ঢাকা অফিস,সারাদিন ডেস্ক::উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথের নতুন আন্তনগর ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি আগামী ২৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-পঞ্চগড় রেলরুটে চলাচল শুরু করবে। এর আগে ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই ট্রেনের নামটির অনুমোদন দেন। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৫ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। নতুন এই ট্রেনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পীরগঞ্জ ও সেতাবগঞ্জ এলাকার জনসাধারন। রেলওয়ের জনসংযোগ বিভাগের এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন।
ঢাকা থেকে রেলপথে পঞ্চগড়ের দূরত্ব ৬৩৯ কিলোমিটার। জানা গেছে, নতুন এই ট্রেনটি বিরতিহীন হিসেবে চালু করা হলেও মূলত সেমিব্রেক (স্বল্প বিরতি) দিয়ে চলাচল করবে। কমলাপুর থেকে সরাসরি পার্বতীপুর, দিনাজপুর, সেতাবগঞ্জ, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, রুহিয়ার পরে শেষ স্টেশন পঞ্চগড় পৌঁছানোর কথা থাকলেও পরে রেলওয়ের উদ্ধতন পর্যায়ের সিদ্ধান্তে ছোট ষ্টেশন হিসেবে সেতাবগঞ্জ,পীরগঞ্জ ও রুহিয়া ষ্টেশনের যাত্রাবিরতী বাতিল করে শুধুমাত্র দিনাজপুর,ঠাকুরগাঁও ও পাবৃতীপুরে এ কর্মবিরতী নির্ধারন করে এবং এই ট্রেনের ৯শ’ আসনের মধ্যে পঞ্চগড়ে ২৭০ , ঠাকুরগাঁওয়ে ২২৫ , দিনাজপুরে ২৭০ ও পার্বতীপুরের ১৩৫ আসন বরাদ্দ করা হয়। ট্রেনটি উদ্বোধনের পর যাত্রী সংখ্যা বিবেচনা করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো কিছু যোজন বিয়োজন এর সম্ভাবনা আছে বলে জানান রেলওয়ের মহা-পরিচালক কাজী মো: রফিকুল আলম।
যাত্রাবিরতীর বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান বলেন, এ ব্যাপারে এ মুহুত্বে আর কিছুই করার নেই, চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অনেক বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় ষ্টেশনে বরাদ্দকৃত ৪৯৫ আসনে যাত্রী না পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হলে রেলওয়ে পশ্চিম জোনের চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার-সিসিএম মিহির কান্তি গুহ বলেন, যাত্রী পাওয়া না গেলে ১ মাস পরে এ বিষয়ে পূনরায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিভাবে ট্রেনটি লাভজনক করা যায় তখন সেটা বিবেচনায় আসবে।সমস্যা হলে সমাধানও হবে।
এলাকার মানুষের দাবীর বিষয়টি উল্থাপন করা হলে রেলওয়ের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, এ মুহুত্বে নতুন এই ট্রেনকে স্বাগত জানানো উচিৎ এলাকার মানুষদের। এটার চলাচলে বাধা প্রয়োগ না করে এলাকার মানুষের দাবীর প্রতি মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় সহ সদাসয় সরকার বাহাদুর অবশ্যই আন্তরিকতা প্রদর্শন বরবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ব্রডগেজ (বড়) লাইনের ১৪০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন আধুনিক এই ট্রেনটি নির্মাণ করেছে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেল ক্যারেজ (কোচ) নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পিটি ইন্ডাস্ট্রি কেরেতা এপি (ইনকা)। ১২টি বিলাস বহুল কোচ সমৃদ্ধ ট্রেনটিতে ৯০০টি আসন থাকছে।
নতুন এই কোচগুলোতে থাকছে ‘বায়ো টয়লেট’। এত দিন ট্রেনের টয়লেট থেকে মানববর্জ্য রেলপথেই পড়ত। কিন্তু এই কোচে বিমানের মতো টয়লেট সুবিধা থাকায় রেললাইনে কোনো বর্জ্য পড়বে না। বিশেষ ব্যবস্থায় ওই মানববর্জ্য সরিয়ে নেওয়া হবে। এতে পানি খরচও হবে তুলনামূলক অনেক কম।
এতদ সংক্রান্ত ১৫ মে সংবাদ সারাদিন পত্রিকায় পীরগঞ্জ, সেতাবগঞ্জে ট্রেন থামছে শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর বিভিন্ন মহল থেকে ফোন করে বিষয়টি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া আসে। যার প্রেক্ষিতে কতৃপক্ষ বিভিন্ন মহলে খোজ-খবর নিয়ে সংবাদটির সংসোধনী প্রকাশ করল। পাঠকদের সাময়িক বিভ্রান্তির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দু:খিত।