আলাপের শুরুতেই শাকিলা জানান, গত কয়েক বছর ধরে স্বামী রবি শর্মার সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ ঘুরে সময় পার করছেন। আপাতত সংগীত পরিবেশনা থেকে সাময়িক বিরতিতে রয়েছেন তিনি। কেন তার এই চিরচেনা জগৎ থেকে বিরতি জানতে চাইলে শাকিলা অনেকটা অভিমান করে বলেন, কি হবে আর গান বাজনা করে! এদেশে ক’জন প্রকৃত শিল্পীর মূল্যায়ন হয়েছে। শুধু যে বাংলাদেশেই সংগীতের ধস নেমেছে তা নয়, সারা বিশ্বে এর অবক্ষয় চলছে। আর আমার সংগীত ক্যারিয়ার নিয়ে একটা দুঃখবোধ যে, বাংলাদেশের বিখ্যাত অনেক সুরকার গীতিকারই অডিও বলেন, প্লেব্যাক বলেন কোনো মাধ্যমেই ঠিকভাবে আমাকে সুযোগ করে দেননি। বঞ্চিত করা হয়েছে ভালো ভালো গান থেকে। কথাপ্রসঙ্গে শাকিলা আরো বলেন, আজকাল বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে গানের প্রোগ্রাম দেখলে মনে হয় দেশে কি সংগীতশিল্পীর আকাল চলছে! অবশ্য সব শিল্পীর ব্যাপারে একথা প্রযোজ্য নয়। তথাকথিত শিল্পীদের কারণে সত্যিকারের শিল্পীরা এখন অবহেলিত। যা দেশের সংগীতাঙ্গনের জন্য দারুণ হতাশার। বর্তমানে গানের যে কথা আল্লাহ মাফ করেন। কিছু অসাধু মানুষের জন্য দেশের সংগীতে জগতে অশ্লীলতা ঢুকে পড়েছে। আর আজকাল অনেক শিল্পীই গানের চেয়ে তাদের হেয়ারস্টাইল, ড্রেস, মেকাপের প্রতি যত্নশীল বেশি। এখন দেশে যে ধরনের গান তৈরি হচ্ছে এবং শিল্পীরা গাইছেন সেসব ক’জন শ্রোতা মনে রাখতে পারছেন? এদিকে শিল্পীরা এখন প্রকৃত সম্মান প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে শাকিলা মনে করেন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে বলেন যে, প্রয়াত সুবীর নন্দীকে সরকারের পক্ষ থেকে যে সম্মান ও সহযোগিতা জানানো হয়েছে তা ব্যাপক প্রশংসার দাবিদার। আলাপচারিতায় শাকিলা জানান, কয়েকবছর ধরে তিনি দিল্লিতে থাকলেও একমাস পরপর দেশে আসেন। সে সময় নিকটজনদের সময় দেন। এ কথার সূত্র ধরে তার কাছে জানতে হয়, সে সময় কোনো গানের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন কি? এ প্রশ্নের উত্তরে শাকিলা বলেন, তেমন কোনো ডাকই তো পাই না গান করার জন্য। আর যেসব অফার আসে সেগুলো ব্যাটে-বলে মিলে না বলে করা হয় না। আপনি তো এ দেশের ব্যাপক জনপ্রিয় একজন শিল্পী। এত জনপ্রিয়তাকে পেছনে ফেলে হঠাৎ পরবাসী হওয়া কষ্ট দেয় না? অবশ্যই কষ্ট দেয়, ভাবায়। এদিকে বরাবরের মতো এবরো ঢাকায় এসে শাকিলা পারিবারিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মা, বোন অসুস্থ। তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাচ্ছেন। একমাত্র সন্তান মুফরাদকে সময় দিচ্ছেন।