল্টনের সড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। কোথাও ইনডেন্ট হয়নি। মানুষজনের স্বাভাবিক চলাচল ও নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ বাহিনী সদা প্রস্তুত রয়েছে।

‘গ্রেফতার চলছেই’
গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সঙ্ঘাতে পণ্ড হওয়ার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল , যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক সহ উল্লেখ যোগ্য নেতাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।

গতকাল রাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেফতারের করেছে পুলিশ। ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচিতে ভয় পেয়েই সরকার শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেফতার করেছে জানিয়ে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণ এখন ‘৭১ সালের দুর্বিষহ দিনগুলোর চেয়েও চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। সেই সময় দেশের মানুষ যেমন হানাদার বাহিনীর ভয়ে দ্বিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালিয়ে বেড়াত, স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী কাল পরেও তেমনিভাবে এদেশের মানুষ এখন আওয়ামী স্বৈরশাসকের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ দিনে-রাতে যেকোনো সময় নেতাকর্মীদের ধরতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে বাসায় না পেয়ে তাদের বাবা, ভাই কিংবা অন্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। আটককৃত নেতাকর্মী কিংবা তাদের স্বজনদের থানায় নিয়ে গিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে দেশে শুরু হয়েছে মহাতাণ্ডব ।

সরকারকে ইঙ্গিতে দিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই রয়ে যাবে সরকারের। জনগণকে সাথে নিয়ে বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর পতন ঘটাতে বিএনপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

 

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

বিএনপি অফিস ৯ দিন ধরে তালাবদ্ধ, যুক্ত হয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড

আপডেট টাইম ০৪:১৩:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩

সারাদিন ডেস্ক::নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশি পাহারা বাড়ানো হয়েছে। সাথে যুক্ত করা হয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড। এতদিন অফিসের সামনে পুলিশের এক স্তরের নিরাপত্তা ছিল।

মতিঝিলের আরামবাগে আওয়ামী লীগের সমাবেশের কারণে কার্যালয়ের তিন দিকে ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। রাতে সেই ব্যারিকেড দুই পাশে রাখা হয়েছে। এর আগে গত ২৮ অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকেই ক্রাইম সিন টিমের নজরে ছিল দুই দিন। ক্রাইম সিন টিম তাদের কর্ডেস টেপ দিয়ে বিএনপির কার্যলায়কে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। সেখান থেকে আলামত সংগ্রহের পর সেই ব্যারিকেড তুলে নেয় ক্রাইম সিনের টিম।

নয়াপল্টনের কার্যালয়ের কলাসিবল গেইট তালা দিয়ে বন্ধ রয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর রাত থেকে এই কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। কার্যালয়ের সামনের ‍ফুটপাত দিয়েও এখন পুলিশ কাউকে চলাচলের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। পথচারীদের ঘুরে যেতে বলা হচ্ছে।

নয়াপল্টনের সড়কে প্রাইভেট কার, সিএনজি, রিকশার স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। তবে রিকশার সংখ্যাই বেশি। এই সড়কের দোকানপাটগুলো বন্ধ রয়েছে। রিকশা চালক মোমিন মিয়া জানালেন, অবরোধের কারণে যাত্রী কম পাচ্ছে। ‘অনেকেই পায়ে হেটে চলছেন’।

নয়াপল্টনের গলিতে চা দোকানদার সুরজ মিয়া বলেন, “কড়া অবরোধ হচ্ছে ভাই। আমার প্রতিদিন চা বিক্রি হতো এক শ’ থেকে দেড় শ’ কাপ। এখন অর্ধেকের কম বিক্রি হয়। সকাল থেকে আজ মাত্র ২৮ কাপ চা বিক্রি করেছি। এর অধিকাংশই পুলিশসহ সাংবাদিকরা চা খেয়েছেন। সাধারণ মানুষজন কম। কারণ গ্রেফতারের ভয়ে কেউ এই সড়কে চলছে না।”

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নয়াপল্টনের সড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। কোথাও ইনডেন্ট হয়নি। মানুষজনের স্বাভাবিক চলাচল ও নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ বাহিনী সদা প্রস্তুত রয়েছে।

‘গ্রেফতার চলছেই’
গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সঙ্ঘাতে পণ্ড হওয়ার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল , যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক সহ উল্লেখ যোগ্য নেতাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।

গতকাল রাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেফতারের করেছে পুলিশ। ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচিতে ভয় পেয়েই সরকার শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেফতার করেছে জানিয়ে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান।

আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণ এখন ‘৭১ সালের দুর্বিষহ দিনগুলোর চেয়েও চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। সেই সময় দেশের মানুষ যেমন হানাদার বাহিনীর ভয়ে দ্বিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালিয়ে বেড়াত, স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী কাল পরেও তেমনিভাবে এদেশের মানুষ এখন আওয়ামী স্বৈরশাসকের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ দিনে-রাতে যেকোনো সময় নেতাকর্মীদের ধরতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে বাসায় না পেয়ে তাদের বাবা, ভাই কিংবা অন্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। আটককৃত নেতাকর্মী কিংবা তাদের স্বজনদের থানায় নিয়ে গিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে দেশে শুরু হয়েছে মহাতাণ্ডব ।

সরকারকে ইঙ্গিতে দিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই রয়ে যাবে সরকারের। জনগণকে সাথে নিয়ে বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর পতন ঘটাতে বিএনপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।