ঢাকা ১১:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুশান্তের মৃত্যুতেও ‘নারীবাদ’ খুঁজে পেলেন তসলিমা

বিনোদন ডেস্ক::গত ১৪ জুন নিজের ফ্ল্যাটে বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা- সেটা এখনও পরিস্কার নয়। এই তরুণ প্রতিভাবান অভিনেতার মৃত্যুতে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জনগন এমনকী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররাও শোকাহত। তবে নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন মনে করেন, সুশান্ত সিং রাজপুত পুরুষ বলেই তার মৃত্যু নিয়ে এত শোরগোল হচ্ছে। বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী শ্রীদেবী কিংবা জিয়া খানদের মৃত্যুর পর এত আলোচনা হয়নি। যদিও উল্লেখিত দুই অভিনেত্রীর মৃত্যু নিয়েই তুমুল আলোচনা এমনকী পুলিশী তদন্ত হয়েছে।

আজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে তসলিমা লিখেছেন, সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। ওকে কেউ হত্যা করেছে, নাকি নিজেই ফাঁসিতে ঝুলেছে, যদি এ আত্মহত্যাই হয় তবে কারণ কী তার, স্বজনপোষণ নাকি অন্য কিছু ? পুলিশ কোনও খুনের আলামত পাচ্ছে না, কিন্তু বিতর্ক থামছে না। হোমড়া চোমড়াদের জিজ্ঞাসাবাদে নিচ্ছে পুলিশ।

জিয়া খান তো আত্মহত্যা করেছিল, কই তার ওই আত্মহত্যা আসলেই আত্মহত্যা কিনা, নাকি কেউ তাকে হত্যা করেছিল, এ নিয়ে কোনও তোলপাড় তো হয়নি। সবচেয়ে অবাক হই, শ্রীদেবীর মতো বিখ্যাত অভিনেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়েও কোনও সংশয় প্রকাশ করেনি বড় কোনও মিডিয়া। আগের দিন নাচলেন মানুষটা৷ পরের দিন বাথটাবের জলে ডুবে মরে গেলেন! ঘরে একজন উপস্থিত ছিলেন সেসময়। ডেথ সার্টিফিকেটেও আনাড়ি হাতে লেখা ছিল। এ নিয়ে কাউকে জেরা করা হয়নি। বিদেশের মাটিতে মারা গেলেই কি জবাবদিহি করতে হয় না, আর সাত খুন মাফ হয়ে যায়?

পুরুষেরা আত্মহত্যা করলে সহজে বিশ্বাস করা হয় না এ আত্মহত্যা, মেয়েরা আত্মহত্যা করলে এ আত্মহত্যা বলেই মানুষ চটজলদি বিশ্বাস করে ফেলে। কারণ তো ওই একই, মেয়েদের হৃদয় এত কোমল,তাদের এত আবেগ, তারা পারে না বাস্তবতার মুখোমুখি হতে।কত মেয়েকেই তো হত্যা করা হয়, কত মেয়েকেই তো আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে সমাজ। এসব নিয়ে কি সত্যিই তোলপাড় হয়? হয়তো মেয়েদের জীবনকে মূল্যহীন ভাবা হয় বলে তাদের মৃত্যুকেও মূল্যহীন ভাবা হয়। সাধারণ মেয়েদের অপঘাতে মৃত্যু হলে কেউ পরোয়া করে না, অসাধারণ মেয়েদের বেলায় অনেকটা তাই। কিছু কিছু ব্যাতিক্রম নিশ্চয়ই আছে।

আজ টুইটারে আমি এই প্রশ্নটি করেছিলাম, সুশান্তর বেলায় প্রশ্ন উঠছে হত্যা না আত্মহত্যা, শ্রীদেবীর বেলায় কেন প্রশ্ন ওঠেনি হত্যা না ড্রাউনিং? একজন বল্লেন, বয়সটা ম্যাটার করছে। শ্রীদেবীর বয়স বেশি, কেরিয়ারের শেষ। সুশান্তের অল্প বয়স,কেরিয়ারের শুরু। তাই বুঝি? জিয়া খানের বয়স তো সুশান্তের চেয়েও কম ছিল, তাতে কী হয়েছে!

শ্রীদেবীর বয়স বেশি বলে তেমন কোনও তরংগ সৃষ্টি হয়নি! অমিতাভের তো বয়স শ্রীদেবীর চেয়েও বেশি। আজ তিনি গত হলে মানুষ হাউমাউ করে কাঁদবে না? শুধু কি কাঁদবেই! সুশান্তর জন্য কত ছেলে মেয়ে আত্মহত্যা করে ফেললো, অমিতাভর জন্য তো আরো বেশি করবে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

সুশান্তের মৃত্যুতেও ‘নারীবাদ’ খুঁজে পেলেন তসলিমা

আপডেট টাইম ১১:৫৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই ২০২০

বিনোদন ডেস্ক::গত ১৪ জুন নিজের ফ্ল্যাটে বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা- সেটা এখনও পরিস্কার নয়। এই তরুণ প্রতিভাবান অভিনেতার মৃত্যুতে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জনগন এমনকী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররাও শোকাহত। তবে নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন মনে করেন, সুশান্ত সিং রাজপুত পুরুষ বলেই তার মৃত্যু নিয়ে এত শোরগোল হচ্ছে। বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী শ্রীদেবী কিংবা জিয়া খানদের মৃত্যুর পর এত আলোচনা হয়নি। যদিও উল্লেখিত দুই অভিনেত্রীর মৃত্যু নিয়েই তুমুল আলোচনা এমনকী পুলিশী তদন্ত হয়েছে।

আজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে তসলিমা লিখেছেন, সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। ওকে কেউ হত্যা করেছে, নাকি নিজেই ফাঁসিতে ঝুলেছে, যদি এ আত্মহত্যাই হয় তবে কারণ কী তার, স্বজনপোষণ নাকি অন্য কিছু ? পুলিশ কোনও খুনের আলামত পাচ্ছে না, কিন্তু বিতর্ক থামছে না। হোমড়া চোমড়াদের জিজ্ঞাসাবাদে নিচ্ছে পুলিশ।

জিয়া খান তো আত্মহত্যা করেছিল, কই তার ওই আত্মহত্যা আসলেই আত্মহত্যা কিনা, নাকি কেউ তাকে হত্যা করেছিল, এ নিয়ে কোনও তোলপাড় তো হয়নি। সবচেয়ে অবাক হই, শ্রীদেবীর মতো বিখ্যাত অভিনেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়েও কোনও সংশয় প্রকাশ করেনি বড় কোনও মিডিয়া। আগের দিন নাচলেন মানুষটা৷ পরের দিন বাথটাবের জলে ডুবে মরে গেলেন! ঘরে একজন উপস্থিত ছিলেন সেসময়। ডেথ সার্টিফিকেটেও আনাড়ি হাতে লেখা ছিল। এ নিয়ে কাউকে জেরা করা হয়নি। বিদেশের মাটিতে মারা গেলেই কি জবাবদিহি করতে হয় না, আর সাত খুন মাফ হয়ে যায়?

পুরুষেরা আত্মহত্যা করলে সহজে বিশ্বাস করা হয় না এ আত্মহত্যা, মেয়েরা আত্মহত্যা করলে এ আত্মহত্যা বলেই মানুষ চটজলদি বিশ্বাস করে ফেলে। কারণ তো ওই একই, মেয়েদের হৃদয় এত কোমল,তাদের এত আবেগ, তারা পারে না বাস্তবতার মুখোমুখি হতে।কত মেয়েকেই তো হত্যা করা হয়, কত মেয়েকেই তো আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে সমাজ। এসব নিয়ে কি সত্যিই তোলপাড় হয়? হয়তো মেয়েদের জীবনকে মূল্যহীন ভাবা হয় বলে তাদের মৃত্যুকেও মূল্যহীন ভাবা হয়। সাধারণ মেয়েদের অপঘাতে মৃত্যু হলে কেউ পরোয়া করে না, অসাধারণ মেয়েদের বেলায় অনেকটা তাই। কিছু কিছু ব্যাতিক্রম নিশ্চয়ই আছে।

আজ টুইটারে আমি এই প্রশ্নটি করেছিলাম, সুশান্তর বেলায় প্রশ্ন উঠছে হত্যা না আত্মহত্যা, শ্রীদেবীর বেলায় কেন প্রশ্ন ওঠেনি হত্যা না ড্রাউনিং? একজন বল্লেন, বয়সটা ম্যাটার করছে। শ্রীদেবীর বয়স বেশি, কেরিয়ারের শেষ। সুশান্তের অল্প বয়স,কেরিয়ারের শুরু। তাই বুঝি? জিয়া খানের বয়স তো সুশান্তের চেয়েও কম ছিল, তাতে কী হয়েছে!

শ্রীদেবীর বয়স বেশি বলে তেমন কোনও তরংগ সৃষ্টি হয়নি! অমিতাভের তো বয়স শ্রীদেবীর চেয়েও বেশি। আজ তিনি গত হলে মানুষ হাউমাউ করে কাঁদবে না? শুধু কি কাঁদবেই! সুশান্তর জন্য কত ছেলে মেয়ে আত্মহত্যা করে ফেললো, অমিতাভর জন্য তো আরো বেশি করবে।