ঢাকা ১০:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

ইসি’র নীতিমালা সাংবাদিকদের শেকল বন্দি করবে

  • Yeasmin Ananna
  • আপডেট টাইম ১২:৫২:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩
  • ১২৫ বার
স্টাফ রিপোর্টার::

নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য জারিকৃত নীতিমালাটি অনতিবিলম্বে বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতার লক্ষ্যে কমিশন নীতিমালা জারি করেছে বলে উল্লেখ করা হলেও এই নীতিমালার নির্দেশনাসমূহ কার্যত সাংবাদিকদের শেকলবন্দি করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সাংবাদিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে নীতিমালাটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও নীতিমালাটি সংশোধন বা বাতিলের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আমরা মনে করি, জারিকৃত নীতিমালাটি সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনোরূপ আলাপ-আলোচনা না করেই এই নীতিমালা জারি করা হয়েছে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের কার্যকর অংশগ্রহণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল সাংবাদিকদের অতি প্রয়োজনীয় বাহন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত যাতায়াত করতে পারেন। এ ছাড়া অনেক ভোটকেন্দ্র রয়েছে যেগুলোর অবস্থান দুর্গম এলাকায়। সেসব ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেলই একমাত্র বাহন, অন্য কোনো যানবাহনে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

সংবাদ সংগ্রহে মোটরসাইকেলের এই গুরুত্ব নির্বাচন কমিশনের জানা না থাকার কথা নয়। এমতাবস্থায়, জারিকৃত নীতিমালায় সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধানে আমরা হতবাক হয়েছি। নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক সাংবাদিক দুর্গম এলাকার ভোটকেন্দ্রে খবর সংগ্রহে যেতে পারবেন না। যাতে ওইসব এলাকার নির্বাচনের পরিস্থিতিও জনগণ জানতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে অনুমোদনহীন কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারেন না। তবে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক এবং তথ্য সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। সাংবাদিকরা ভোটের দিনের বিভিন্ন ঘটনাবলী জনগণের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না, ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না। এই ধরনের বিধান জনগণের কাছে সঠিক নির্বাচনী তথ্য তুলে ধরার পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের বাধার সৃষ্টি করবে বলে মনে করে সুজন।সুজন আরও জানিয়েছে, ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে সাংবাদিকদের জন্য ১২টি নির্দেশনা সম্বলিত এমনই একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। তুলনা করলে দেখা যায়, ২০১৮ সালের নির্দেশনার তুলনায় ২০২৩ সালের নির্দেশনায় বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে গত নির্বাচনের ন্যায় একইরূপ নির্দেশনা জারি করাটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কমিশনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক করবে বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন কমিশন বার বার সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে সম্ভব সেটি আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা জারিকৃত নীতিমালাটি অনতিবিলম্বে বাতিল এবং সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কমিশনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ

ইসি’র নীতিমালা সাংবাদিকদের শেকল বন্দি করবে

আপডেট টাইম ১২:৫২:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩
স্টাফ রিপোর্টার::

নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য জারিকৃত নীতিমালাটি অনতিবিলম্বে বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতার লক্ষ্যে কমিশন নীতিমালা জারি করেছে বলে উল্লেখ করা হলেও এই নীতিমালার নির্দেশনাসমূহ কার্যত সাংবাদিকদের শেকলবন্দি করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সাংবাদিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে নীতিমালাটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও নীতিমালাটি সংশোধন বা বাতিলের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আমরা মনে করি, জারিকৃত নীতিমালাটি সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনোরূপ আলাপ-আলোচনা না করেই এই নীতিমালা জারি করা হয়েছে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের কার্যকর অংশগ্রহণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল সাংবাদিকদের অতি প্রয়োজনীয় বাহন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত যাতায়াত করতে পারেন। এ ছাড়া অনেক ভোটকেন্দ্র রয়েছে যেগুলোর অবস্থান দুর্গম এলাকায়। সেসব ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেলই একমাত্র বাহন, অন্য কোনো যানবাহনে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

সংবাদ সংগ্রহে মোটরসাইকেলের এই গুরুত্ব নির্বাচন কমিশনের জানা না থাকার কথা নয়। এমতাবস্থায়, জারিকৃত নীতিমালায় সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধানে আমরা হতবাক হয়েছি। নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক সাংবাদিক দুর্গম এলাকার ভোটকেন্দ্রে খবর সংগ্রহে যেতে পারবেন না। যাতে ওইসব এলাকার নির্বাচনের পরিস্থিতিও জনগণ জানতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে অনুমোদনহীন কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারেন না। তবে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক এবং তথ্য সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। সাংবাদিকরা ভোটের দিনের বিভিন্ন ঘটনাবলী জনগণের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না, ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না। এই ধরনের বিধান জনগণের কাছে সঠিক নির্বাচনী তথ্য তুলে ধরার পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের বাধার সৃষ্টি করবে বলে মনে করে সুজন।সুজন আরও জানিয়েছে, ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে সাংবাদিকদের জন্য ১২টি নির্দেশনা সম্বলিত এমনই একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। তুলনা করলে দেখা যায়, ২০১৮ সালের নির্দেশনার তুলনায় ২০২৩ সালের নির্দেশনায় বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে গত নির্বাচনের ন্যায় একইরূপ নির্দেশনা জারি করাটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কমিশনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক করবে বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন কমিশন বার বার সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে সম্ভব সেটি আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা জারিকৃত নীতিমালাটি অনতিবিলম্বে বাতিল এবং সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কমিশনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।