সারাদিন ডেস্ক:: যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের জোরপূর্বক বিয়ের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশিরা। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তর প্রতিমন্ত্রী হ্যারিয়েট বল্ডউইনের দেওয়া তথ্য থেকে বিষয়টি জানা যায়।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশটির ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিট (জোরপূর্বক বিয়ে দমন কর্তৃপক্ষ) বাংলাদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮৮৪টি অভিযোগ মোকাবিলা করেছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক লিখিত প্রশ্নে লেবার-দলীয় এমপি টিউলিপ সিদ্দিক পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের কাছে জানতে চান, ২০১০ সাল থেকে জোরপূর্বক বিয়ের অভিযোগ আসা ঘটনাগুলো কোন কোন দেশের সঙ্গে যুক্ত। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত অভিযোগগুলোর সংখ্যাও জানতে চান তিনি।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লিখিত জবাবে প্রতিমন্ত্রী বল্ডউইন জানান, ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ‘ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিট’ বিয়ের মোট ৯ হাজার ৬১৮টি অভিযোগ মোকাবিলা করেছে। এসব অভিযোগ ৮৫টি দেশের সঙ্গে যুক্ত।
শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭১৪টি ঘটনা, যা মোট অভিযোগের ৪৯ শতাংশ।
পাকিস্তানের পরই রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত মোট অভিযোগের সংখ্যা ৮৮৪টি, যা মোট অভিযোগের ৯ দশমিক ২ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতের সঙ্গে যুক্ত ৭৩৬টি ঘটনা। এরপর আছে আফগানিস্তান ও সোমালিয়া। দেশ দুটির সঙ্গে যুক্ত অভিযোগের সংখ্যা যথাক্রমে ২১২ ও ১৮১টি।
কনজারভেটিভ-দলীয় রাজনীতিক হ্যারিয়েট বল্ডউইন আরও জানান, ১ হাজার ৪৯টি অভিযোগের ক্ষেত্রে ভিনদেশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে সন্তানদের নিজ দেশে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা আছে। অনেক ক্ষেত্রে পাত্র বা পাত্রীর অমতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। এই অমতে বিয়ে দেওয়াকে বলা হচ্ছে ‘জোরপূর্বক বিয়ে’।
জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকাতে ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্য সরকার ‘ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিট’ গঠন করে। দেশে দেশে ছড়িয়ে থাকা যুক্তরাজ্যের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমেও এই ইউনিট ব্রিটিশ নাগরিকদের জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকাতে কাজ করে। এমন বিয়ের ভয়াবহ পরিণতির কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্য সরকার জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়াকে ফৌজদারি অপরাধ আখ্যা দিয়ে আইন পাস করে।