ঢাকা ১১:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

ঠাকুরগাঁওয়ে পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার সম্ভাবনা

আজম রেহমান, ঠাকুরগাঁও
সীমান্তবর্তী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল গ্রামের দিগন্ত জোড়া মাঠে দেখা মেলে সাদা রংয়ের ফুলে ভরা পেঁয়াজ বীজের ক্ষেত। এসব ক্ষেত থেকে শুধু কৃষকেরাই লাভবান হননি। পাশাপাশি স্থানীয় বেকার ‍যুবকদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।
পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখে আশায় বুক বেধেছেন গ্রামটির কৃষক রফিকুল ইসলাম। এ বছর তিনি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় ৪ লাখ টাকা মুনাফার আশা করছেন তিনি। মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন জেলার অনেক কৃষক।
পিয়াজ ক্ষেতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন স্থানীয় যুবকেরা। তারা উপার্জিত অর্থ দিয়ে পরিবারকে সহয়তা করছেন। কারও কারও মিটছে পড়াশোনার খরচ।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল গ্রামে রফিকুলের মতো আরও অনেক কৃষক শত শত বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করেছেন। এলাকার ফসলি মাঠগুলোর দিকে তাকালে চোখে পড়ে শুধু কদম ফুল আকৃতির সবুজ সাদা শুভ্র ফুল আর ফুল। চোখ ও মন জুড়ানো সবুজ ও সাদা ফুল থেকে এক-দুটো মৌমাছির মধু আহরণ প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে এক অনন্য মনোরম দৃশ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
দেখা যায়, সকাল হলেই এসব বীজ ক্ষেতের পরিচর্যায় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ সেচ দিতে, কেউ আবার পোকা দমনের কীটনাশক স্প্রে নিয়ে, কেউ হাতের আলতো ছোঁয়ায় পরাগায়ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ও পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক কিশোর-কিশোরীরাও এসব কাজ করছেন।
তবে কয়েকজন চাষি জানালেন, সাধারণত নভেম্বর মাস বীজতলায় বা জমিতে পেঁয়াজ বীজ বপনের সময়। বীজ পরিপক্ব হতে সময় লাগে ১৩০ দিন। পরাগায়ন না হলে পেঁয়াজ ফুলে পরিপক্বতা আসে না। আর এসব ফুলে পরাগায়নের প্রধান মাধ্যম হলো মৌমাছি। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা খেতে কীটনাশক ছেটান। কিন্তু সেই কীটনাশকে মারা পড়ছে উপকারী পোকা ও মৌমাছি। এ কারণে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে দিন দিন মৌমাছির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। তাই ঝাড়ু ও হাতের স্পর্শে কৃত্রিমভাবে পরাগায়নের চেষ্টা চলছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আলমগীর কবির বলেন, জেলায় চলতি মৌসুমে ১১২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এক হেক্টর কম। প্রতি হেক্টরে ৯০০ কেজি বীজ উৎপাদনের আশা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৪ কোটি টাকা।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার সম্ভাবনা

আপডেট টাইম ০৪:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪

আজম রেহমান, ঠাকুরগাঁও
সীমান্তবর্তী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল গ্রামের দিগন্ত জোড়া মাঠে দেখা মেলে সাদা রংয়ের ফুলে ভরা পেঁয়াজ বীজের ক্ষেত। এসব ক্ষেত থেকে শুধু কৃষকেরাই লাভবান হননি। পাশাপাশি স্থানীয় বেকার ‍যুবকদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।
পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখে আশায় বুক বেধেছেন গ্রামটির কৃষক রফিকুল ইসলাম। এ বছর তিনি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় ৪ লাখ টাকা মুনাফার আশা করছেন তিনি। মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন জেলার অনেক কৃষক।
পিয়াজ ক্ষেতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন স্থানীয় যুবকেরা। তারা উপার্জিত অর্থ দিয়ে পরিবারকে সহয়তা করছেন। কারও কারও মিটছে পড়াশোনার খরচ।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল গ্রামে রফিকুলের মতো আরও অনেক কৃষক শত শত বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করেছেন। এলাকার ফসলি মাঠগুলোর দিকে তাকালে চোখে পড়ে শুধু কদম ফুল আকৃতির সবুজ সাদা শুভ্র ফুল আর ফুল। চোখ ও মন জুড়ানো সবুজ ও সাদা ফুল থেকে এক-দুটো মৌমাছির মধু আহরণ প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে এক অনন্য মনোরম দৃশ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
দেখা যায়, সকাল হলেই এসব বীজ ক্ষেতের পরিচর্যায় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ সেচ দিতে, কেউ আবার পোকা দমনের কীটনাশক স্প্রে নিয়ে, কেউ হাতের আলতো ছোঁয়ায় পরাগায়ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ও পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক কিশোর-কিশোরীরাও এসব কাজ করছেন।
তবে কয়েকজন চাষি জানালেন, সাধারণত নভেম্বর মাস বীজতলায় বা জমিতে পেঁয়াজ বীজ বপনের সময়। বীজ পরিপক্ব হতে সময় লাগে ১৩০ দিন। পরাগায়ন না হলে পেঁয়াজ ফুলে পরিপক্বতা আসে না। আর এসব ফুলে পরাগায়নের প্রধান মাধ্যম হলো মৌমাছি। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা খেতে কীটনাশক ছেটান। কিন্তু সেই কীটনাশকে মারা পড়ছে উপকারী পোকা ও মৌমাছি। এ কারণে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে দিন দিন মৌমাছির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। তাই ঝাড়ু ও হাতের স্পর্শে কৃত্রিমভাবে পরাগায়নের চেষ্টা চলছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আলমগীর কবির বলেন, জেলায় চলতি মৌসুমে ১১২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এক হেক্টর কম। প্রতি হেক্টরে ৯০০ কেজি বীজ উৎপাদনের আশা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৪ কোটি টাকা।