মোসলিমা খাতুন,সারাদিন ডেস্ক:: কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট প্রস্তাব রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অবিলম্বে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যেতে দেওয়া। তাঁদের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ জন্য সর্বোত্তম ব্যবস্থা হচ্ছে, অবিলম্বে খালেদা জিয়ার প্রাপ্য তাঁকে জামিন দিয়ে মুক্তি দিয়ে তাঁর চিকিৎসার জন্য তাঁকে বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারণ, আপনারা জানেন যে, ইতিমধ্যে তিনি যে চিকিৎসাগুলো নিয়েছেন সবই প্রায় বিদেশে চিকিৎসা করেছেন। সেটার ফলোআপ করাটা অত্যন্ত জরুরি।’
ফখরুল বলেন, ‘আজকে যে পরিবেশে তাঁকে রাখা হয়েছে, সেটা তাঁর প্রাপ্য নয় এবং এতে করে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার প্রধান প্রতিপক্ষ মনে করে তাঁকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সর্বশেষ, তাঁকে একটি মামলায় সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ রাখা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে জামিনটি পর্যন্ত কার্যকর করা হচ্ছে না। যেভাবেই হোক, তাঁকে কারারুদ্ধ করে রাখার জন্য প্রতিটি বিষয়কে বিলম্বিত করা হচ্ছে। কারামুক্তিকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। ফখরুলের ভাষ্য, এই প্রক্রিয়া প্রথম শুরু হয়েছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। রাজনীতিকে একটি স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে এসে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণভাবে স্তব্ধ করে দিতে চায়।
মির্জা ফখরুল এ কথাও বলেন, খালেদা জিয়াকে একটি পরিত্যক্ত, জীর্ণ, স্যাঁতসেঁতে ভবনে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো বন্দী নেই। তাঁর প্রতি ন্যূনতম সৌজন্যবোধ না দেখিয়ে জেলে নেওয়ার প্রথম তিন দিন তাঁকে কোনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি। ফখরুল বলেন, ‘এখন যে তাঁকে (খালেদা জিয়া) ডিভিশন দেওয়া হয়েছে, সেখানেও তাঁর যে প্রাপ্য, তিনি পাচ্ছেন কি না, আমরা জানি না।’
চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা প্রথমত তাঁর মুক্তির দাবি করছি। এরপর তিনি ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি দেশে নাকি দেশের বাইরে চিকিৎসা নেবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।