ঢাকা ০৬:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তথ্য দিতে গড়িমসি নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির পাহাড়সম অভিযোগ

মো.মোশাররফ হোসেন:: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মোঃ তকদির আলী সরকার এর বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সীমাহিন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতা ও নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা পরিপন্থি কার্যক্রমের পাহাড়সম অভিযোগ উঠেছে।
১৮ মার্চ ২০১৯ ইং তারিখে পীরগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা অধিকাংশ প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের কাছ থেকে ৭০০ থেকে ১হাজার/১৫শ’ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে অনেক অযোগ্য ও রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী কাজের সাথে সম্পৃক্ত অনেককেই নির্বাচনী দায়িত্ব দিয়ে নির্বাচনী শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
এছাড়া অনেক কর্মকর্তা ও কর্মীচারীকে গত ১২ ও ১৩ মার্চ ২০১৯ ইং তারিখে পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ ও সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরেও অনেককে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া হয়নি। নির্বাচনী প্রশিক্ষনে ৯১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩শ৯১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার অংশ গ্রহন করলেও এই কর্মকর্তা ৯১ এর স্থলে ৯৬ এবং ৩৯১ এর স্থলে ৪৯৯ জেকে উপস্থিত দেখিয়ে মাথাপিছু ৫শ’ টাকা করে উত্তালন করে আত্নসাৎ করেছেন। একইভাবে পুলিং অফিসারদের বেলায়ও একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি করা হয়। আবার অনেককে প্রশিক্ষণ না দিয়ে তাদেরকে কাগজ কলমে প্রশিক্ষণ দেখিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ভাতা আত্মসাৎ করেছেন বলে কয়েকজন ভুক্ত ভোগী এ তথ্য জানান। নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়ার নামে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ মার্চ গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচন অফিসে কয়েক লক্ষ টাকার ঘুষ লেনদেন হয়েছে। নির্বাচণে চৌকশ, দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব না দিয়ে প্রার্থীর মনোনীত অদক্ষ অযোগ্যদের দায়িত্ব দিয়ে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন এবং সুষ্টু নির্বাচনের বারোটা বাজিয়েছেন। দেখা গেছে কোন অফিস থেকে প্রেরিত নামের তালিকায় নাম না থাকা সত্বেও তিনি মনগড়াভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসার তকদির আলী সরকার কতিপয় দালাল নিযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে এবং কখনও কখনও তিনি নিজেই ঘুষ নিয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব দিয়েছেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। এছাড়া ৭৬টি ভোট কেন্দ্রে পরিবহণ খাতে যে বরাদ্দ ধরা হয়েছে পরিবহণ মালিকদের পরিবহণ খরচ না দিয়ে অধিকাংশ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে একাধিক ট্রাক্টর মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানান। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অনিয়ম, দূর্নীতি, সরকারি অর্থ লোপাট করা সহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ইচ্ছকৃত ভাবে নির্বাচন কে প্রশ্নবিদ্ধ ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যে অনেক অযোগ্য ও দলীয় পরিচয় ধারী লোককে প্রিজাইডিং অফিসার সহ অন্যান্য পদে নিয়োগ দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সহ বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকজন সাংবাদিক তথ্য অধিকার আইনে নির্ধারিত ফরমে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়ে তার কাছে আবেদন নিয়ে গেলে তিনি তা গ্রহনে অপারগতা প্রকাশ করে জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন। পরে আবেদনকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তথ্য পেতে ইউএনও অফিসে আবেদন দাখিল করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী দূর্নিতীবাজ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তার দূর্নীতীর মূলোতপাটন সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

তথ্য দিতে গড়িমসি নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির পাহাড়সম অভিযোগ

আপডেট টাইম ০৯:২৬:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০১৯

মো.মোশাররফ হোসেন:: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মোঃ তকদির আলী সরকার এর বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সীমাহিন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতা ও নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা পরিপন্থি কার্যক্রমের পাহাড়সম অভিযোগ উঠেছে।
১৮ মার্চ ২০১৯ ইং তারিখে পীরগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা অধিকাংশ প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের কাছ থেকে ৭০০ থেকে ১হাজার/১৫শ’ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে অনেক অযোগ্য ও রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী কাজের সাথে সম্পৃক্ত অনেককেই নির্বাচনী দায়িত্ব দিয়ে নির্বাচনী শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
এছাড়া অনেক কর্মকর্তা ও কর্মীচারীকে গত ১২ ও ১৩ মার্চ ২০১৯ ইং তারিখে পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ ও সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরেও অনেককে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া হয়নি। নির্বাচনী প্রশিক্ষনে ৯১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩শ৯১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার অংশ গ্রহন করলেও এই কর্মকর্তা ৯১ এর স্থলে ৯৬ এবং ৩৯১ এর স্থলে ৪৯৯ জেকে উপস্থিত দেখিয়ে মাথাপিছু ৫শ’ টাকা করে উত্তালন করে আত্নসাৎ করেছেন। একইভাবে পুলিং অফিসারদের বেলায়ও একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি করা হয়। আবার অনেককে প্রশিক্ষণ না দিয়ে তাদেরকে কাগজ কলমে প্রশিক্ষণ দেখিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ভাতা আত্মসাৎ করেছেন বলে কয়েকজন ভুক্ত ভোগী এ তথ্য জানান। নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়ার নামে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ মার্চ গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচন অফিসে কয়েক লক্ষ টাকার ঘুষ লেনদেন হয়েছে। নির্বাচণে চৌকশ, দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব না দিয়ে প্রার্থীর মনোনীত অদক্ষ অযোগ্যদের দায়িত্ব দিয়ে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন এবং সুষ্টু নির্বাচনের বারোটা বাজিয়েছেন। দেখা গেছে কোন অফিস থেকে প্রেরিত নামের তালিকায় নাম না থাকা সত্বেও তিনি মনগড়াভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিসার তকদির আলী সরকার কতিপয় দালাল নিযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে এবং কখনও কখনও তিনি নিজেই ঘুষ নিয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব দিয়েছেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। এছাড়া ৭৬টি ভোট কেন্দ্রে পরিবহণ খাতে যে বরাদ্দ ধরা হয়েছে পরিবহণ মালিকদের পরিবহণ খরচ না দিয়ে অধিকাংশ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে একাধিক ট্রাক্টর মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানান। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অনিয়ম, দূর্নীতি, সরকারি অর্থ লোপাট করা সহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ইচ্ছকৃত ভাবে নির্বাচন কে প্রশ্নবিদ্ধ ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যে অনেক অযোগ্য ও দলীয় পরিচয় ধারী লোককে প্রিজাইডিং অফিসার সহ অন্যান্য পদে নিয়োগ দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সহ বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকজন সাংবাদিক তথ্য অধিকার আইনে নির্ধারিত ফরমে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়ে তার কাছে আবেদন নিয়ে গেলে তিনি তা গ্রহনে অপারগতা প্রকাশ করে জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন। পরে আবেদনকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তথ্য পেতে ইউএনও অফিসে আবেদন দাখিল করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী দূর্নিতীবাজ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তার দূর্নীতীর মূলোতপাটন সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।