সারাদিন ডেস্ক::জনপ্রিয়তায় ‘এগিয়ে’ থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও আমানুর রহমান খান রানা এবার দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
অবশ্য মনোনয়ন তাদের ঘরেই থাকছে। কক্সবাজার-৪ আসনে (টেকনাফ-উখিয়া) বদির জায়গায় তার স্ত্রী শাহীনা আক্তার চৌধুরী এবং টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে রানার জায়গায় তার বাবা আতাউর রহমান খানকে এবার নৌকার দায়িত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বর্তমান এমপি-মন্ত্রীদের কারও কারও মনোনয়নের তালিকা থেকে বাদ পড়ার যে খবর সংবাদমাধ্যমে আসছে, সে বিষয়ে কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে তিনি বলেন, “কোন মন্ত্রী খারাপ আমাকে বলুন। কীভাবে মেজার করব? বেইজটা কী যে ওমুক খারাপ লোক? তারপরও যাদের নিয়ে বিতর্ক আছে… দুটি সিটের কথা বলতে পারি, একটি হচ্ছে উখিয়া-টেখনাফ, সেখানে বদিকে ড্রপ করে তার স্ত্রীকে মনোনয়ন দিচ্ছে, যদিও আমরা এখনও ঘোষণা করিনি।
বিতর্কের কারণে বদিকে বাদ দিলেও তার ঘরেই কেন মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্নে কাদের বলেন, “ঘরে কি সবাই অপরাধী? আপনি অপরাধী হলে কি পরিবারের সব খারাপ লোক? বদি সম্পর্কে যে কন্ট্রোভার্সি আছে, তার কোনো প্রমাণ আছে? তবু কন্ট্রোভার্সি থাকায় অলটারনেটিভ বেছে নিয়েছি।”
বদির পাশাপাশি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের এমপি রানাকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কাদের বলেন, “একটি মার্ডারের অভিযোগে রানা জেলে আছে, সার্ভে রিপোর্টে রানা ও বদি অনেক ব্যবধানে এগিয়ে আছে।… রানার বাবা জেলা আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আতাউর রহমান খান মনোনয়ন পাচ্ছেন।”
২০০৮ সালে প্রথমবারের মত আওয়ামী লীগ টিকেটে এমপি হন বদি। এরপর ইয়াবা পাচারের হোতা হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় তার নাম এলেও তাতে ২০১৪ সালে তার দ্বিতীয় দফা মনোনয়ন আটকায়নি।
দুর্নীতির এক মামলায় ২০১৬ সালে ক্ষমতাসীন দলের এই এমপিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত। ওই মামলা বর্তমানে হাই কোর্টে বিচারাধীন।
অন্যদিকে টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা আমানুর রহমান খান রানা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে প্রভাবশালী খান পরিবারের সদস্য রানা ২০১২ সালের উপনির্বাচনে ঘাটাইল আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
কিন্তু এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর দল তাকে আবারও কাছে টেনে নেয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবার এমপি হন তিনি।
এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অন্তত তিন ডজন মামলা হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি হত্যা মামলা।