নিজস্ব প্রতিবেদক::নানা অসঙ্গতির অভিযোগ এনে এবার ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আলটিমেটাম দিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। আগামী এক মাসের মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে থাকা অসঙ্গতি দূর না করলে ৮ জুন জোট ছাড়বে তার দল।
বৃহস্পতিবার মতিঝিলে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান কাদের সিদ্দিকী।বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য শপথ নেয়ার প্রতিবাদেই এ আলটিমেটাম দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, গত বছরের ১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। সেই বছর ৫ নভেম্বর আমরা ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এ জোটে নির্বাচনের পর অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন পরবর্তী কিছু কিছু কাজে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তারা সঠিকভাবে চলতে পারেনি। নির্বাচনী সহিংসতায় আহত-নিহতদের পাশে দাঁড়াতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট। সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল শাহবাগে গণজামায়াত করতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা।
তিনি অভিযোগ করেন, ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে জঘন্য নাটক হয়েছে। যা শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর কোনও দেশেই এমন নাটকের নজির নেই। কিন্তু জোট নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার পরও গণফোরামের সুলতান মুনসুর শপথ নিলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর মোকাব্বির খান শপথ নিলে তাকে গেট আউট বলেন ড. কামাল হোসেন। পরে দেখা যায় গণফোরামের বিশেষ সভায় মোকাব্বির খান উপস্থিত। এ সব নিয়ে মানুষের মধ্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। মানুষ এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা জবাব দিতে পারি না।
তিনি বলেন, বিএনপির তথাকথিত নির্বাচিত ছয় জনের মধ্যে প্রথম যখন একজন শপথ নিলেন, তখন তাকে বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তীতে চার জন যখন শপথ নিলেন তাদের স্বাগত জানানো হলো। কিন্তু মির্জা ফখরুল শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকলেন। এসব মানুষকে বিভ্রান্ত করে। মানুষের কাছে এসবের জবাব দিতে হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আল্টিমেটাম দেওয়ার আগে জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মহসিন মন্টুর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের জোটের মধ্যকার অসঙ্গতি কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আজ আমাদের দলের বর্ধিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পরবর্তী পর্যায়ে যে সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়নি, বিশেষ করে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে এবং সেই ফ্রন্টের সাত জন কারও সঙ্গে আলোচনা না করে শপথ নিয়েছে, কেন ঐক্যফ্রন্ট পরিচালনায় এতো দুর্বলতা ও সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আমরা জোটকে এক মাস সময় দিয়েছি।
ভোটারবিহীন নির্বাচনে অংশ নিয়ে যারা সংসদে গেছেন ভবিষ্যতে এরা সবাই মির জাফরের চাইতেও ঘৃণীত মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও উল্লেখ করেন জোটের এই নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার।