ঢাকা ০৭:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ঠাকুরগাঁওয়ে সাবেক দুই এমপিসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে শিল্পপতির চাঁদাবাজী মামলা ‘সেভ পীরগঞ্জ’ গ্রুপের সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে ভারতে যাওয়ার সময় দানাজপুর সীমান্তে ৩ টি মোটর সাইকেল সহ ৪ যুবক আটক ঠাকুরগাঁওয়ে মাষ্টারপাড়া জামে মসজিদ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন মানবজমিনের রেজাউল পীরগঞ্জে শতবর্ষী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নিতীর হোতাদের বিচারের দাবীতে ছাত্র জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ মুসলিমদের উপর যে তান্ডব চলেছে, হিন্দুদের উপর তার ছিটেফোটাও হয়নি- হিন্দু বৌদ্ধ কৃষ্টান কল্রান ফান্ত ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলো ঢাকা মেডিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় ‘বেঁধে দিলেন’ কাদের সিদ্দিকী! পদত্যাগ করছেন প্রধান বিচারপতি বুয়েটে আবরার হত্যা, ছাত্ররাজনীতি নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ

এই আস্ফালনের হেতু কি? রানীশংকৈলে সাংবাদিক শাওনের বিরুদ্ধে মেয়র সমর্থকদের বিক্ষোভ

সারাদিন ডেস্ক::রানীশংকৈল পৌরসভার মেয়র আলমগীর সরকার তার আওতাধীন জাইকার রাস্তা নির্মানে অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক খুরশিদ আলম শাওনকে ‘কেটে ফেলার’ হুমকি দেয়ার পর এবার তাকে স্থানীয় প্রেসক্লাব থেকে বের করে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে বলেন, তাকে বের করুন না হলে ‘আমি একদিনে ২১ হাজার সাংবাদিক বানাবো’ তখন সাংবাদিকরা নিজেরাই মারামারি করে মরবেন, আমাদের দরকার হবেনা।
রোববার রাণীশংকৈল উপজেলা পরিষদের বারান্দায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র আলমগীর সরকার বলেন, ‘এরকম সাংবাদিক,যাকে আমি সাংবাদিক মনেই করিনা সে অনিয়মের কথা বলছে। তাই বিষয়টার সূত্র ধরে তার রাস্তার বরাত ধরে সে এ কাজটা করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁধা সৃষ্টি করছে। এটাই হলো আসল কথা।

তিনি তার দীর্ঘ ব্ক্তৃতায় আরো বলেন, সাংবাদিকরা কি ফেরেস্তা যে, যা লিখবেন তাই সত্য হবে? আমি বলতে চাচ্ছি, আপনারা যারা এখানে (রাণীশংকৈলে) সাংবাদিক আছেন তারা বুক ফুলিয়ে অনিয়মের কথা লিখেন। অন্যায় হলে লিখবেন বুক ফুলিয়ে লিখবেন। এখানে প্রেসক্লাবের যারা সাংবাদিক আছেন তাকে (শাওনকে) বহিস্কার করেন।
আপনারা ঠাকুরগাঁও থেকে আসেন রাস্তায় যান লিখেন। যদি কাজের ত্রুটি থাকে তাহলে মেয়র পদ ছেড়ে দিব।

মেয়র বলেন, শাওনের মত সাংবাদিকরা ভাটায় টাকা পায়; আমি সব সাংবাদিকদের বলছি না। আমাদের কয়েকটা সাংবাদিক আছে; কই ওরা তো লিখে না। আপনি বিএনপি করেন তাই আওয়ামী লীগের কেমন করে দুর্নাম করা যায় এটা করেন। আসল ঘটনাগুলো কেন লিখেন না। আসল আসল ঘটনাগুলো লিখেন। এতগুলা রাস্তা হচ্ছে সেখানে সমস্যা নাই; আর আমার রাস্তায় সমস্যা।

এ সময় রানীশংকৈল পৌর বাসির পক্ষে খুরশিদ আলম শাওন সাংবাদিকের বিচার দাবি করে ৪৮ জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ ইউএনও বরাবর দাখিল করে। প্রতিবাদ সভায় মেয়র আলমগীর সরকার বলেন, জাইকার নবিদেপ প্রকল্পের কাজে কোনো অনিয়ম হয়না। নিয়ম মাফিক কাজ না হলে সংশ্লিষ্ঠ্য ঠিকাদার কে বিল দেওয়া হয় না।

মেয়র আলমগীর বলেন, যারা প্রেসক্লাবে আছেন ঐরকম সাংবাদিককে (শাওন) বাদ দিয়ে দেন। নাহলে একদিনে ২১ হাজার সাংবাদিক তৈরি করব আমি। সাংবাদিক হবে ঘরে ঘরে। আমাদেরও লোক আছে; সাংবাদিকের কার্ড করতে কয় টাকা লাগে সেটা আমরা জানি। ২১ হাজার সাংবাদিক আমরা তৈরি করতে পারব।
আপনারা সাংবাদিক, যান জাইকার রাস্তায়; ওখানে তিনটা রাস্তা হচ্ছে। কোনটা ইটে রাস্তায় কি সমস্যা দেখেন। অন্য রাস্তায় উপজেলার মোস্তাকের রাস্তায় যান অর্ধেক ইট দিয়ে রাস্তা হচ্ছে। কেন মোস্তাককে ভয় পান; ভাটা ওলা টাকা ওলা, সে টাকা দিয়ে দিল। কেন ওটা লিখেন না। কোটি কোটি টাকা ইনকাম করছে এটাত কেউ লিখেনা।

মেয়র বলেন, আমি ইউএনও সাহেবকে বলতে চাই; আপনি এখানে একটা অনুষ্ঠান করতেছেন; দুইটা গাছের ডাল কাটছেন; যেন অনুষ্ঠানটা হয়। কিন্তু এরকম একটা সাংবাদিক আপনার বিরুদ্ধে লিখছে গাছের ডাল কাটে ইউএনও শেষ করে দিল। ইউএনও গাছের ডাল কাটে কি করবে খড়ি হবে; ইউএনও’র কি টাকা নাই। এরকম সাংবাদিকদের যদি রাখেন তাহলে তো সমস্যা। ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকতা না করে এখানে আসেন; আপনি বস না কস দেখার দরকার নাই; আপনি এখানে আসেন। আপনার বস আমাদের ঢাকায় বসে আছে। মেয়রের সমগ্র বক্তৃতা জুড়ে ক্ষমতার দাপট আর আস্ফালন। সামগ্রিকভাবে মেয়রের এমন বক্তব্যে সাংবাদিক শাওনের নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছে। বিষয়ট এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

ঠাকুরগাঁওয়ে সাবেক দুই এমপিসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে শিল্পপতির চাঁদাবাজী মামলা

এই আস্ফালনের হেতু কি? রানীশংকৈলে সাংবাদিক শাওনের বিরুদ্ধে মেয়র সমর্থকদের বিক্ষোভ

আপডেট টাইম ০৩:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

সারাদিন ডেস্ক::রানীশংকৈল পৌরসভার মেয়র আলমগীর সরকার তার আওতাধীন জাইকার রাস্তা নির্মানে অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক খুরশিদ আলম শাওনকে ‘কেটে ফেলার’ হুমকি দেয়ার পর এবার তাকে স্থানীয় প্রেসক্লাব থেকে বের করে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে বলেন, তাকে বের করুন না হলে ‘আমি একদিনে ২১ হাজার সাংবাদিক বানাবো’ তখন সাংবাদিকরা নিজেরাই মারামারি করে মরবেন, আমাদের দরকার হবেনা।
রোববার রাণীশংকৈল উপজেলা পরিষদের বারান্দায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র আলমগীর সরকার বলেন, ‘এরকম সাংবাদিক,যাকে আমি সাংবাদিক মনেই করিনা সে অনিয়মের কথা বলছে। তাই বিষয়টার সূত্র ধরে তার রাস্তার বরাত ধরে সে এ কাজটা করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁধা সৃষ্টি করছে। এটাই হলো আসল কথা।

তিনি তার দীর্ঘ ব্ক্তৃতায় আরো বলেন, সাংবাদিকরা কি ফেরেস্তা যে, যা লিখবেন তাই সত্য হবে? আমি বলতে চাচ্ছি, আপনারা যারা এখানে (রাণীশংকৈলে) সাংবাদিক আছেন তারা বুক ফুলিয়ে অনিয়মের কথা লিখেন। অন্যায় হলে লিখবেন বুক ফুলিয়ে লিখবেন। এখানে প্রেসক্লাবের যারা সাংবাদিক আছেন তাকে (শাওনকে) বহিস্কার করেন।
আপনারা ঠাকুরগাঁও থেকে আসেন রাস্তায় যান লিখেন। যদি কাজের ত্রুটি থাকে তাহলে মেয়র পদ ছেড়ে দিব।

মেয়র বলেন, শাওনের মত সাংবাদিকরা ভাটায় টাকা পায়; আমি সব সাংবাদিকদের বলছি না। আমাদের কয়েকটা সাংবাদিক আছে; কই ওরা তো লিখে না। আপনি বিএনপি করেন তাই আওয়ামী লীগের কেমন করে দুর্নাম করা যায় এটা করেন। আসল ঘটনাগুলো কেন লিখেন না। আসল আসল ঘটনাগুলো লিখেন। এতগুলা রাস্তা হচ্ছে সেখানে সমস্যা নাই; আর আমার রাস্তায় সমস্যা।

এ সময় রানীশংকৈল পৌর বাসির পক্ষে খুরশিদ আলম শাওন সাংবাদিকের বিচার দাবি করে ৪৮ জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ ইউএনও বরাবর দাখিল করে। প্রতিবাদ সভায় মেয়র আলমগীর সরকার বলেন, জাইকার নবিদেপ প্রকল্পের কাজে কোনো অনিয়ম হয়না। নিয়ম মাফিক কাজ না হলে সংশ্লিষ্ঠ্য ঠিকাদার কে বিল দেওয়া হয় না।

মেয়র আলমগীর বলেন, যারা প্রেসক্লাবে আছেন ঐরকম সাংবাদিককে (শাওন) বাদ দিয়ে দেন। নাহলে একদিনে ২১ হাজার সাংবাদিক তৈরি করব আমি। সাংবাদিক হবে ঘরে ঘরে। আমাদেরও লোক আছে; সাংবাদিকের কার্ড করতে কয় টাকা লাগে সেটা আমরা জানি। ২১ হাজার সাংবাদিক আমরা তৈরি করতে পারব।
আপনারা সাংবাদিক, যান জাইকার রাস্তায়; ওখানে তিনটা রাস্তা হচ্ছে। কোনটা ইটে রাস্তায় কি সমস্যা দেখেন। অন্য রাস্তায় উপজেলার মোস্তাকের রাস্তায় যান অর্ধেক ইট দিয়ে রাস্তা হচ্ছে। কেন মোস্তাককে ভয় পান; ভাটা ওলা টাকা ওলা, সে টাকা দিয়ে দিল। কেন ওটা লিখেন না। কোটি কোটি টাকা ইনকাম করছে এটাত কেউ লিখেনা।

মেয়র বলেন, আমি ইউএনও সাহেবকে বলতে চাই; আপনি এখানে একটা অনুষ্ঠান করতেছেন; দুইটা গাছের ডাল কাটছেন; যেন অনুষ্ঠানটা হয়। কিন্তু এরকম একটা সাংবাদিক আপনার বিরুদ্ধে লিখছে গাছের ডাল কাটে ইউএনও শেষ করে দিল। ইউএনও গাছের ডাল কাটে কি করবে খড়ি হবে; ইউএনও’র কি টাকা নাই। এরকম সাংবাদিকদের যদি রাখেন তাহলে তো সমস্যা। ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকতা না করে এখানে আসেন; আপনি বস না কস দেখার দরকার নাই; আপনি এখানে আসেন। আপনার বস আমাদের ঢাকায় বসে আছে। মেয়রের সমগ্র বক্তৃতা জুড়ে ক্ষমতার দাপট আর আস্ফালন। সামগ্রিকভাবে মেয়রের এমন বক্তব্যে সাংবাদিক শাওনের নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছে। বিষয়ট এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।