আজম রেহমান,সারাদিন ডেস্ক::সৌদি আরবে কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার আরও ৪০ নারী দেশে ফিরছেন। রোববার রাত নয়টার দিকে ‘এয়ার অ্যারাবিয়ার’ উড়োজাহাজে তারা দেশে আসেন।
এর আগে গত ১৮ ও ১৯ মে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছিলেন ৮৯ নির্যাতিত বাংলাদেশি নারী কর্মী।
ব্র্যাক অভিবাসনের কর্মকর্তা আলামিন নয়ন জানিয়েছেন, ৪০ নারী কর্মী এক সঙ্গে দেশে ফিরেছেন। তাদের অনেকেই শারিরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার। বেশির ভাগই বেতন পাননি। নির্যাতন সইতে না পেরে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৪০ নারীর তিনজন ফিরেছেন ব্র্যাকের আবেদনে।
দেশে ফেরা নারীরা জানিয়েছেন, ভাল বেতনে কাজের আশায় তারা সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কিন্তু দেশটিতে যাওয়ার পর নির্যাতন, নিপীড়ন শুরু হয়। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গিয়েছিলেন, তারা দায়দায়িত্ব নেয়নি। তাই পালিয়ে দূতাবাসে আশ্রয় নেন।
প্রায় চার হাজার নারী কর্মস্থলে নির্যাতনের শিকার হয়ে গত বছরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরেন। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ফিরেছেন আরো হাজের খানেক মেয়ে।
যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি নির্যাতনের শিকার এ নারীদের সৌদি আরব পাঠিয়ে ছিল, তাদের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। দেশে ফেরা নারীরা দাবি জানালেন, রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। এজেন্সিগুলোকে তাদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিদেশ নিয়ে ‘বিক্রি ‘ করে দিয়েছিল।
গত বছর ৫৪ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরব যান। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে গিয়েছেন আরো অন্তত ৫০ হাজারে মেয়ে।
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী, নারী কর্মীরা বিনাখরচে দেশটিতে যান। একজন নারী কর্মী পাঠিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির আয় হয় দুই হাজার ডলার। এ কারণে এজেন্সিগুলো মুনাফার লোভে কর্মপরিবেশ যাচাই না করেই কর্মী পাঠায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
দেশে ফেরা নারীদের অনেকের শরীরে রয়েছে নির্যাতনের চিহ্ন। এক নারী জানান, সৌদি আরবের রিয়াদের এক বাড়িতে কাজ করতেন। নিয়মিত খাবার দিত না। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হতো। কাজে ভুল হলে মারধর করা হতো। বকেয়া বেতন চাইলেও নির্যাতন করা হতো।