ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
গণ-হত্যাকারী, সন্ত্রাশী, দুর্নীতিবাজদের বিএনপিতে জায়গা হবে না : মির্জা ফখরুল দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম

শিশু বিবাহ বন্ধের এক নির্ভীক সৈনিক সাংবাদিক আসিফ ইমরান

স্টাফ রির্পোটার: শুধু শিশুবিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টাই নয়, সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করতে গত ১৩ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন যে মানুষটি তিনি হলেন সাংবাদিক আসিফ ইমরান (আপেল বসুনীয়া)।
ডোমার উপজেলার বেশীর ভাগ মানুষ তাকে শিশুবিবাহ বন্ধের এক নির্ভীক সৈনিক হিসাবে মনে করেন। উপজেলার কোথাও শিশুবিবাহের সংবাদ পেলেই সাংবাদিক আপেল ছুটে যান ঘটনাস্থলে। এ কাজের স্বীকৃতি সরূপ তিনি গার্ল পাওয়ার মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১৩ ও ২০১৪ পুরস্কৃত হয়েছেন।
সাংবাদিক আপেল ২০০৬ সাল থেকে শিশুবিবাহ বন্ধে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রথম প্রথম তাকে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াতে হতো। মোকাবেলা করতে হতো নানান প্রতিকুলতার। পরে তার সংগ্রামের সাথী হয়ে দাড়িয়েছেন গার্ল পাওয়ারের সিভিল সোসাইটি অরগানাইজেশন (সিএসও) কমিটির সদস্যরা।
তার প্রচেষ্টা সংগ্রামে আরো সামিল হয়েছেন নীলফামারী জেলার বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন ইউএসএসের গার্ল পাওয়ার প্রকল্প। ২০১১ সালে গার্ল পাওয়ার প্রকল্প ডোমার উপজেলায় কাজ শুরু করে। সংবাদ সংগ্রহের সুবাদেই পরিচয় হয় এ প্রকল্পের টেকনিক্যাল অফিসার মঞ্জুরুল ইসলামের সাথে। আপেলের অভিজ্ঞতা ও এই সম্পর্কিত কর্মকান্ড এবং তার প্রবল ইচ্ছা তাকে এই সংস্থার সাথে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়।
২০১৪ সালে গার্ল পাওয়ারের সিভিল সোসাইটি অরগানাইজেশন (সিএসও) সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। সিএসও,ইউনিয়ন পরিষদ,এলাকাবাসী,ইউএনও,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় সাংবাদিক আপেল সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৭ টি বাল্য বিবাহের অনুষ্ঠান বন্ধ করেছেন।
আপেলের মতে শিশু বিবাহ বাধা সৃষ্টির কারনে অভিভাবকরা আরো যে অপরাধটি করে তা হচ্ছে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন বিয়ে। এমন ঘটনা ঘটেছে অনেক। সুখের কথা হচ্ছে আপেলের নিজ ইউনিয়ন কেতকীবাড়ী শিশুবিবাহ মুক্ত ইউনিয়ন হিসাবে ঘোষিত হয়েছে।
আপেল জানান, গার্ল পাওয়ার তাকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিহত,শিশু বিবাহ প্রতিরোধ এ বিষয়গুলিতে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ গ্রহনের সুযোগ করে দিয়েছে। এ সব প্রশিক্ষণ পেয়ে তিনি এখন উপজেলায় ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাংবাদিক আপেল শিশু বিবাহ বন্ধে যে ভাবে কাজ করেন- কোথাও শিশু-বিবাহের কথা শুনলে আগে অভিভাবকদের বুঝাতে চেষ্টা করেন। তার কথা না শুনলে তিনি ছুটে যান স্থানীয় চেয়ারম্যান এর কাছে। তাৎক্ষনিক জানান মহিলা বিষয়ক কর্মকতা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। তবে সকল প্রতিকূলতার পাশ কাটিয়ে আপেল এগিয়ে চলছে তার গন্তব্যে।
কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল হক দিপু বলেন- “আমাদের ইউনিয়নের ছেলে আপেল শিশু-বিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রেরণা। তার এই ইচ্ছাশক্তি ও বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে আমাদের ইউনিয়নে শিশুবিবাহের হার প্রায় শুন্যের কোঠায়।
ডোমার উপজেলার পূর্বের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিউর রহমান ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরন্নাহার শাহজাদী জানান- আমরা ডোমার উপজেলায় থাকাকালীন “শিশুবিয়ের সংবাদ বেশী ভাগ আপেলের মাধ্যমেই পেয়ে ছিলাম।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নারী ও শিশু প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টারের এক কর্মকতা জানান- শিশু-বিয়ে প্রতিরোধের সাহায্য পেতে সাংবাদিক আপেল বসুনীয়া আমাদের হেল্প লাইনে ফোনের মাধ্যমে অনেক বিয়ে বন্ধ করতে স্বাক্ষম হয়েছেন। তার এই পদক্ষেপে আমরা তার পাশে আছি।
Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

গণ-হত্যাকারী, সন্ত্রাশী, দুর্নীতিবাজদের বিএনপিতে জায়গা হবে না : মির্জা ফখরুল

শিশু বিবাহ বন্ধের এক নির্ভীক সৈনিক সাংবাদিক আসিফ ইমরান

আপডেট টাইম ১১:৩৫:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯
স্টাফ রির্পোটার: শুধু শিশুবিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টাই নয়, সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করতে গত ১৩ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন যে মানুষটি তিনি হলেন সাংবাদিক আসিফ ইমরান (আপেল বসুনীয়া)।
ডোমার উপজেলার বেশীর ভাগ মানুষ তাকে শিশুবিবাহ বন্ধের এক নির্ভীক সৈনিক হিসাবে মনে করেন। উপজেলার কোথাও শিশুবিবাহের সংবাদ পেলেই সাংবাদিক আপেল ছুটে যান ঘটনাস্থলে। এ কাজের স্বীকৃতি সরূপ তিনি গার্ল পাওয়ার মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১৩ ও ২০১৪ পুরস্কৃত হয়েছেন।
সাংবাদিক আপেল ২০০৬ সাল থেকে শিশুবিবাহ বন্ধে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রথম প্রথম তাকে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াতে হতো। মোকাবেলা করতে হতো নানান প্রতিকুলতার। পরে তার সংগ্রামের সাথী হয়ে দাড়িয়েছেন গার্ল পাওয়ারের সিভিল সোসাইটি অরগানাইজেশন (সিএসও) কমিটির সদস্যরা।
তার প্রচেষ্টা সংগ্রামে আরো সামিল হয়েছেন নীলফামারী জেলার বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন ইউএসএসের গার্ল পাওয়ার প্রকল্প। ২০১১ সালে গার্ল পাওয়ার প্রকল্প ডোমার উপজেলায় কাজ শুরু করে। সংবাদ সংগ্রহের সুবাদেই পরিচয় হয় এ প্রকল্পের টেকনিক্যাল অফিসার মঞ্জুরুল ইসলামের সাথে। আপেলের অভিজ্ঞতা ও এই সম্পর্কিত কর্মকান্ড এবং তার প্রবল ইচ্ছা তাকে এই সংস্থার সাথে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়।
২০১৪ সালে গার্ল পাওয়ারের সিভিল সোসাইটি অরগানাইজেশন (সিএসও) সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। সিএসও,ইউনিয়ন পরিষদ,এলাকাবাসী,ইউএনও,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় সাংবাদিক আপেল সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৭ টি বাল্য বিবাহের অনুষ্ঠান বন্ধ করেছেন।
আপেলের মতে শিশু বিবাহ বাধা সৃষ্টির কারনে অভিভাবকরা আরো যে অপরাধটি করে তা হচ্ছে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন বিয়ে। এমন ঘটনা ঘটেছে অনেক। সুখের কথা হচ্ছে আপেলের নিজ ইউনিয়ন কেতকীবাড়ী শিশুবিবাহ মুক্ত ইউনিয়ন হিসাবে ঘোষিত হয়েছে।
আপেল জানান, গার্ল পাওয়ার তাকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিহত,শিশু বিবাহ প্রতিরোধ এ বিষয়গুলিতে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ গ্রহনের সুযোগ করে দিয়েছে। এ সব প্রশিক্ষণ পেয়ে তিনি এখন উপজেলায় ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাংবাদিক আপেল শিশু বিবাহ বন্ধে যে ভাবে কাজ করেন- কোথাও শিশু-বিবাহের কথা শুনলে আগে অভিভাবকদের বুঝাতে চেষ্টা করেন। তার কথা না শুনলে তিনি ছুটে যান স্থানীয় চেয়ারম্যান এর কাছে। তাৎক্ষনিক জানান মহিলা বিষয়ক কর্মকতা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। তবে সকল প্রতিকূলতার পাশ কাটিয়ে আপেল এগিয়ে চলছে তার গন্তব্যে।
কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল হক দিপু বলেন- “আমাদের ইউনিয়নের ছেলে আপেল শিশু-বিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রেরণা। তার এই ইচ্ছাশক্তি ও বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে আমাদের ইউনিয়নে শিশুবিবাহের হার প্রায় শুন্যের কোঠায়।
ডোমার উপজেলার পূর্বের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিউর রহমান ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরন্নাহার শাহজাদী জানান- আমরা ডোমার উপজেলায় থাকাকালীন “শিশুবিয়ের সংবাদ বেশী ভাগ আপেলের মাধ্যমেই পেয়ে ছিলাম।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নারী ও শিশু প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টারের এক কর্মকতা জানান- শিশু-বিয়ে প্রতিরোধের সাহায্য পেতে সাংবাদিক আপেল বসুনীয়া আমাদের হেল্প লাইনে ফোনের মাধ্যমে অনেক বিয়ে বন্ধ করতে স্বাক্ষম হয়েছেন। তার এই পদক্ষেপে আমরা তার পাশে আছি।