নিজস্ব প্রতিবেদক::দেশজুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ। চলতি মাসে আরও একটি তীব্র ও দুইটি মৃদু তাপপ্রবাহের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এই গরমে ঝুঁকি বেড়েছে হিটস্ট্রোকের। এজন্য বয়স্ক ব্যক্তিদের এবং নারী শিশুদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। গরমের কারণে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি ছাড়াও রয়েছে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। তাছাড়া এ সময় ডায়রিয়া ও ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রকোপও বাড়ে।
চিকিৎসকরা বলছেন, দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে মানুষের শরীরে। ফলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে হিটস্ট্রোক হতে পারে। সাধারণত মানবদেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রক্ত ভূমিকা রাখে। আবহাওয়া উষ্ণ হলে রক্তনালি প্রসারিত হয় এবং শরীরের তাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। ফলে শরীরের স্বাভাবিক ক্ষমতা হারিয়ে হিটস্ট্রোক হয়। এটাকে অবহেলা করার সুযোগ নেই, হিটস্ট্রোকের কারণে মৃত্যুও হতে পারে।
এদিকে তীব্র গরমের কারণে হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি ডায়রিয়াতে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চার হাজার ৩৩৮জন। এর মধ্যে পহেলা মে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৯৪ জন, ২ মে ৭০১ জন, ৩ মে ৫৪৯ জন, ৪ মে ৫৩৩ জন, ৫ মে ৬২৭ জন, ৬ মে ৬৩৯ জন এবং ৭ মে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৯৫ জন। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ভর্তি হওয়া রোগির সংখ্যা ৬২০ জন।
এদিকে আবহওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে আরও গরম বাড়ার খবর। চলতি মাসের সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। সামনের দুই সপ্তাহে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ অর্থাৎ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং অন্য অংশে ১-২টি মৃদু অর্থাৎ ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিংবা মাঝারি অর্থাৎ ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শিশু বিভগের অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদ বলেন, ‘গরমে শিশুরা সর্দি, ঠান্ডা, জ্বর ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয় বেশি। এ সময় শিশুদের পাতলা কাপড় পরাতে হবে, নিয়মিত গোসল করাতে হবে। কিছুক্ষণ পরপর প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। কোনোভাবেই যেন শরীরে পানিস্বল্পতা তৈরি না হয়।’
‘গরমের এই সময় শিশুদের ঘামাচি হয় বেশি। ঘামাচি হলে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিতে হবে। শিশুদের স্বাভাবিক খাবার দিতে হবে। কোনো ধরনের গুরুপাক খাবার দেওয়া যাবে না। শিশু যদি বুকের দুধ পান করে, তাহলে মায়েদের আরও বেশি পানি পান করতে হবে।’