স্টাফ রিপোর্টার:: সাড়ে পাঁচ বছর হয়েছে। তবুও এ নিয়ে আলোচনা শেষ হয়নি। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ঠিক কী প্রক্রিয়ায় বিদেশে যান এবং পদত্যাগ করেন তা রীতিমতো রহস্যে ঢাকা এক অধ্যায়। ‘অ্যা ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল’, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ বইয়ে বিচারপতি সিনহা এক ধরনের বিবরণ দিয়েছেন। তার দাবি, তাকে বাধ্য করা হয়। সে সময় মন্ত্রিসভার সদস্যসহ সরকারি এবং বিরোধী শিবিরের রাজনীতিবিদরা নানা কথা বলেছেন। আসলে কী ঘটেছিল? তার একটা বিবরণ দিয়েছেন সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। দৈনিক সমকালকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। বুধবার প্রকাশিত এ সাক্ষাৎকারে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে সিদ্ধান্ত দেয়ার বেলায় কঠিন ও জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার কথা অবলীলায় বলেছেন সদ্য সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। তার ভাষায়, কঠিন ও জটিল পরিস্থিতি যে আসেনি, তা নয়।
মনের বিরুদ্ধে দু’-একটি কাজও হয়েছে। এটা হতেই পারে। সেটা বেশি হয়নি। তিনি সেই পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকভাবে নেয়ার চেষ্টা করেছেন; সুন্দর ও সহজভাবে সামাল দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের বিষয়টি। তার দৃষ্টিতে, ওই বিষয়টি সামাল দেয়াটা ছিল খুবই কঠিন। কিন্তু তিনি চমৎকার কৌশলে ওই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। যার ফলে এস কে সিনহাকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।’ কৌশলটা কী ছিল তা তিনি অবশ্য বলেননি।
২০১৫ সালের ১৭ই জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন বিচারপতি এস কে সিনহা। ১০৩০ দিন দায়িত্ব পালনকালে বার বার শিরোনামে আসেন তিনি। বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নিতে দেখা যায় তাকে। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল মামলার রায় নিয়ে সরকারি দলের নেতাদের তোপের মুখে পড়েন বিচারপতি সিনহা। একপর্যায়ে তিনি বিদেশ চলে যেতে বাধ্য হন। সরকারের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল এস কে সিনহা অসুস্থ। যদিও যাওয়ার আগে এস কে সিনহা লিখিত বক্তব্যে জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগের কথাও বলা হয়। ২০১৭ সালের ১১ই নভেম্বর বিদেশ থেকে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠান। বয়স অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১শে জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন। ঋণ আত্মসাতের এক মামলায় দেশের আদালতে তার কারাদণ্ডও হয়েছে।