সারাদিন ডেস্ক::এক ‘গোপন বৈঠকের’ খবর দিয়ে প্রশাসন ও পুলিশের কিছু কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি আবারও জানিয়েছে বিএনপি।শনিবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই দাবি জানান। তিনি বলেন, “প্রশাসন ও পুলিশের বিতর্কিত ও দলবাজ কর্মকর্তারা জনসমর্থনহীন আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় বসানোর জন্য নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। প্রতিনিয়ত তাদের গোপন বৈঠক চলছে। গত ২০ নভেম্বর রাতে ঢাকার বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবের চার তলায় পেছনের কনফারেন্স রুমে এমনই এক বৈঠক হয় বলে দাবি করেন রিজভী। তার দাবি, ওই বৈঠকে ইসি সচিবসহ বেশ কয়েকজন সচিব এবং র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।রিজভী বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন সূত্রে এই খবর এসেছে। রাত সাড়ে ৭টা থেকে আড়াই ঘণ্টার ওই বৈঠকে সারাদেশে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সেটআপ ও প্ল্যান রিভিউ করা হয়।সারাদেশে ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং করার লক্ষ্যে যে ৬ জন সচিবকে নিয়ে একটি গুপ্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে; সেই কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে। ইসি সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, ডিএমপি কমিশনারসহ বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসককে সরানোর দাবি জানিয়ে ইসিতে চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। বিএনপির ভাষায়, ‘নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী’ এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে সরকারের নির্দেশে কাজ করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বানোয়াট খবর দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সিইসি কে এম নূরুল হুদা শনিবারই সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসন ও পুলিশ ইসির নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে এবং আইন অনুযায়ী কাজ করছে। রিজভী বলেন, “তফসিল ঘোষণার পরও আওয়ামী প্রশাসনিক দাপটের ছবিটা মোটেও বদলায়নি। বিএনপি যাদের লিস্ট দিয়েছে ওই দলবাজ কর্মকর্তাদের সরাতে। নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে কাজ করছে বলেই এই অভিযোগগুলোকে থেকে ছিটকে আসা কাদা তারা ঠেকাতে পারে নাই। আমরা আবারও বলতে চাই, বিতর্কিত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে আনতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে তাদেরকে প্রত্যাহার করতে হবে। সম্প্রতি কারাগারে যাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান রিজভী।গত ২১ নভেম্বর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে গোয়েন্দা পুলিশ রমনা থানা ছাত্রদলের নেতা মো. মাসুদ রানাকে তুলে নিয়েও স্বীকার করছে না বলে দাবি করেন তিনি।কিশোরগঞ্জে মনোনয়ন প্রত্যাশী শরীফুল আলমসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন জেলায় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার চিত্রও তুলে ধরেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা মুনির হোসেন, শরীফুল আলম, আবদুল আউয়াল খান, হারুনুর রশীদ, আশরাফউদ্দিন বকুল উপস্থিত ছিলেন।