সারাদিন ডেস্ক::ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জন্য রেলওয়ের ভূমিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি দেখিয়ে ক্ষতিপূরণের নামে সরকারের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে পাঁচ মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৬ কর্মকর্তাসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। দুদকের উপ-পরিচালক (মিডিয়া) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এর মধ্যে রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও ও বড় মগবাজার এলাকায় অধিগ্রহণ করা রেলওয়ের জমিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দেখিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়। সরকারি জমিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দেখিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা আদায় করা হয়। আদায় করা টাকা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৬ কর্মকর্তাসহ ১২ জন ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করেন। অভিযোগ পেয়ে দুদক টিম অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ৫টি মামলা করা হয়। মামলাগুলোতে ৬ ভূমি কর্মকর্তাসহ ১২ জনকে আসামি করেছে সংস্থাটি। মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।
মামলার আসামিদের মধ্যে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার (বর্তমানে ধামরাই উপজেলায় কর্মরত) মো. কবির হোসেন, সাবেক কানুনগো (বর্তমানে গাজীপুর উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো) চৌধুরী গোলাম মর্তুজা, অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত ভূমি অধি গ্রহণ কর্মকর্তা পরমানন্দ পাল, সার্ভেয়ার মো. ওয়াসিম খান, মো. মুজিবুল হক ও মো. আফজাল হোসেন। এছাড়া ভূমির কথিত মালিক রাজধানীর পূর্ব নাখালপাড়ার বাসিন্দা সাজেদা খানম, পশ্চিম মগবাজারের বাসিন্দা মোছা. কোহিনূর কাদের, মহাখালী দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মো. জাহিদুল হক, ফার্মগেইট এলাকার পূর্ব রাজাবাজারের বাসিন্দা মো. সৈয়দুজ্জামান পিন্টু ও তার ভাই মো. আরমানুল ইসলাম এবং পূর্ব নাখালপাড়ার বাসিন্দা শেখ মজিবুর রহমান। প্রত্যেককে একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূমিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন অধিগ্রহণভুক্ত ভূমি দেখিয়ে ক্ষতিপূরণের নামে সরকারের মোট তিন কোটি ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৮৮৬ টাকা অতিরিক্ত উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, মামলা তদন্ত শুরু করেছে কমিশনের নিয়োগ করা তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্তে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ও জালিয়াতীতে আরও কারও জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেলে তাদেরও অভিযোগপত্র দেয়ার সময় আসামি করা হবে। এজাহারভুক্ত আসামিদের প্রয়োজন মনে করা হলে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করবে দুদক।