অনলাইন ডেস্ক::কঙ্গোতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক রৌশন আরা। কঙ্গোর স্থানীয় সময় রবিবার (৫ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সোমবার (৬ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা। তিনি জানান, দেশটির কিনশাসা নামক স্থানে স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রৌশন আরা বেগমকে বহনকারী গাড়ির চালকসহ বাকি দুজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিশের এসপি (কমান্ডার) ফারজানাও রয়েছেন। সোহেল রানা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে তার ক্ষতি অপূরণীয়। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।
গত ৩ মে রৌশন আরা বেগম মিশনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। কঙ্গোতে পৌঁছেন ৪ মে। আর ৫ মে অর্থাৎ সেখানে পৌঁছানোর পরদিনই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার প্রাণ গেল। বাংলাদেশ পুলিশে দ্বিতীয় নারী হিসেবে রৌশন আরা বেগম এআইজিপি পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। তিনি পিপিএম, এনডিসি ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ১৯৯৮-২০০০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ডেপুটি কমিশনার, অ্যাডিশনাল কমিশনার এবং ভারপ্রাপ্ত কমিশনার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। রৌশন আরা বেগম জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কসোভো এবং সুদানে কৃতিত্বের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে জাতিসংঘ পদকে ভূষিত হন। তিনি ক্রাইম অ্যানালাইসিস কর্মকর্তা হিসেবে কসোভো শান্তিরক্ষা মিশনে এবং চিফ অব স্টাফ হিসেবে সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে পুলিশে তিনি তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দুইবার আইজিপি ব্যাচ এবং বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন। রৌশন আরা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন্স নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের সাবেক সভাপতি ছিলেন। আইএডব্লিউপি’র ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। তিনি এক কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন।