সারাদিন ডেস্ক:: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, । একইভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। অথচ বিএনপির লোকজন বলছেন, ক্ষমতায় এসে নাকি শেখ হাসিনা তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলো প্রত্যাহার করেছেন। এটা বিএনপির মিথ্যাচার।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে মাহবুবুল আলম হানিফ এই বক্তব্য রাখেন। ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর পটিয়ার জনসভা সফল করতে চট্টগ্রামের তিনটি সাংগঠনিক জেলা আওয়ামী লীগ গতকাল নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই বর্ধিত সভার আয়োজন করে।
বর্ধিত সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগের আমলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরছিলেন। এ সময় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা দাঁড়িয়ে চট্টগ্রাম নগরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আহ্বানের দাবি জানান। তখন তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পটিয়ায় (মফস্বল) জনসভা করবেন। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম নগর এবং উত্তর জেলায় অনুরূপ জনসভা করা হবে। এ ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান। বক্তব্য দিয়ে তিনি বেলা ১১টার দিকে বর্ধিত সভাস্থল ত্যাগ করেন।
বেলা একটায় বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলো হয়েছিল। খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর বিএনপি নেতারা বলছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নাকি প্রধানমন্ত্রীর মামলাগুলো প্রত্যাহার করেছে। আর খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার না করায় তিনি নাকি জেলে আছেন। এটা বিএনপির মিথ্যাচার। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা প্রত্যাহার হয়নি। হাইকোর্টে কোয়াশমেন্টের (খারিজ) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। কারণ, তাঁর মামলার কোনো মেরিট (ভিত্তি) ছিল না, সে জন্য হাইকোর্ট খালাস দিয়েছেন। খালেদা জিয়াও হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। ভৈরব সেতু নির্মাণে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের মেরিট ছিল না। তাই হাইকোর্টে কোয়াশমেন্টের মাধ্যমে ওই অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
জামায়াতের সমালোচনা করে মাহবুবুল আলম বলেন, আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই-এটা জামায়াতের স্লোগান ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের এই দলটি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন সৎ লোকের শাসন কি কায়েম হয়েছিল? আইনগতভাবে স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত এখনো জোটবদ্ধ। যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার এ দেশে নেই।
মাহবুবুল আলম বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুর্নীতিবাজ। এই দুর্নীতিবাজদের বিএনপির অনেক নেতা পছন্দ করেন না। বেগম জিয়া যাতে জেল থেকে বের হতে না পারেন সেটা বিএনপির অনেক নেতা চান।
দেশে অস্থিরতার পেছনে তারেক রহমান লন্ডন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন বলে মাহবুবুল আলমের অভিযোগ। তিনি বলেন, লন্ডনে বসে তারেক জিয়া গুম, গুপ্তহত্যা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছেন। তাঁর মতো সন্ত্রাসীর হাতে দেশবাসী জিম্মি থাকতে পারে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, পটিয়ায় জনসভা সফল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তবে কক্সবাজারের জাতীয় সড়কে যান চলাচলের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কোনোভাবে গাড়ি চলাচল যেন ব্যাহত না হয়। নইলে কিছু পত্রিকা ও সুশীল লোকজন প্রশ্ন তুলবে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। এতে বক্তব্য দেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাংসদ আফছারুল আমীন, সামশুল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবং ওয়াসিকা আয়শা খানম প্রমুখ।