কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বাংলাদেশে সৃষ্ট অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে ভারত- এমটাই জানালেন দেশটির বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। সেই সঙ্গে তিনি বললেন- এটি একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত আশা করে, বাংলাদেশে দ্রুতই শান্তি ফিরে আসবে। বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র। ‘বাংলাদেশে ছাত্রছাত্রীদের রক্ত ঝরছে’ মর্মে মমতার ওই মন্তব্যের লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলো বাংলাদেশ সরকার। মুখপাত্র জসওয়াল বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কূটনৈতিক স্তরে সেই প্রতিবাদপত্র ভারতের কাছে পৌঁছেছে। ২১শে জুলাই মমতা কলকতার এক সমাবেশে বাংলাদেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেউ নিরুপায় হয়ে আশ্রয় চাইলে তাকে ফিরিয়ে না দেয়ার ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় সংবিধানে বলা আছে, পররাষ্ট্র-সংক্রান্ত সবকিছুই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। কাজেই পররাষ্ট্র-সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো রাজ্য সরকারেরই বিন্দুমাত্র এখতিয়ার নেই। যা রাজ্যের বিষয় নয়, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের মাথা ঘামানোর কিছু নেই।
ব্রিফিংয়ে জসওয়ালের কাছে বাংলাদেশ সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জানতে চান, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কিনা? আন্দোলনে ভারতবিরোধী স্লোগান শোনা গেছে। সে বিষয়ে ভারত উদ্বিগ্ন কিনা এবং সহিংস আন্দোলনে কারা মদত দিয়েছে, সে বিষয়ে ভারতের কাছে কোনো তথ্য আছে কিনা? তবে এসব প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান জসওয়াল। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুবই দৃঢ়, উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ। এ সময় জসওয়াল আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৭০০-এর বেশি ভারতীয় নিরাপদে দেশে ফিরেছেন। তিনি জানান, নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য ভারতীয় হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশন ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন চালু রেখেছে। তবে সেখানে যা চলছে, তা সম্পূর্ণভাবে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের আশা, খুব শিগগির বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। এ সময় ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।