তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা নিজেদের মর্জি ও প্রয়োজন মাফিক নানা মিথ্যা কাহিনী রচনা করে বিএনপির আরও অনেক নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীদের নামে কলঙ্ক লেপনের উদ্দেশ্যে নানাধরণের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার করবে। তিনি বলেন, এভাবে রক্তপায়ী দৈত্যরা ওত পেতে বসে আছে, ইঙ্গিতের অপেক্ষায়। জুলুমশাহীর হিং আঁচড়ে জর্জর এখন বিরোধী মত, পথ ও দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী নাৎসীবাদের বিভৎস দৃষ্টান্ত হাসান মামুনের গ্রেপ্তার। আমি হাসান মামুনকে গ্রেপ্তার ও তার বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার নি:শর্ত মুক্তি দাবি করছি।
রিজভী আহমেদ বলেন, ক্ষমতাসীনদেরকে বলতে চাই-পরিবর্তনের ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, মধ্যরাতের নির্বাচনের পরেও সরকারের ভেতর থেকে শঙ্কা দুরীভূত হচ্ছে না। সুষ্ঠু ও সর্বজনমান্য নির্বাচনকে পাথরচাপা দেয়ার পরেও তারা নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করছে না। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে ডিজিটাল দুর্বৃত্তপনার কোন শেষ নেই। বিশ্বব্যাপী পরিত্যক্ত ইভিএম পদ্ধতিকে নিয়ে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার এটি নিয়ে আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার প্রমান বগুড়ায় আসন্ন নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ভোটাররা এই ইভিএম প্রক্রিয়ার জটিলতায় বেশী ভোট দিতে সক্ষম হয় না। অতীতে দেখা গেছে যে, ইভিএম জটিলতার জন্য ভোটাররা ভোট দিতে এসে লাইনে দিনভর দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিতে না পেরে ফিরে গেছে। যেহেতু বগুড়াতে ধানের শীষের ভোট বেশী সেহেতু প্রতিটি কেন্দ্রেই পরিকল্পিতভাবে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে ইভিএম প্রক্রিয়ায় আরও বেশী জালিয়াতি করা সম্ভব। এর আগে ভোটারের বদলে প্রিজাইডিং অফিসার ইভিএম মেশিনের বোতাম চেপে ভোট চুরি করেছে। ইভিএম-এর কোন পেপার ট্রেইল না থাকায় ভোট দেয়া-না দেয়ার কোন প্রমাণ থাকে না। ভারতের অনেক জায়গায় ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ হলেও সেখানে সকল বিরোধী দল এটির তীব্র প্রতিবাদ করেছে, হাইকোর্টে মামলাও আছে। যদিও সেদেশের ইভিএম-এ পেপার ট্রেইল ছিল। বাংলাদেশে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো- এই ইভিএম মেশিন দ্বারা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে দুরবর্তী স্থানে থেকেও ভোট ডাকাতি করা সম্ভব। ইভিএম নিয়ে সরকারের আগ্রহের আরেকটি মূল কারণ হচ্ছে এই মেশিন ক্রয়ে ব্যাপক দুর্নীতির সুযোগ দিয়ে কিছু ব্যক্তিকে লাভবান করা। একটি ইভিএম মেশিনের দাম ৪০ হাজার টাকার মতো পড়ে, অথচ নির্বাচন কমিশন সেই মেশিন কিনছে ২ লক্ষ টাকায়। অর্থাৎ কৌশলে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঘুষ দিয়ে মিডনাইট নির্বাচনকে সফল করা। আমি এই ইভিএম পদ্ধতির তীব্র্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের জোর দাবি করছি।
এ সময় তিনি বলেন, রোববার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শফিউদ্দিন সেন্টুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমি তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল হক নান্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।