ঢাকা ০৭:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে: মির্জা ফখরুল

হঠাৎ করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।

তিনি বলেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করে উনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। উনার অনেক অসুখ আছে যা আমরা বার বার জাতির কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকার কোনো কেয়ার করেনি।

‘উনার জীবন ‍হুমকির মুখে। এটা এরা (সরকার) ইনটেনশনালি করছে বলে আমরা মনে করি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন এটা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে যে, দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। তার প্রতি যে অন্যায় করা হচ্ছে, চরম অন্যায়… এটা একটা উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এভাবে আটকে রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।’

‘আজকে তিনি হাসপাতালে এসেছেন। হঠাৎ হঠাৎ করে আসতে হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন যে, কয়েকদিন আগেও তাকে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। এটা ক্রমাগত অত্যন্ত জটিল অসুখগুলো তাকে আক্রমণ করেছে। সেক্ষেত্রে আমরা বার বার বলেছি যে, তার চিকিৎসাটা দরকার বিদেশে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। কিন্তু দু্র্ভাগ্যজনক হচ্ছে তারা (সরকার) প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না।’

সোমবার ভোরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ‘হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধায়নে কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।

এর আগে গত ২৩ জুন খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডে ‘পেসমেকার’ বসানো হয়। ২২ জুন গভীর রাতে গুলশানের বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সে বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) তাকে ভর্তি করা হয়। পরদিনই তার হৃদপিন্ডে পেসমেকার বসানো হয়। পরে গত ২ জুলাই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

গতবছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্ব বিশেষ চিকিৎসকদের তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান।

দুপুর ১২টায় মির্জা ফখরুল এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার বিষয়ে অবহিত হন।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ম্যাডামকে চব্বিশ ঘণ্টা মনিটর করছেন চিকিৎসকরা। নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন চলবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আমরা করছি। ভবিষ্যতে আরও আন্দোলন হবে। আমরা চেষ্টা করব এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার।

‘কিন্তু কতটা অমানবিক এরা যে তারা বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে চায় না। তারা এমন এমন কথা বলে যে, উনার সঠিক চিকিৎসা…. সঠিক চিকিৎসা তো উনার কোনো মতেই হচ্ছে না। যারা বাইরের থেকে চিকিৎসা দিতে এসেছিলেন তারা পর্যন্ত বলেছেন, শি নিডস সার্জারি আউট সাইড দ্যা কান্ট্রি। যেখানে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি ট্রিটমেন্টটা হয় এখন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে … আমি চিকিৎসক নই যে, বলতেও পারব না। তবে যেটা বুঝি যদি তাকে অতিদ্রুত মুক্তি দিলে আমরা স্বাস্থ্যে ব্যাপারটা দেখতে পারি যাতে তিনি সেখানে যেতে পারে, চিকিৎসা নিতে পারেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করি। কখনোই আমরা কখনোই অগণতান্ত্রিক পথে কোনো কিছু করতে চাই না। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে যে, এটাতে সাড়া দিয়ে তার মুক্তির ব্যবস্থা করা জরুরি প্রয়োজন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

পীরগঞ্জে  পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে: মির্জা ফখরুল

আপডেট টাইম ০৫:২১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

হঠাৎ করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।

তিনি বলেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করে উনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। উনার অনেক অসুখ আছে যা আমরা বার বার জাতির কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকার কোনো কেয়ার করেনি।

‘উনার জীবন ‍হুমকির মুখে। এটা এরা (সরকার) ইনটেনশনালি করছে বলে আমরা মনে করি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন এটা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে যে, দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। তার প্রতি যে অন্যায় করা হচ্ছে, চরম অন্যায়… এটা একটা উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এভাবে আটকে রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।’

‘আজকে তিনি হাসপাতালে এসেছেন। হঠাৎ হঠাৎ করে আসতে হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন যে, কয়েকদিন আগেও তাকে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। এটা ক্রমাগত অত্যন্ত জটিল অসুখগুলো তাকে আক্রমণ করেছে। সেক্ষেত্রে আমরা বার বার বলেছি যে, তার চিকিৎসাটা দরকার বিদেশে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। কিন্তু দু্র্ভাগ্যজনক হচ্ছে তারা (সরকার) প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না।’

সোমবার ভোরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ‘হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধায়নে কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।

এর আগে গত ২৩ জুন খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডে ‘পেসমেকার’ বসানো হয়। ২২ জুন গভীর রাতে গুলশানের বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সে বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) তাকে ভর্তি করা হয়। পরদিনই তার হৃদপিন্ডে পেসমেকার বসানো হয়। পরে গত ২ জুলাই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

গতবছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্ব বিশেষ চিকিৎসকদের তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান।

দুপুর ১২টায় মির্জা ফখরুল এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার বিষয়ে অবহিত হন।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ম্যাডামকে চব্বিশ ঘণ্টা মনিটর করছেন চিকিৎসকরা। নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন চলবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আন্দোলন আমরা করছি। ভবিষ্যতে আরও আন্দোলন হবে। আমরা চেষ্টা করব এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার।

‘কিন্তু কতটা অমানবিক এরা যে তারা বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে চায় না। তারা এমন এমন কথা বলে যে, উনার সঠিক চিকিৎসা…. সঠিক চিকিৎসা তো উনার কোনো মতেই হচ্ছে না। যারা বাইরের থেকে চিকিৎসা দিতে এসেছিলেন তারা পর্যন্ত বলেছেন, শি নিডস সার্জারি আউট সাইড দ্যা কান্ট্রি। যেখানে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি ট্রিটমেন্টটা হয় এখন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে … আমি চিকিৎসক নই যে, বলতেও পারব না। তবে যেটা বুঝি যদি তাকে অতিদ্রুত মুক্তি দিলে আমরা স্বাস্থ্যে ব্যাপারটা দেখতে পারি যাতে তিনি সেখানে যেতে পারে, চিকিৎসা নিতে পারেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করি। কখনোই আমরা কখনোই অগণতান্ত্রিক পথে কোনো কিছু করতে চাই না। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে যে, এটাতে সাড়া দিয়ে তার মুক্তির ব্যবস্থা করা জরুরি প্রয়োজন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।