ঢাকা ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ

৫০ বছরেও গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা মুক্ত হয়নি: রেহমান সোবহান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার:: বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমাদের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা মুক্ত হয়নি। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ও মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। আমরা শুধু স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু মুক্তি এখনও পাইনি।’
শুক্রবার রাজধানীর রমনায় অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) আয়োজিত বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত।
সরকারের উদ্দেশে রেহমান সোবহান বলেন, ‘একটি সঠিক বণ্টন ন্যায্যতা সৃষ্টি করতে হবে। যেমন- কৃষক পণ্য উৎপাদন করে কিছুই পাচ্ছে না, আর  যারা কিছুই করছে না তারা ভোগ করছে প্রচুর। বাজার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। বাজার অর্থনীতিতে প্রচুর বৈষম্য রয়েছে।’
অধ্যাপক সোবহান বলেন, ‘এখনও অন্যায্য সরকার ব্যবস্থার মধ্যে আমরা রয়েছি।

শাসন পদ্ধতি ন্যায়সঙ্গত নয়। পুরো ব্যবস্থায়ও একটি অন্যায্য সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। অর্থনীতিতেও সেটা প্রকট। ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপি সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে।’

তিনি আরও  বলেন, ‘সরকারি ভূমি ব্যবস্থা ঠিক নেই। দরিদ্র মানুষের খাস জমি বড় প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করে বসে রয়েছে। প্রান্তিক মানুষ সেটার সুফল পাচ্ছে না, যেটা তাদের পাওয়ার কথা।’

সভাপতির বক্তৃতায় ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘রাষ্ট্রের আইনি শাসন কাঠামো ঠিক নেই। গরিবদের শোষণ করা হচ্ছে, ধনীদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এখনও দরিদ্রদের ঋণের নামে অরাজকতা চলছে দেশে। ক্ষুদ্র ঋণের নামে কয়েকগুণ অর্থ আদায় হচ্ছে। এমনকি ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ডের নামে ৫০ শতাংশ মুনাফা নিচ্ছে।’

আবুল বারকাত বলেন, ‘দেশে যত মামলা রয়েছে, তার ৮০ ভাগ জমি সংক্রান্ত। একেকটি মামলা চলে দীর্ঘসময়। সেসব মামলায় যারা জেতেন, তাদের জমির দামের চেয়ে বেশি ব্যয় হয়ে যায় মামলার খরচ চালাতে। ফলে যিনি মামলায় জেতেন তিনিও আর্থিকভাবে হারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাধ্যতামূলক সমবায়ের কথা বলার পরে বঙ্গবন্ধু কিন্তু বেশিদিন বাঁচেননি। কারণ, তখন আওয়ামী লীগ নেতারাও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন।’

আবুল বারাকাত বলেন, অনেকে কোনও সম্পদ সৃষ্টি না করেই অন্যের সম্পদ জবরদখল করে চলছে। সেগুলোর সুষ্ঠু বণ্টন করতে হবে। আমরা এখন যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি, তা বঙ্গবন্ধু প্রণীত সংবিধানের পরিপন্থী। এমন পরিস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও পরিপন্থী।’

বঙ্গবন্ধু খাস জমি গরিব মানুষকে দিয়ে সমবায় করতে চেয়েছিলেন, সে সিদ্ধান্ত তার জন্য ক্ষতিকর ছিল বলে উল্লেখ করেন আবুল বারকাত।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

৫০ বছরেও গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা মুক্ত হয়নি: রেহমান সোবহান

আপডেট টাইম ১১:৩৮:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

অর্থনৈতিক রিপোর্টার:: বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমাদের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা মুক্ত হয়নি। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ও মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। আমরা শুধু স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু মুক্তি এখনও পাইনি।’
শুক্রবার রাজধানীর রমনায় অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) আয়োজিত বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত।
সরকারের উদ্দেশে রেহমান সোবহান বলেন, ‘একটি সঠিক বণ্টন ন্যায্যতা সৃষ্টি করতে হবে। যেমন- কৃষক পণ্য উৎপাদন করে কিছুই পাচ্ছে না, আর  যারা কিছুই করছে না তারা ভোগ করছে প্রচুর। বাজার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। বাজার অর্থনীতিতে প্রচুর বৈষম্য রয়েছে।’
অধ্যাপক সোবহান বলেন, ‘এখনও অন্যায্য সরকার ব্যবস্থার মধ্যে আমরা রয়েছি।

শাসন পদ্ধতি ন্যায়সঙ্গত নয়। পুরো ব্যবস্থায়ও একটি অন্যায্য সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। অর্থনীতিতেও সেটা প্রকট। ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপি সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে।’

তিনি আরও  বলেন, ‘সরকারি ভূমি ব্যবস্থা ঠিক নেই। দরিদ্র মানুষের খাস জমি বড় প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করে বসে রয়েছে। প্রান্তিক মানুষ সেটার সুফল পাচ্ছে না, যেটা তাদের পাওয়ার কথা।’

সভাপতির বক্তৃতায় ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘রাষ্ট্রের আইনি শাসন কাঠামো ঠিক নেই। গরিবদের শোষণ করা হচ্ছে, ধনীদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এখনও দরিদ্রদের ঋণের নামে অরাজকতা চলছে দেশে। ক্ষুদ্র ঋণের নামে কয়েকগুণ অর্থ আদায় হচ্ছে। এমনকি ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ডের নামে ৫০ শতাংশ মুনাফা নিচ্ছে।’

আবুল বারকাত বলেন, ‘দেশে যত মামলা রয়েছে, তার ৮০ ভাগ জমি সংক্রান্ত। একেকটি মামলা চলে দীর্ঘসময়। সেসব মামলায় যারা জেতেন, তাদের জমির দামের চেয়ে বেশি ব্যয় হয়ে যায় মামলার খরচ চালাতে। ফলে যিনি মামলায় জেতেন তিনিও আর্থিকভাবে হারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাধ্যতামূলক সমবায়ের কথা বলার পরে বঙ্গবন্ধু কিন্তু বেশিদিন বাঁচেননি। কারণ, তখন আওয়ামী লীগ নেতারাও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন।’

আবুল বারাকাত বলেন, অনেকে কোনও সম্পদ সৃষ্টি না করেই অন্যের সম্পদ জবরদখল করে চলছে। সেগুলোর সুষ্ঠু বণ্টন করতে হবে। আমরা এখন যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি, তা বঙ্গবন্ধু প্রণীত সংবিধানের পরিপন্থী। এমন পরিস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও পরিপন্থী।’

বঙ্গবন্ধু খাস জমি গরিব মানুষকে দিয়ে সমবায় করতে চেয়েছিলেন, সে সিদ্ধান্ত তার জন্য ক্ষতিকর ছিল বলে উল্লেখ করেন আবুল বারকাত।